×

আন্তর্জাতিক

বন্যায় ঘর হারাবে বছরে ৫ কোটি মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৩৫ এএম

বন্যায় ঘর হারাবে বছরে ৫ কোটি মানুষ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের সরকার এখনই ব্যবস্থা না নিলে শুধু বন্যার কারণে গৃহহীন হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা এ শতকের শেষ নাগাদ বছরে পাঁচ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, জনসংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়া এবং দ্রুত বরফ গলতে থাকায় ঘন ঘন বড় ধরনের বন্যার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। গত মঙ্গলবার মাদ্রিদে জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ুবিষয়ক এক আলোচনায় জেনেভাভিত্তিক ‘ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টারের (আইডিএমসি) গবেষক জাস্টিন জিনেত্তি বলেছেন, যে পরিমাণ মানুষের গৃহহীন হওয়ার শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, তার অর্ধেকই জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হবে। আর বাকি মানুষ ঘরহারা হবে জনসংখ্যা বাড়ার কারণে। আইডিএমসির হেড অব ডেটা এন্ড অ্যানালাইসিস জিনেত্তি বলেছেন, পূর্বাভাসে ঝুঁকির যে চিত্রটি এসেছে, সেটিকে আংশিক বলা যেতে পারে। কিন্তু বন্যার কারণে স্থানচ্যুত অর্ধেকের বেশি মানুষই আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হবে, যে পরিস্থিতিকে তিনি বর্ণনা করেছেন ‘ভয়াবহ’ হিসেবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধির হার এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার যে পরিকল্পনা, বিভিন্ন দেশের সরকার যদি তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বন্যার কারণে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা বছরে ২ কোটিতে আটকে রাখা যেতে পারে। তিনি বলেন, জলবায়ুর কারণে স্থানচ্যুতি বিশ্বের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমাদের জন্য ভবিষ্যতে আবহাওয়ার আরো চরম অবস্থা বিরাজ করছে। সুতরাং ভবিষ্যৎ ঝুঁকির গুরুত্ব বোঝাটা আমাদের জন্য জরুরি কেন এটা হচ্ছে, আমাদের কি করা উচিত। ঝড়ের কারণে কত মানুষ ঘরহারা হতে পারে, সে ব্যাপারেও একটি আভাস দেয়ার জন্য আইডিএমসির গবেষণার ক্ষেত্র আরো বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অক্সফাম সোমবার জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং দাবানলের কারণে গত এক দশকে প্রতি বছর ২ কোটির বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে। জলবায়ু হুমকি মোকাবেলায় বিশ্ব নেতারা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সমস্যা আরো প্রকট আকার নেবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বন্যার কারণে মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়া ঠেকাতে ভালো কিছু উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন আইডিএমসির গবেষক জিনেত্তি। এর মধ্যে রয়েছে নগরায়নের এমন পরিকল্পনা, যেখানে নদীসংলগ্ন বন্যাপ্রবণ এলাকায় বসতি স্থাপনকে নিরুৎসাহিত করা হবে এবং ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের দ্রুত সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে আরো বিনিয়োগ করা। এ ক্ষেত্রে দুর্যোগ মোকাবেলায় দক্ষিণ এয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ এবং চীনের উদাহরণ টেনেছেন জাস্টিন জিনেত্তি। এসব দেশ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় ঝুঁকির মুখে থাকা তাদের লাখ লাখ নাগরিককে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, সে ধরনের পদক্ষেপ আফ্রিকার দেশগুলোতেও নেয়া উচিত বলে তিনি মত দিয়েছেন। জিনেত্তি বলেন, শুধু যে দরিদ্র দেশগুলোই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু ধনী দেশেও বন্যাপ্রবণ এলাকায় এখনো স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি অর্থেও এ কাজ করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App