×

অর্থনীতি

‘কয়লা আমদানিতে মূসক ছাড় অপরিণামদর্শী’

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:২২ পিএম

‘কয়লা আমদানিতে মূসক ছাড় অপরিণামদর্শী’
‘কয়লা আমদানিতে মূসক ছাড় অপরিণামদর্শী’
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য কয়লা আমদানিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১০ ভাগ মূসক ছাড়ের সিদ্ধান্তকে অপিরণামদর্শী বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানোর যুক্তিতে এ সুবিধাটি দেওয়া হয়েছে বলে বলা হলেও তার সুফল শেষ পর্যন্ত সত্যিকারভাবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে কী না, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সুফল পেতে প্রয়োজনীয় বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি। ড. ইফতেখারুজ্জামান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পরিবেশ বিধ্বংসী হবার পরও সরকার যেভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ক্রমাগত ঝুঁকে পড়ছে, সে কয়লা থেকে সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাবার যে যুক্তি দেখিয়ে- যেভাবে এর ওপর আত্মঘাতী নির্ভরশীলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় কয়লা আমদানিতে মূসক ছাড়ের সর্বশেষ এই সিদ্ধান্ত।
এটি সরকারের জাতীয় অঙ্গীকার, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও প্যারিস চুক্তির পরিপন্থি। তিনি বলেন, সরকারের অঙ্গীকার আছে ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ১০ শতাংশ অথচ বর্তমানে এ হার ৪ শতাংশেরও কম। একইসাথে, সরকার অঙ্গীকার করেছিলো যে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে নাবয়নযোগ্য পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। কিন্তু তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় কর সুবিধাসহ তেমন কোনো কৌশলগত ও কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী- মূসক ছাড়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ওপর বাড়তি খরচ কমানোর যে যুক্তি দেওয়া হয়েছে সেটি সাধারণ মানুষের কাছে কতটা পৌঁছাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ড. জামান।
তিনি জানান, ফার্নেস তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও সরকার একই ধরনের কর ছাড় দিয়েছিলো কিন্তু বাস্তবে সুবিধাটি পকেটে পুরেছেন এসব কেন্দ্রের বেসরকারি উদ্যোক্তারা। তাছাড়া, সরকার যখন রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য মরিয়া তখন এরকম পরিবেশ বিধ্বংসী খাতে কীভাবে এতো বড় ধরনের মূসক ছাড় গ্রহণযোগ্য হতে পারে তা বোধগম্য নয়। এমন সুবিধা যদি দিতেই হয় তবে এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত হবে, এরূপ শর্ত সাপেক্ষে কার্যকর বাধ্যবাধকতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সারা পৃথিবী যখন পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লানির্ভর জ¦ালানী থেকে সরে আসতে কার্বন কর বসাচ্ছে সেখানে কয়লা আমদানিতে কর ছাড় জলবায়ু ঝুঁকির মুখে শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশের জন্য পশ্চাৎ-মুখী ও আত্মঘাতী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে মূলত বাংলাদেশকে কয়লা উৎপাদন কেন্দ্রের ভাগাড়ে পরিণত করার স্বার্থান্বেষী দেশিয় ও আন্তর্জাতিক মহল-ই লাভবান হবে। অন্যদিকে নিরুৎসাহিত হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। টিআইবি এরূপ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App