×

সারাদেশ

সাদা সোনায় স্বপ্ন বুনছে চলনবিলের কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:৫৫ পিএম

সাদা সোনায় স্বপ্ন বুনছে চলনবিলের কৃষক
বর্ষার পানি নামতে শুরু করেছে। কাদা জলে চলছে আমন ধান কাটা। ধান কাটা মাত্রই জমি পরিস্কার করে নতুন পদ্ধতিতে কাদা মাটিতে সাদা সোনা খ্যাত রসুন লাগিয়ে ধানের খর বা কচুরি পানা দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। তার প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই রোপনকৃত রসুনের চারা বের হবে। দুই হাত অন্তর বাঙ্গি চাষের জন্য জায়গাও রাখা হচ্ছে রসুনের জমিতে। চলনবিল অঞ্চলের কৃষকদের সাথে কথা বলে যানাগেছে, কৃষি উপকরনের দাম বাড়ায় বিগত বছর গুলোর তুলনায় রসুনে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। ফলে চলতি মৌসুমে রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৩০থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যায় হচ্ছে। তাছাড়া চলতি বছরে বীজ, সার-কীট নাশক, সেচ, নিড়ানী, শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধির কারনে গত বছরের তুলনায় এবছরে রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৫/৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে যানাগেছে, চলতি বছরে চলনবিলে রসুন চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চলনবিলের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ, চাটমোহর, সিংড়া উপজেলায় ২০ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এতে প্রতি বিঘায় বীজ বাবদ ১২ হাজার, সার-কীটনাশক বাবদ ১০ হাজার, শ্রমিক খরচ ৮ হাজার, সেচ বাবদ ৬ হাজার টাকা। এছারা ক্ষুদ্র বর্গা চাষিরা প্রতি বিঘা জমি ১০ থেকে১২ হাজার টাকায় বর্গা (লীজ) নিয়ে অধিক খরচে রসুন আবাদ করছেন। ধারাবারিষা গ্রামের কৃষক মো.রিপন প্রমানিক (৪০) জানান,- এবছর ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন তিনি। বিঘা প্রতি বীজ, সার-কীটনাশক ও সেচ বাবদ খরচ হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। বপন ও নিড়ানী সহ শ্রমিক খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। এতে তার বিঘা প্রতি মোট ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে। তবে তিনি রসুনের সাথী ফসল হিসেবে ৫ বিঘা জমিতেই বাঙ্গি আবাদ করেছেন। অনুকুল আবহাওয়া পেলে সেখান থেকে প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ বাদে ৫০/৬০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। পোয়ালশুড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন,- তিনি চলতি বছরে ৬ বিঘা বর্গা (লীজ) নিয়ে রসুন আবাদ করেছেন। কৃষিতে খরচ বাড়ায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। চলনবিলের রসুনচাষী নাজিমুদ্দিন ও রওশন আলী জানান, গত প্রায় ২২ বছর ধরে চলনবিল অঞ্চলে “বিনাচাষে রসুন” আবাদ শুরু হয়েছে। এ পদ্ধতিতে রসুন চাষ করে চলন বিলের কৃষক সমৃদ্ধশালী হয়েছে। ফলে সেই স্বপ্ন পুরন করতেই এবারও ১০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে রসুন চাষ করছেন তিনি। নাটোর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন,- গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে চলনবিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক রসুন চাষ করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ রসুন চাষ হয় চলনবিলের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ ও সিংড়া বিলের কিছু অংশে। প্রয়োজনীয় কৃষি পরামর্শ এবং সার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে কৃষকদের মাঝে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App