×

মুক্তচিন্তা

যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:১১ পিএম

ঢাকার ভয়াবহ যানজট আর সহজলভ্যতা- এই দুটি কারণে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মোটরসাইকেল খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। প্রতিদিন শত শত নতুন বাইকার এই মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে। এতে নানা রকম সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। মফস্বল থেকে আসা একশ্রেণির বাইকারের রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালনা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা এবং যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। সেবা ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, চালক এবং রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রী নিরাপত্তার ব্যাপারে উদাসীন। বেশিরভাগ মোটরসাইকেল রাইডার নিজে হেলমেট পরলেও যাত্রীর জন্য হেলমেট রাখছেন না। অনেক চালক নামেমাত্র হেলমেট রাখলেও সেটা আর পরার যোগ্য থাকছে না। ঘটছে দুর্ঘটনা।

সর্বশেষ গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের বাসা থেকে কোচিং করতে ফার্মগেট যাওয়ার পথে বিজয় সরণিতে উবারের বাইক থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন ইডেনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আকলিমা আক্তার জুঁই। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মারা যান তিনি। ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর আবারো পাঠাও-উবারের মোটরবাইকে যাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে।

এর আগে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এই খাতটির যেমন আরো ব্যাপক সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে, তেমনি যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়বদ্ধতার প্রশ্নও উঠছে। এতসব অভিযোগের পরও আরো নতুন রাইড শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে। সড়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে শুধু রাজধানীতেই চলাচল করছে ৬ লক্ষাধিক মোটরসাইকেল। রাজধানীতেই প্রতিদিন ২৫০টিরও বেশি মোটরবাইক নামছে। তবে রাজধানীতে প্রকৃতপক্ষে চলাচল করছে প্রায় ১০ লাখ মোটরবাইক। লাখ লাখ মোটরসাইকেলের কারণে একদিকে যেমন সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে, তেমনি সড়ক-ফুটপাতের যাত্রী ও পথচারীরা বেশিরভাগ সময়ই বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ছেন।

গত বছরের জুলাইয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় ২ কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশে নজিরবিহীন আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনের পর মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীর হেলমেট ব্যবহার বাড়লেও শৃঙ্খলা বাড়েনি। জানা গেছে, চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মনিটরিং নিয়ে সরকারের তরফ থেকে নীতিমালা তৈরি করে গেজেট জারি করা হয়।

এর আগে ১৫ জানুয়ারি রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ওই নীতিমালায় রাইড শেয়ারিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সেবাগ্রহীতাদের জন্য অনুসরণীয় গুরুত্বপূর্ণ ৮টি অনুচ্ছেদ এবং ১২টি শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। নীতিমালার বাস্তবায়ন জরুরি। এখন থেকে বেপরোয়া মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মোটরসাইকেল কমিয়ে গণপরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব এর একটা সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App