অতিথি পাখি শিকার নয়
nakib
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৫২ পিএম
পাখি আমাদের পরিবেশের অংশ। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখি শিকার না করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। চলনবিল এলাকার এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা নৈতিক দায়িত্ব ভুলে অনৈতিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও বিদেশি অতিথি পাখি শিকার করছে। দেশের সর্ববৃহৎ চলনবিল সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ, উল্লাপাড়া, পাবনা জেলার চাটমোহর ও ভাঙ্গুরা, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, নলডাঙ্গা এবং সিংড়া উপজেলাজুড়ে এ বিলের বিস্তৃতি। একদিকে চলনবিল থেকে বর্ষার পানি নামতে শুরু করেছে, অন্যদিকে শীতের আগমনে বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে বালিহাঁস, রাতচোরা, শামুককল, পানকৌরি, ললকাক, বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি অতিথি পাখির আগমন ঘটছে। চলনবিল যেসব উপজেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে তার মধ্যে সিংড়া উপজেলা সবচেয়ে উঁচু এলাকা। তাই এ উপজেলার বিলগুলোর পানি শুকিয়ে গেছে প্রায়। এ কারণে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মাছ, শামুক ও পোকামাকড় খাওয়ার জন্য উড়ে বেড়ায়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাখি শিকারিরা রাতের অন্ধকারে পাখি শিকার করার বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে শত শত পাখি শিকার করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছে। বাজারগুলোতে ঘুরে সরজমিনে দেখা যায়, যারা পাখি কিনছে তারা সবাই সচেতন নাগরিক। কেউবা ডাক্তার, ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মী এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রমুখ। শ্রমিক শ্রেণির মানুষের পক্ষে এসব পাখি কেনা অসম্ভব। কেননা প্রতিটি পাখি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাখি শিকার করা দন্ডনীয় অপরাধ হওয়া সত্ত্বে ও অবাধে পাখি শিকার ও বিক্রি করছে শিকারিরা।দিনের আলোতেও শিকারিরা যেন থেমে নেই। বিভিন্ন অসাধু শিকারিরা পাখি শিকারে বন্দুক ব্যবহার করে অমানবিকভাবে পাখি শিকার করছেন। পাখিরা ছোট ছোট মাছ ও বিভিন্ন পোকামাকড় খেয়ে থাকে। সেই সুযোগে কিছু শিকারি যেসব স্থানে পাখি আশ্রয় নেয় এবং উড়ে বেড়ায় সেসব জায়গায় বিষ মাখানো মাছ ও পোকামাকড় ছিটিয়ে রাখে শিকারিরা। যা খেয়ে ওই জায়গায় অনেক পাখি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকে এবং অনেক পাখি অসুস্থ অবস্থায় উড়ে যায় তাদেরও রেহাই নেই। খালের ধারে লোকালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ওইসব পাখির মৃতদেহ দেখা যায়।এ ব্যাপারে স্থানীয় চলনবিলের উপজেলা প্রশাসনের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই, কোনোই মাথাব্যথা নেই। চলনবিলের জীব ও বৈচিত্র্য রক্ষায় দেশি প্রজাতির পাখিসহ শীতের আগমনে উড়ে আসা অতিথি পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।