এটিকে ‘মরণ ফাঁদ’ বললেও বোধ হয় কম বলা হবে! এ যেন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর মৃত্যুকে স্বেচ্ছায় আহ্বান করা। চলমান হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের তার রুমের ভেতর বহাল রেখেই ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ একটি নবনির্মিত ভবনের ভেতর দিয়ে চলে গেছে হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের লাইন। এটাও সম্ভব করেছেন এক ভবন মালিক। এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যানঘাট জিটি রোড এলাকায় তিনতলা ভবন তৈরি করেন সৌদি আরব প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী মাসুদা বেগম। পৌরসভার অনুমোদনকৃত ভবন তৈরির নকশা অমান্য করে আড়াই শতক জমির উপর এই ভবন তৈরি করা হয়। ভবনের দোতলার মাঝখান দিয়ে দুই পাশের দেয়ালের কিছু ইট সরিয়ে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের তার রুমের ভেতর দিয়ে নেয়া হয়। কয়েক দিন দিন আগে সম্পন্ন হয় ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন নির্মাণকাজ।

ভবন মালিক মাসুদা বেগম বলেন, দেখুন আমার স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। আমি এ ভবনটি এক ঠিকাদারকে দিয়ে করিয়েছি। তাকে বলেছিলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যুতের তার সরিয়ে ভবনটি নির্মাণ করতে। কিন্তু ওই ঠিকাদার আমার কথা শোনেননি। আর আমিও ঠিকভাবে তদারকি করতে না পারায় এমন পরিস্থিতি ঘটেছে। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে ভবন তৈরি করা ঠিক হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি।

চাঁদপুর পৌরসভার নকশাকারক জাহিদুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার নির্ধারিত ভবন তৈরির নকশা অমান্য করে বৈদ্যুতিক তার ভেতরে রেখে এ ধরনের ভবন নির্মাণ ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন ভূঁইয়া ও শিহাব মুন্সী বলেন, আমরা এ ধরনের ভবন দেখে অবাক। কিভাবে ভবনের মালিক এমন একটি কাজ করলেন তা বুঝতে পারছি না। আমরা এলাকাবাসী ভবন মালিককে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজ তার সরিয়ে ভবন নির্মাণের কথা বলেছিলাম। কিন্তু তিনি কারো কথা শোনেননি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এভাবে ভবন তৈরি হওয়ায় ভবন মালিক যেমন বিপদে রয়েছেন, আমরাও রয়েছি দুর্ঘটনার আশঙ্কায়।

চাঁদপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম ইকবাল জানান, ভবন ভেতরে দিয়ে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের যে তার গেছে তা ৪০০ ভোল্টের।

বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ওই ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।