×

সারাদেশ

রাউজানে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:০০ পিএম

রাউজানে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

রাউজানেও খামার ও গৃহস্থালির গরু গুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। গত এক মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে উপজলার প্রায় ৩ হাজার গরু। তবে এ রোগে গরু মারা গেছে এরকম তথ্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে নেই। খবর পাওয়া গেছে গত সোমবার রাতে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পটিয়া পাড়ায় এক গৃহস্থালির একটি গরু মারা গেছে।

এদিকে রোগটির টিকা ও সঠিক ওষুধ না পেয়ে উৎকণ্ঠায় আছে খামারি ও গৃহস্থালিরা। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় খামারির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩০০। এসব খামারে ও গৃহস্থালি মিলে গরুর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজারের বেশি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে খামারিরা বলছেন, আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশী হবে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যাল সূত্রে জানাগেছে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্ত গরুর সংখ্যা সামনের শীতে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি ভাইরাসজনিত একটি রোগ। মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গের মাধ্যমে গরুর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা ১০৩-১০৫ ডিগ্রিতে বেড়ে যায়। গরু খাওয়া বন্ধ করে দেয়। শরীরের বসন্তের মতো গুটি ও চামড়া খসে পড়ে মাংস দেখা যায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে খামারি ও গৃহস্থালীর সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে গত একমাস থেকে এ রোগের প্রকোপ দেখা দেয় বিভিন্ন স্থানে।

সরেজমিন ঘুরে উপজেলার হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, পৌর এলাকা, রাউজান সদর, বিনাজুরী, কদলপুর, পাহাড়তলী, পূর্ব গুজরা, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, নোয়াপাড়া, বাগোয়ান ইউনিয়নের খামার ও গৃহস্থালির পালা গরুতে এ রোগের চিত্র দেখা গেছে।

নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজারের জেবিএম ভেটেরিনারী ফার্মেসীতে গিয়ে দেখা যায় ৫ থেকে ৭ জন গ্রাহক ভিড় করছে ঔষধ নিতে। তাদের সবার গরুর লাম্পি স্কীন রোগ হয়েছে। ফার্মেসীর মালিক মুহাম্মদ বাবুল বলেন চিকিৎসকরা যেই ঔষধ লিখে দিচ্ছেন সেগুলো দিচ্ছি। পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের মুহামম্মদীয়া ডেয়রী ফার্মে গিয়ে দেখা যায় এই খামারে গাভীর সংখ্যা ৩০ টি। এরমধ্যে ৭ টি গাভী লাম্পি স্কীনে আক্রান্ত হয়েছে।

খামারের মালিক যুবক রাজ্জাকুল আলম ভোরের কাগজকে বলেন গত ১৫ দিন আগে তাঁর খামারের ৪ টি গাভীতে এ রোগ দেখা দেয়। গত তিনদিন আগে আরও ৩ টি গাভীরও একই রোগ হয়। এছাড়া একই ইউনিয়নের মুহাম্মদীয়া নগর এলাকার গৃহস্থালি এম বেলাল উদ্দিনের ২টি, মুহাম্মদ জাবেদের ২টি, এজহার মিয়ার ১টি গরু গত এক সপ্তাহ থেকে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে। নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কর্ত্তার দিঘি এলাকায় আলম ডেয়রী ফার্মে গিয়ে দেখা যায় এ খামারের মোট ৩৫ টি গরুর মধ্যে ৪ টা গরুর এ রোগ ধরা পড়েছে।

খামারের মালিক নুরুল আলম বলেন, এক মাস আগে থেকে গরু গুলো আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গরু গুলোর গায়ে প্রচন্ড জ্বর থাকে। উপজেলায় চিকিৎসা দেওয়া বেসরকারী চিকিৎসক ভেটেরিনারি কনসালটেন্ট মুরশিদুল আলম চৌধুরী বলেন রোগটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। রাউজানে শতাধিক লাম্পি স্কীন রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দিয়েছেন তিনি।

রাউজান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন এ রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। তবে তিনিসহ তাঁর কার্যালয়ের পশু বিশেষজ্ঞরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন রোগটি নিরাময়ে চিকিৎসা দিতে। তিনি জানান উপজেলার ২ থেকে ৩ হাজার গরুর এ রোগ হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App