বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, উন্নয়নের ধারাকে টেকসই ও গতিশীল করতে নির্বাহী বিভাগ ও জাতীয় সংসদের কার্যক্রম তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি সংসদ সদস্যগণের মাধ্যমে সারাদেশে আইসিটি ব্যবহার সমৃদ্ধ করতে হবে। উন্নয়নকে টেকসই করতে তৃণমূলে আইসিটি সেবা পৌঁছে দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করার কার্যক্রম চলমান আছে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে আইসিটি এর ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থায়ী কমিটির সভা সংক্রান্ত কার্যক্রম এমআইএস এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদের নিজস্ব ডাটা সেন্টারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ কার্যক্রমকে আধুনিক করা হয়েছে। সংসদ সদস্যগণের পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদেরও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব সিস্টেমস সায়েন্স (আইএসএস) এর মিলনায়তনে আয়োজিত ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজিস এ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর পার্লামেন্ট শীর্ষক সভায় বক্তব্যে এসকল কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারী সেবা প্রদান কার্যক্রমকে গতিশীল ও দক্ষ করার লক্ষ্যে এসব ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার প্রয়োজন। বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এলক্ষে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন করার কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু অবকাঠামো ও জনবল দিয়ে দক্ষ ও টেকসই সেবাদান প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকেই তথ্য-প্রযুক্তির প্রযোজ্য ক্ষেত্রের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার সংসদ সদস্যগণের জন্য এমডিজি ট্র্যাকার এ্যাপ প্রবতর্ন করছে। এর দ্বারা সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের অগ্রগতি জানতে পারবেন। এ ট্র্যাকারে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর ডাটা ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ডাটা সংগ্রহের কাজটি আরও গতিশীল ও দক্ষ করার লক্ষ্যে প্রযুক্তির আইসিটি ব্যবহার জোরদার করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ডাটা সমন্বয়ও জরুরী।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফরের সময় সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাথে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আগামী বছর ঘোষিত মুজিববর্ষে জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল ইত্যাদি ক্ষেত্রে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। তাই এসব নিয়ন্ত্রনের জন্য সংশ্লিষ্ট জনবলকে সর্বাধুনিক আইসিটি জ্ঞান অর্জন করার আহ্বাণ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আইএসএস এর সিইও কং চান মেং, ইজিএল এর সেন্টার ডিরেক্টর অশোক কুমার, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো: মোস্তাফিজুর রহমান, আইএসএস এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।