×

সারাদেশ

ক্ষতির শঙ্কায় মাধবপুরের ৫ চা বাগান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:১৬ পিএম

ক্ষতির শঙ্কায় মাধবপুরের ৫ চা বাগান

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৫ টি চা বাগানে দরপতনের কারনে বিপুল পরিমাণ চা নিলামের গুদামে অবিক্রিত অবস্থায় পরে আছে। এ কারণে এ বছর মাধবপুরের ৫ টি চা বাগান বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। চায়ের এমন দরপতনের কারণ হচেছ দেশের অভ্যন্তর বাজারে ভারতীয় চা পাতায় ভোক্তার চাহিদা পূর্ণ করায় এখন চট্রগ্রাম,শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে দেশীয় চা পাতা বিক্রি হচেছ না। শত শত মন চা পাতা নিলাম গুদামে পরে আছে।

এ অবস্থায় বাগান কতৃপক্ষ এখন বাগান পরিচালনা করতে হিমসিম খাচেছ। শ্রমিকদের বেতনসহ চা বাগানের আনুসাঙ্গীক ব্যয় ভার মিটাতে গিয়ে ব্যাংকের দেনার পরিমান দিন দিন বেড়েই চলছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগান গুলো বন্ধ ঘোষনা ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই। বাগান সংশ্লিষ্টরা জানান, চা উৎপাদনের শুরুতেই মার্চ ,এপ্রিল মাসে ভারত থেকে অবৈধ পথে বিপুল পরিমান ভারতীয় চা আসার কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বাজারে ভারতীয় চা পাতায় সয়লাব হওয়ায় নিলাম বাজারে দেশীয় উৎপাদিত চা পাতা বিক্রি হচেছ না।

নয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম ফরিদি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর দেশে চায়ের রেকর্ড পরিমান উৎপাদন হয়েছে। তবে সীমান্তপথে অবৈধ ভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে চা প্রবেশ করায় এখন দেশীয় চা বিক্রি হচেছ না। অনেক চা পাতা নিলাম কেন্দ্রের ওয়ার হাউজে পরে রয়েছে। এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ পরে ১৮০ টাকার মত। কিন্তু নিলামে দর উঠে ১২৫ টাকা। এরপরও নিলামে অংশগ্রহনকারীরা চা ক্রয় করতে রাজি নয়। এর কারণ হচেছ চোরাই চা পাতায় দেশের চাহিদা মিটে গেছে। চা পাতা বেশিদিন সংরক্ষন করা যায় না। গুদামে পরে থেকে এক সময় এসব পাতা নষ্ট হয়ে যাবে।

এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম জানান, চট্রগ্রাম ও শ্রীমঙ্গল নিলাম বাজারে ৮ রাউন্ড পর্যন্ত চা মোটামুটি বিক্রি ছিল। এরপর থেকে দরপতনের কারণে এখন পর্যন্ত নিলাম বাজারে দেশীয় চা বিক্রি হচেছ না। ভারতীয় চা পাতায় বাংলাদেশের বাজার এক চিটিয়া দখল করে নিয়েছে। এ বছর বাগানে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সুরমা চা বাগান সহ দেশের ১৫১ টি চা বাগানের প্রায় ২ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পরবে। এতে দেখা দিতে পারে মানবিক বিপর্যয়।

এছাড়া আগামী বছর অনেক রুগ্ন বাগান চায়ের দরপতনের কারনে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চা শ্রমিক নেতা স্বরজিত পাশি জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে চা বাগানের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সরকার যদি চোরাই পথে ভারত থেকে আসা চা পাতা বনধ না করতে পারে দেশের অন্যতম শিল্প চা বাগান বন্ধ হয়ে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পরবে। চা পাতা চোরাই বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App