মিয়ানমারে রাসায়নিক অস্ত্র থাকার অভিযোগ আমেরিকার
nakib
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ০২:০৭ পিএম
মিয়ানমারের কাছে ১৯৮০’র দশকের রাসায়নিক অস্ত্র মজুদ থাকতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) হেগে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা ওপিসিডব্লিউ’র বার্ষিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ কথা বলেন। খবর এএফপির।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মিয়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে রাসায়নিক অস্ত্র সম্মেলনে (সিডব্লিউসি) যোগ দিয়েছিলো। সেই সম্মেলনে রাসায়নিক অস্ত্রের উৎপাদন, মজুদ এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটনের কাছে তথ্য ছিলো ১৯৮০ সালে মিয়ানমার রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কর্মসূচি হাতে নেয়। সেখানে সালফার মাস্টার্ড গ্যাসও ছিলো।
রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর পরিচালিত গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানিকে সামনে রেখে দেশটির বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ অস্বস্থিতে ফেলবে দেশটিকে। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির তার দেশের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যা মামলা মোকাবেলা করতে আগামী ডিসেম্বরে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এরই মধ্যে এমন অভিযোগে ব্যাপক চাপে আছে দেশটির জান্তা সরকার। তবে পূর্বের মতো এবারো সে চাপ সামলে নিতে কৌশলী ভূমিকা নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। এরই অংশ হিসেবে শুনানির আগেই বাংলাদেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে তাদের তৎপরতা আন্তর্জাতিক মহলকে দেখানোর জন্য চেষ্টা করছে দেশটি। পাশাপাশি প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের ব্যর্থতার দায় বাংলাদেশের উপর চাপাতে মিথ্যাচার করলে বাংলাদেশ থেকে এর প্রতিবাদ করা হয়।
এক সময়ের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অংসান সূচী নিজেই এ গণহত্যা মামলার বিরুদ্ধে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে লড়াই করবার প্রস্ততি নিচ্ছেন । তবে গণহত্যার বিরুদ্ধে নিবর থাকার অভিযোগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার সনদ বাতিল করলেও এবার তিনি নিজেই এ গনহত্যার পক্ষে দাড়িয়ে বিশ্বনেতাদের সমর্থন পাবেন না। এর আগে তার নোবেন পুরস্কার কেড়ে নিতে বিশ্বব্যাপি সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
২০০৫ সালে লন্ডন-ভিত্তিক ক্রিশ্চিয়ান সলিডারিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড অভিযোগ করেছিলো যে সাবেক সামরিক জান্তারা কারেন বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ২০১৩ সালে একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, পুলিশ দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি তামার খনিতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ফসফরাস গ্যাস ব্যবহার করেছিলো।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে মিয়ানমারের পাঁচজন সাংবাদিককে সামরিক বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন করার প্রতিবেদন তৈরির অভিযোগে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিলো।
এর আগের বছর মিয়ানমারের তৎকালীন আধা-বেসামরিক সরকার দেশের উত্তরাঞ্চলে সংঘর্ষ চলাকালে কাচিন বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারও অস্বীকার করে। মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন এই ব্যাপারটি নিয়ে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং অস্ত্র ধ্বংস করতে মিয়ানমারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।