×

সারাদেশ

কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:২৫ এএম

কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষের জন্য একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা হুমকির মুখে পড়েছে। এসবের পেছনে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম।

তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের কোয়ার্টার বরাদ্দ না দেখিয়ে স্টাফদের কাছে ভাড়া আদায় করে সেই অর্থ আত্মসাৎ, কোয়ার্টারে সাবমিটার ব্যবহার না করায় বিদ্যুৎ বিল ফাঁকি, অতিরিক্ত রোগী দেখিয়ে নার্সদের জন্য বিশেষ খাবার বরাদ্দ, নিজস্ব কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার, এছাড়া স্বজনপ্রীতি করে বিধিবহিভর্‚তভাবে পথ্য দ্রব্যাদির ঠিকাদার নিয়োগসহ নানা অভিযোগে উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে কোয়ার্টারে থাকা স্টাফরা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পেলেও আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক ঠিকাদার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকা ভুক্তভোগীরা জানান, চলতি বছরের বেশ কিছু নার্স যোগদান করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। প্রথমে তারা কোয়ার্টার বরাদ্দ নিলেও মূল ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা সাফ জানিয়ে দেন কোয়ার্টারে থাকতে হলে সেই অতিরিক্ত টাকা প্রতি মাসের এক তারিখের মধ্যে তার হাতে পরিশোধ করতে হবে। তার এমন অনৈতিক দাবির মুখে কোয়ার্টার বরাদ্দ বাতিল করে প্রতি মাসের এক তারিখের মধ্যে ওই কর্মকর্তাকে কোয়ার্টার ভাড়া বাবদ মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে প্রদান করে আসছে স্টাফরা। আর সেই সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম।

এছাড়া অধিকাংশ স্টাফ কোয়ার্টারে স্থাপন করা হয়নি বৈদ্যুতিক সাব মিটার। ফলে হাসপাতালের মূল মিটার সরাসরি ব্যবহার করছে তারা। এতে কোয়ার্টার ব্যবহারকারীদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম থাকলেও সাবমিটার না থাকায় বিদ্যুৎ বিল ফাঁকি দিচ্ছে ব্যবহারকারীরা। অপরদিকে বিশেষ দিনে হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগী দেখিয়ে দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সদের জন্যও খাবারের বরাদ্দে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে অবগত করলেও গ্রহণ করেনি প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নামে কোয়ার্টার বরাদ্দ থাকলেও তিনি কোনোদিনও সেখানে থাকেননি। তার ব্যক্তিস্বার্থে প্রায় ৪২ কিলোমিটার পথ সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নাটোর থেকে বাগাতিপাড়া হাসপাতালে যাতায়াত করেন তিনি। এ ছাড়া গাড়ির গ্যারেজ না থাকার অজুহাতে তিনি সরকারি গাড়ি তার বাড়িতে রাখেন কিন্তু সরকারি দুটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি হাসপাতালের সামনে অস্থায়ী গ্যারেজে থাকতে দেখা যায়। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি করে বিধিবহিভর্‚তভাবে পথ্য দ্রব্যাদির ঠিকাদার নিয়োগ করার অভিযোগে নাটোর আদালতে মামলা দায়ের করেছে মেসার্স ইমন ট্রেডার্সের পরিচালক মোমিন উদ্দিন। মামলাটি বর্তমানে চলমান।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, আগের পথ্য ঠিকাদার তার স্বাক্ষর জাল করে আদালতে মামলা করেছে ওই মামলার কোনো ভিত্তি নেই। হাসপাতালের কোয়ার্টার বা ডরমেটরি সরকারি নিয়ম মেনেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকারি গাড়ি ব্যবহারের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন তিনি। নাটোর সিভিল সার্জন ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App