×

সাহিত্য

জাতীয় কবিতা পরিষদের রবিউল হুসাইনের স্মরণসভা

Icon

nakib

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৫৪ পিএম

রবিউল হুসাইন স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে, সাংস্কৃতিক আন্দোলনে পুরোভাগে থেকে সাহসী মানুষ হয়ে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে গেছেন জাতিকে। শনিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে কবি রবিউল হুসাইনের নাগরিক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, কবি কামাল চৌধুরী, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, নগর গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, কবি কাজী রোজী, কেন্দ্রীয় কচি কাঁচার আসরের সহ-সভাপতি রওশন আরা ফিরোজ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি জালাল আহমেদ, কবির ছেলে জিসান হুসাইন রবিন, বোন বিউটি হুসাইন, ভাই তারিক হুসাইন, কবির ভাগ্নে অর্ণব হাসান, শোকসভায় কবির স্মৃতিচারণ করেন। ছায়ানট সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসার কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত ‘সম্মুখে শান্তি পারাবার’ পরিবেশনায় শুরু হয় এ সভা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হকের লেখা শোকপত্র পাঠ করেন কবি তারিক সুজাত। এতে তিনি বলেন, তার সান্নিধ্য সবার জীবনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা, তার কাছে সহজিয়া মানুষ পেয়েছে নির্ভরতা। ইতিহাসের গভীরে প্রোথিত তার বাঙালি সত্তা, অন্যদিকে বাঙালির নবজাগরণে তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ী। তিনি আমাদের প্রেরণা, মানবতা, স্বদেশপ্রেম ও সৃজনের দীক্ষাদাতা। নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সংকটকালে সেনাশাসন, স্বৈরশাসনের সময়ে ছাত্র আন্দোলনে তিনি ছিলেন সোচ্চার। পরে জাতীয় কবিতা পরিষদের আন্দোলনে তিনি শক্তি যুগিয়েছেন। আমাদের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি ছিলেন আমাদের প্রেরণা। রবিউল হুসাইনকে ‘আধুনিক কবি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার কবিতার শরীর ও ভাষা রীতি ছিল অন্য কবিদের থেকে আলাদা, যা তাকে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। আমরা চিরদিন এ দৃঢ়চেতা মানুষটিকে সাহসী মানুষ হিসেবে স্মরণ করব। কবি কামাল চৌধুরী বলেন, কবির কাজ অন্বেষণ। তাই তাকে কখনও কখনও স্থপতিও হতে হয়। রবিউল হুসাইন ছিলেন তেমনি একজন। মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে তিনি কখনও আপস করেননি। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, কবি রবিউল হুসাইন ছিলেন অজাতশত্রু। তিনি নিজে কত বড় ছিলেন, তা তার আন্দাজেও ছিল না। বিনয়ই ছিল তার বড় অহঙ্কার। সৃজনকর্মে তিনি ছিলেন সতত চলমান। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সৃষ্টি ও নির্মাণকে জোড়া লাগিয়ে তিনি গতিপথ বদলে দিয়ে তার মতো করে কাজ করতে চেয়েছিলেন। স্থাপত্যশিল্পের মধ্য দিয়ে তিনি কবিতা ও শিল্প চৈতন্যকে প্রসারিত করেছিলেন। চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, আমার সঙ্গে তার ছিল ৪০ বছরের সম্পর্ক। আমরা একসাথে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, ঢাকা নগর জাদুঘর, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা জাদুঘরের কাজ করেছি। তিনি চিত্রকলা নিয়ে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করে মন্তব্য করতেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী রবিউল হুসাইনের যত লেখা অপ্রকাশিত, তা থেকে ১০টি গ্রন্থ প্রকাশ সম্ভব বলে জানান।রবিউল হুসাইনের রচনাবলী প্রকাশ করতে সেসব অপ্রকাশিত লেখাগুলো বাংলা একাডেমিকে দিতে তিনি পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে অনুরোধ করেন। আলোচনার পর কবি রবিউল হুসাইনের কবিতা পাঠ করেন কবি ও আবৃত্তিশিল্পীরা। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App