×

জাতীয়

পাহাড়ে জমি লিজ নিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০৭:০৭ পিএম

পাহাড়ে জমি লিজ নিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি

পার্বত্য অঞ্চলে জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে জঙ্গিদের ঘাঁটি। সারাদেশ থেকে সদস্য সংগ্রহ করে সেখানে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন মেয়াদের প্রশিক্ষণ। এরপর নাশকতার উদ্দেশ্যে তাদেরকে পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তারকৃত একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানার খবর দিচ্ছে। সর্বশেষ রাজধানীর ভাটারা এলাকায় পুরনো জেএমবির অস্থায়ী আমিরসহ গ্রেপ্তার ৩ জন পাহাড়ের জমি লিজ নিয়ে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলার তথ্য দিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি’র প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, রবিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা সাইদ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুরনো জেএমবির ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, পুরনো জেএমবির অস্থায়ী আমির আবু রায়হান ওরফে মাহমুদ ওরফে আ. হাদী, হাবিবুর রহমান ওরফে চান মিয়া ও রাজীবুর রহমান ওরফে রাজীব ওরফে সাগর। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৫০টি ডেটোনেটর, জিহাদি বই, একটি কমান্ডো ছুরি ও ২০ পিস জেল জাতীয় বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। পাহাড়ে স্থানীয়দের সহায়তায় একটি জমি লিজ নিয়ে তারা (জেএমবি) মাদ্রাসা তৈরি করে সেখানেই জঙ্গি প্রশিণ কেন্দ্র গড়ে তোলে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, আবু রায়হান হচ্ছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া পলাতক জঙ্গি সালাউদ্দিন সালেহীর শ্যালক। সালেহী নিজেকে গ্লোবাল জেএমবির আন্তর্জাতিক আমির ঘোষণা করে। তখন জেএমবির আমির ছিল খোরশেদ আলম। খোরশেদ নিহত হওয়ার পর ২০১৭ সালে আবু রায়হানকে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আমির ঘোষণা করা হয়। গতকাল রবিবার আবু রায়হান অন্য দুই জঙ্গি চান মিয়া ও রাজীবুর রহমানকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ওই প্রশিণ কেন্দ্রে যাচ্ছিল। হাবিবুরের বাসা ঢাকাতেই। আর রাজীবের বাড়ি নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকায়। তার বাড়িতে নতুন জঙ্গি সদস্যরা সহজেই মিলিত হতো।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, পাহাড়ি এলাকায় মানুষের যাতায়াত কম থাকায় জঙ্গিরা ওই এলাকাকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নেয়। আর সাংগঠনিক কার্যক্রমের জন্য মূলত ডাকাতির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। গত বছরের ২৯ মার্চ দণি খানোর পীর সাহেবের বাড়িতে ডাকাতির সময় হাতেনাতে আটক হয় হাবিবুর। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সে পুনরায় জঙ্গি কার্যক্রম শুরু করে। এছাড়া, জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমানের আত্মীয় মাওলানা রাকীব নামে এক ব্যক্তি বিদেশ থেকে এদের অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, নব্য জেএমবির যে গ্রুপটি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল, তারা ৫ জনের একটি জঙ্গি সেল করেছিল। এরইমধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি দুইজনের ছবিও পুলিশের কাছে এসেছে। আর নতুন করে যেন সেল গঠন হতে না পারে, সেজন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।

হলি আর্টিজানে রায় ঘিরে নাশকতার শঙ্কা নেই

মনিরুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার মামলার রায় কেন্দ্র করে নাশকতার শঙ্কা নেই। ঘটনাস্থলে যে ৫ জন হামলায় অংশগ্রহণ করেছিল তারা নিহত হয়েছে। পাশাপাশি তাদের যারা নেতা ছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গেছে। এখন যে ৮ জন আসামি এই মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছে তাদেরকে ছাড়িয়ে নিতে কোনো ধরনের নাশকতা যেন না ঘটাতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App