×

সম্পাদকীয়

অর্থনীতিতে গতি আনতে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:০০ পিএম

২০০৮ সালের পর থেকে বিশ্ব অর্থনৈতিক যে সংকট তীব্র হয়েছে, তা এখনো বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধকে বিশ্ব অর্থনীতির এই সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে সেখানে প্রবৃদ্ধি নেমে গেছে সাড়ে ৪ শতাংশে। দ্রুতগতিতে ছোটার পর বাংলাদেশের অর্থনীতিও মন্দাদশায় পড়তে যাচ্ছে কিনা, এ প্রশ্ন সামনে আসছে। বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থান কমে যাওয়া, বছর শেষে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি দুর্বিষহ করে তুলেছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আর্থিক খাতের সুশাসনকে ব্যাহত করছে। এ ছাড়া বৈষম্য বৃদ্ধি, সীমিত উৎপাদন সক্ষমতা, দেশ থেকে টাকা পাচার বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিকাঠামোর অদক্ষতা অর্থনীতিতে মধ্যমেয়াদি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে শেয়ারবাজার তো দীর্ঘদিন ধরেই পতনের ধারায়।

২০১০ সালের ধসের পর নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও দেশের পুঁজিবাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হয়নি। উল্টো দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। মূল্যসূচক কমছেই। তিন বছর আগেও ডিএসইএক্স ৬০০০ পয়েন্ট অতিক্রম করেছিল। লেনদেন ছাড়িয়েছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সেই সূচক এখন অনেক কমে এসেছে। লেনদেন নেমে এসেছে মাত্র ৪০০ কোটি টাকার ঘরে। গত চার মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বাজার মূলধন খুইয়েছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। যা আমাদের জন্য উদ্বেগের। নতুন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সবার প্রত্যাশা ছিল বাজেট পাসের পর বাজার ভালো হবে। কিন্তু সেটা না হয়ে উল্টো বাজারে দরপতন চলছেই। কেন এমন হলো? বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপেই যে বাজারে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকার ২০৩০ সালের আগেই দেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে। এজন্য আমাদের মাথাপিছু আয় হতে হবে অন্তত চার হাজার ডলার। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমরা যদি বছরে সাত-আট শতাংশ বা তারচেয়ে বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যেতে পারি তাহলে নিশ্চয় ২০৩০-এর আগেই এই পরিচিতি লাভ করা সম্ভব।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ২০৫০ সালে তা হবে ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতি। এখন অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে, সেই ধারায় এগোলে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিকে আরো বাড়াতে হবে। তবে বিশ্বমন্দার প্রতিধ্বনির মধ্যেও বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত ভালো আছে। বিশ্বমন্দা যেহেতু আসছে, সেহেতু আমাদের ভয় না পেয়ে মন্দা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। কীভাবে বিশ্বমন্দার প্রভাব থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে সে ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। নিম্নমুখী বিভিন্ন সূচকের মধ্যে রপ্তানি যদি ঘুরে দাঁড়ায় তাহলে বিপদ কিছুটা কম হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App