×

সারাদেশ

কালীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে ৭ দোকানে ডাকাতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৪৩ এএম

কালীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে ৭ দোকানে ডাকাতি
গাজীপুরের কালীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে ৫টি স্বর্ণের দোকানসহ ৭ দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির মাত্র ২শ গজ দূরত্বে বাজার এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে স্বর্ণের ওই ৫ দোকানীর আনুমানিক ৫৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৩৪০ ভরি রূপা লুট করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। এছাড়াও ৭টি দোকান ও একটি মুরগীর পিকআপ ভ্যান থেকে নগদ ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুটে নিয়েছে ডাকাতরা। স্থানীয়দের অভিযোগ ঘটনার সময় ফাঁড়ির ইনচার্জ রূপন চন্দ্র সরকার ফাঁড়িতে ছিলেন না। তিনি ফাঁড়িতে থাকলে হয়তো ডাকাতির এমন দূর্ধর্ষ ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। ফাঁড়ির ইনচার্জ ফাঁড়িতে না থাকায় ডাকাত দল এমন সুযোগ নিয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট করা দোকানগুলো হচ্ছে, উলুখোলা বাজারের সজল মালিকাধীন সোনালী জুয়েলার্স, নারায়ণ চন্দ্র রায় মালিকাধীন রাজীব জুয়েলার্স, চঞ্চল চন্দ্র দাস মালিকাধীন শিল্পী জুয়েলার্স, সুকান্ত চন্দ্র দাস মালিকাধীন সন্দীপ জুয়েলার্স, দীপঙ্কর চন্দ্র দাস মালিকানাধীন রূপশ্রী জুয়েলার্স, ইউসুফের চায়ের দোকান, আক্তারের মুরগীর দোকান এবং একটি মুরগীর পিকআপ ভ্যানের ড্রাইভার ও হেলপার। ডাকাতি ও লুটপাটের বিষয়টি ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম। তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, দ্রুতই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে কাউকে আটক করা যায়নি বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম ও পংকজ দত্ত, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সোহেল রানা, ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মুজাহিদুল ইসলাম। বাজারে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা প্রহরীদের বরাত দিয়ে নাগরী ইউপি সদস্য বাবলু গাব্রিয়েল রোজারিও জানান, রাত ১২-৩টার মধ্যে পুলিশের পোশাক পরিহিত ৩০/৪০ জনের একটি দল বাজারে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৭ নিরাপত্তা প্রহরীকে বাজারের একটি দোকানে আটকে রাখে। পরে বাজারের প্রতিটি প্রবেশ রাস্তায় নিজেদের লোক দিয়ে পাহারা বসায়। এরপর একে একে ৫টি জুয়েলার্সের দোকান, চা ও মুরগীর দোকানে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। নারায়ণ চন্দ্র রায় মালিকাধীন রাজীব জুয়েলার্সের কর্মচারী জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দোকানের সাটার খুলতে বলে। বাজারের প্রায় ২০০ গজ দূরত্বে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি। তাই স্থানীয় পুলিশ ভেবে দোকানের সাটার খুলে দেওয়া হয়। এ সময় সাটার খুলে দেখি ১২/১৩ জন লোক দাঁড়ানো। এদের মধ্যে ৬/৭ জনের গায়ে পুলিশের পোষাক ছিল। তাদের হাতে ওয়ার্লেস ও অস্ত্র ছিল। বাকী দের গায়ে কালো পোষাক ও মুখোশ পড়া ছিল। পরে ডাকাতরা তাকে বেঁধে ৭ নিরাপত্তা প্রহরীর সাথে আটকে রাখে। সপ্তাহের প্রতি সোমবার উলুখোলা বাজারে আধা বেলা জুয়েলারীর দোকান খোলা থাকে। তাই তারাও সেদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখেন। সন্দীপ জুয়েলার্সের মালিক সুকান্ত জানান, বাজারের এত কাছে পুলিশ ফাঁড়ি! কিন্তু ডাকাতির এমন ঘটনা আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নাই। উলুখোলা ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রূপন চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের জানান, তিনি ওই সময় টহলে নাগরী বাজারে ছিলেন। এ ব্যাপারে পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App