×

সারাদেশ

মতলব উত্তরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ০৩:৪০ পিএম

মতলব উত্তরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত
মতলব উত্তরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত
মতলব উত্তরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত
মতলব উত্তরে এতিমখানার ফ্লোর ধসে ৪৩ ছাত্র আহত
চাঁদপুরে মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি আল আমীন শিশুসদন (ইয়াতীমখানা) কমপ্লেক্সের ভবনের ফ্লোর শনিবার রাতে ১০টায় ধসে অন্তত ৪৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতরা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর জেলা সদর হাসপাতাল, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন। রোববার চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল ঘটনাস্থল, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে ছুটে যান। আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। সবধরনের চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার সাহাকে। দ্রুত এ মাদরাসা ও এতিমখানার জন্য ভবন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি’র দৃষিট আকর্ষণ করে সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল। এ মাদরাসায় প্রায় ৫শ’ শিক্ষার্থীসহ ২শ’ এতিম রয়েছে। রাতেই চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম, ইউএনও শারমিন আক্তার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) আহসান হাবীব, সহকারি কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী, মতলব উত্তর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃধা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া। ফরাজীকান্দি দরবার শরীফের পীরজাদা আল্লামা মাসউদ আহমদ জানান, এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ তিন তলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সেখানে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। আল আমিন এতিমখানার আবাসিক কর্মকর্তা শাহান শাহ সেলিম জানান, মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি উয়েসিয়া কামিল মাদ্রাসার এতিমখানার ছাত্ররা ১৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে শনিবার রাতে শিক্ষকদের সাথে সভা করছিল। রাত ১০টায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওজন সইতে না পেরে তিন তলা বিশিষ্ট ভবনের দ্বিতীয় তলা বারান্দার ফ্লোর ধসে পড়ে। এতে দ্বিতীয় তলায় থাকা শিক্ষার্থীরা নিচতলায় পড়ে গুরুতর আহত হয়। নতুন ভবন নির্মাণে সহযোগিতার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কিন্তু তা না পাওয়ায় আমাদের এই ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। মাদ্রাসার ছাত্র ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আহত ছাত্রদের উদ্ধার করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে চাঁদপুর থেকে দমকল কর্মী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। মাদ্রাসার ফাযিল প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন ও হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আল হাসান বলেন, মাদ্রাসার এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় আমরা এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি বসবাস করছি। ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী মানছুর আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই এলাকাবাসী দুর্ঘটনার শিকার ছাত্রদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি। তিনি জানান, ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এখানে নতুন করে ভবন তৈরি করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিরাপদে শিক্ষাদানে নতুন ভবন তৈরির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই। চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবন নির্মাণে কোনো ধরনের নিয়মনীতি ছিল না। বসবাসের অনুপযোগী ৩তলা ভবনটিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হবে। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, দুর্ঘটনার খবর জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আহত শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার তিনতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল বলেন, মাদরাসাটি এ অঞ্চলের প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতিমখানার ভবনটি ঝরাজীর্ণ ছিল। এ স্থানে সরকারী ভাবে ভবন করার জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া এতিমদেরজন্য অস্থায়ী ভাবে টিনসেট করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১০ বান্ডিল ঢেউটিন, ৩০ হাজার টাকা ও ৫০টি কম্বল দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App