×

সারাদেশ

প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে ২০ বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:৪৬ পিএম

প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে ২০ বছর

বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঘোষিত ওসমানীনগর পৌরসভার কার্যক্রম গত ২০ বছরেও শুরু হয়নি। পৌরসভা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সীমানা নির্ধারণ, প্রশাসনিক রোডম্যাপ তৈরি, প্রাথমিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত হলেও নানা জটিলতায় প্রস্তাবিত পৌরসভাটি ফাইলবন্দি হয়ে আছে।

জানা যায়, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত উপজেলার প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজারের এক জনসভায় ‘গোয়ালাবাজার পৌরসভা’ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সে লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়। কিন্তু ১৯৯৯ সালের ২২ জুলাই তৎকালীন স্পিকার হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী তাজপুরের মঙ্গলচণ্ডী নিশিকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে ‘ওসমানীনগর পৌরসভা’র ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ২০০০ সালের জুন মাসে তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব স্বাক্ষরিত পাঠানো চিঠির মাধ্যমেও পৌরসভা বাস্তবায়নের ব্যাপারে এলাকাবাসীকে আশস্ত করা হয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিও আলোর মুখ দেখেনি।

কথা ছিল গোয়ালাবাজারের এওলাতৈল সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের বাড়ি থেকে তাজপুরের কাশিকাপন পল্লীবিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার অংশ নিয়ে যাত্রা শুরু হবে ওসমানীনগর পৌরসভার। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশের প্রায় ১৬ হাজার ভোটারকে এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। সিলেটের অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র গোয়ালাবাজারের লোকজন এতে অনীহা প্রকাশ করে। তাদের দাবি প্রায় কোটি টাকা বার্ষিক রাজস্বের গোয়ালাবাজারকে নিয়ে পৃথক একটি পৌরসভা ঘোষণা করা হোক। এ নিয়ে শুরু হয় আন্দোলন। অপরদিকে তাজপুর ইউনিয়নবাসী আন্দোলনে নামে ওসমানীনগর পৌরসভা বাস্তবায়নের দাবিতে। উভয়পক্ষের আন্দোলতে থেমে যায় পৌরসভা বাস্তবায়নের কাজ।

সম্প্রতি গ্রিসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ওসমানীনগর উপজেলায় পৌরসভা বাস্তবায়নের জন্য স্মারকলিপি দেয়া হয়। জবাবে ওসমানীনগর উপজেলায় পৌরসভা বাস্তবায়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও এ নিয়ে ওসমানীনগরেও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দাল মিয়া বলেন, তাজপুর ও গোয়ালাবাজারবাসীর মধ্যে নাম ও স্থান নিয়ে বিতর্ক থাকায় পৌরসভা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে পৌরসভা হলে আমরা স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান পেতাম। উন্নয়নের জন্য অধিক বরাদ্দসহ আধুনিক নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পেতে ওসমানীনগরে পৌরসভার প্রয়োজনীতা রয়েছে।

গোয়ালাবাজারের ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক বলেন, গোয়ালাবাজার হচ্ছে সিলেটের অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র। এর রাজস্ব আয়ও কোটি টাকার ওপরে। এই বাজারে ১৮টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এখানে ব্যবসা করছে। এলাকার রাস্তাঘাট-শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেক উন্নত। তাই সবকিছু বিবেচনা করে গোয়ালাবাজার পৌরসভা বাস্তবায়ন করা যুক্তিযুক্ত বলেই মনে করি। ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, পৌরসভা বাস্তবায়নের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি কেউ।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথে দ্রুত পৌরসভা বাস্তবায়নের জন্য ডিও লেটারসহ আনুষঙ্গিক অনেক কাজই করে রেখেছিলাম। এর ধারাবাহিকতায় বিশ্বনাথ পৌরসভা অনুমোদিত হলেও স্থান নির্ধারণে জটিলতা থাকায় ওসমানীনগরে পৌরসভা বাস্তবায়নের কাজ থমকে আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App