×

সারাদেশ

টায়ার পুড়িয়ে ফুয়েল, বিপন্ন পরিবেশ!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:০৯ পিএম

টায়ার পুড়িয়ে ফুয়েল, বিপন্ন পরিবেশ!
টায়ার পুড়িয়ে ফুয়েল, বিপন্ন পরিবেশ!
টায়ার পুড়িয়ে ফুয়েল, বিপন্ন পরিবেশ!
গাজীপুরের কালীগঞ্জে তুমলিয়া ও নাগরী ইউনিয়নের তিন স্থানে টায়ার পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ফুয়েল। এতে একদিকে যেমন বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। অন্যদিকে মরছে পশুপাখি ও গাছপালা। স্থানীয়দের একাধীক অভিযোগের পরেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অজ্ঞাত শক্তিতে চলছে ওইসব ফুয়েল কারখানা। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের উত্তরসোম গ্রামের শীতলক্ষ্যার নদী কুল ঘেসে গড়ে উঠছে ইউরিং কো বাংলাদেশ নামের একটি ফুয়েল কারখানা। এখানে স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ওই ফুয়েল কারখানাটি অর্থদন্ডসহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের নাগের ডগায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে রাতের বেলায় চালায় তাদের উৎপাদন। তবে ওই ফুয়েল কারখানার ম্যানেজার হাবিবুর রহমান জানায়, স্থানীয় প্রশাসনের মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে তারা তাদের কারখানার উৎপাদন শুরু করেছেন। এদিকে, একই উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের জনবহুল এলাকার কেটুন গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক্সট্রিম পাইরোলাইসিস ফুয়েল ইন্ডাঃ লিঃ নামের দু’টি ফুয়েল কারখানা গড়ে উঠেছে। এর আগে ওই দু’টি ফুয়েল কারখানাকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জেল জরিমানা করলেও পূনরায় পূর্বের মতই চলছে কারখানা দু’টি। কথা হয় এক্সট্রিম পাইরোলাইসিস ফুয়েল ইন্ডাঃ লিঃ এর কয়েকজন শ্রমিকের সাথে। তারা জানায় শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য এই ফুয়েল কারখানা ক্ষতি জেনেও তারা কাজ করছে। আর শুধুমাত্র তা পেটের কারণে। আবার কেউ কেউ জানায়, তাদের মিথ্যা চাকুরীর প্রলোভনে এখানে নিয়ে এসেছে। এই ফুয়েল কারখানা তাদের স্বাস্থ্যের খুব ক্ষতি করছে। তাই চলতি মাসের বেতন নিয়ে তারা চলে যাবে। এলাকাবাসী জানায়, একাধীকবার তারা অভিযোগ দিয়েছে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জেল-জরিমানা হলেও অজ্ঞাত কারণে আবারও চালু হয়েছে কারখানাগুলো। তারা আরো জানান, এই ফুয়েল কারখানায় যখন টায়ার পাড়ায় তখন শ্বাস নিতে কষ্ট হয় ও চোখ জ্বালাপোড়া করে। পাশাপাশি বেশ কিছু গবাদীপশু এই ফুয়েল কারখানার আশেপাশে ঘাষ খেয়ে মারা গেছে। এলাকার ফল-ফলাদির ফলন কমে গেছে। মরে গেছে গাছপালা। স্থানীয় তুমলিয়া ইউপি সদস্য মো. আরমান মিয়া জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ইউরিং কো বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করলে, তারা প্রশাসনের অনুমতি স্বাপেক্ষ উৎপাদন চালু করেছে বলে তাকে জানায়। নাগরী ইউপি সদস্য বাবুল রোজারিও জানান, এক্সট্রিম পাইরোলাইসিস ফুয়েল ইন্ডাঃ লিঃ কারখানা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর বিষক্রিয়া গবাদি পশুসহ গাছপালা মারা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার হিসেবে এলাকাবাসী আমার কাছে অভিযোগ করেছে। তবে এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তারও প্রত্যাশা ওই কারাখানাগুলো বন্ধ হোক। পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলার উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সালাম জানায়, এগুলোর কোন অনুমোদন নেই। কেন? কিভাবে চলে সেটাও তার জানা নেই। তবে তিনি যেহেতু জেনেছেন ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান প্রতিবেদককে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক জানান, আমি এ উপজেলায় এসেই সেগুলোর একটি জরিমানাসহ বন্ধ এবং অন্য দুইটিকে জরিমানাসহ জেল দেওয়া হয়েছে। এরপর সেগুলো বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু কেন? কিভাবে তারা সেগুলো চালু করেছে পূনরায় অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App