×

জাতীয়

স্বল্প বিনিয়োগে আঙিনা-ছাদে মাছ চাষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:২৯ পিএম

স্বল্প বিনিয়োগে আঙিনা-ছাদে মাছ চাষ
স্বল্প বিনিয়োগে আঙিনা-ছাদে মাছ চাষ
স্বল্প বিনিয়োগে আঙিনা-ছাদে মাছ চাষ

দেশে স্বল্প খরচে অধিক মাছচাষের নতুন এক প্রযুক্তি বায়োফ্লক। এ প্রযুক্তিতে পুকুর না কেটেই বাড়ির আঙিনায়, ছাদে, অল্প জায়গায়- এমনকি সবজি ও মাছ এক সঙ্গে মাছচাষ করা যাবে। বিনিয়োগের পরিমাণও খুব কম। এতে কম খরচে মাছ উৎপাদন বাড়বে বহুগুণ।

দেশীয় আবহাওয়ার উপযোগী করে এ পদ্ধতিতে মাছচাষের উপায় উদ্ভাবনে গবেষণা করে যাচ্ছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের একদল গবেষক। এজন্য বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে বায়োফ্লক ল্যাব।

বায়োফ্লক সম্পর্কে গবেষক দলের প্রধান ড. এ এম সাহাবউদ্দিন বলেন, বায়োফ্লক প্রযুক্তির মাছচাষ পরিবেশ বান্ধবপদ্ধতি। যা ক্রমাগতভাবে পানিতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানগুলোকে পুনরাবর্তনের মাধ্যমে পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করে। বায়োফ্লক হলো প্রোটিন সমৃদ্ধ জৈব পদার্থ এবং বিভিন্ন অণুজীবের সমষ্টি।

ড. সাহাবউদ্দিন বলেন, সাধারণত মাছের জন্য পুকুরে যে খাবার দেয়া হয় তার উচ্ছিষ্ট পুকুরে দূষিত অ্যামোনিয়া তৈরি করে যা মাছের জন্য ক্ষতিকর। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া অ্যামোনিয়া থেকে একক প্রোটিন তৈরি করে যা মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এতে একদিকে পুকুরে মাছ চাষের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়, তেমনি মাছের খাবার খরচ কমে যায়। ফলে মাছের মজুদ ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়া যায়। এই প্রযুক্তি পানিতে বিদ্যমান কার্বন ও নাইট্রোজেনের সাম্যবস্থা নিশ্চিত করে পানির গুনাগুণ বৃদ্ধি ও ক্ষতিকর জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে গবেষকরা জানান, এ পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য ট্যাংক, অক্সিজেন সরবারহের পাম্প ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। এ পদ্ধতিতে বাড়িতে যে কোনো চাষী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারিগরি দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ৩০-৪০টি ট্যাংকে সহজেই মাছ চাষ করতে পারবে।

এ প্রযুক্তিতে কোন ধরনের মাছ বেশি চাষ করা যাবে তা জানতে চাইলে ড. এ এম সাহাবউদ্দিন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। আমাদের দেশে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছ চাষ এখনও ব্যাপকভাবে শুরু হয়নি। এখানে সচরাচর তেলাপিয়া, রুই, শিং, মাগুর, পাবদা, গুলশা ও চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যেতে পারে। তবে যারা নতুন করে এই প্রযুক্তিতে মাছ চাষ শুরু করতে চান তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে তেলাপিয়া, শিং ও মাগুর মাছ দিয়ে চাষ শুরু করা সমীচীন।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ কেন লাভজনক হবে এই প্রশ্নোত্তরে ড. সাহাবউদ্দিন বলেন, মাছ চাষের শতকরা ৬০ ভাগ খরচ হয় খাবারের জন্য। এ পদ্ধতিতে খাবার কম লাগে, রোগের প্রাদুর্ভাব কম হয়। অল্প জায়গায় বেশি পরিমাণ মাছ চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায়। তিনি আরো বলেন, এ প্রযুক্তি যদি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে দেশে মাছের উৎপাদন অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। যা সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App