×

জাতীয়

আনন্দের বিয়ে বাড়িতে এখন শুধুই কান্না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৫৭ এএম

আনন্দের বিয়ে বাড়িতে এখন শুধুই কান্না

বিয়ের সানাই বাজার কথা থাকলেও সেখানে এখন কান্নার রোল। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার বটতলা গ্রামে বরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের আকাশে-বাতাসে এখন যেন শুধু কান্নার শব্দ। এর আগে কখনো একসঙ্গে আট-দশজনের জানাজায় শরিক হননি এখানকার মানুষ। একসঙ্গে এত মানুষকে হারিয়ে শোকে নির্বাক হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। সান্ত্বনা জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন তারা। গত শুক্রবার এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে ১০টি তাজা প্রাণ। নিহতদের সাতজনই একই পরিবারের সদস্য। তারা সবাই একটি মাইক্রোবাসে করে বরযাত্রী হয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কামরাঙ্গীরচর এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ষোলঘর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন ও পরে হাসপাতালে আরো চারজন মারা যান। যেখানে আজ থাকার কথা আনন্দ-কোলাহল সেখানে শুধুই কান্নার রোল।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে লৌহজংয়ের ব্রাহ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে আটজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় শতশত লোক অংশগ্রহণ করেন। জানাজায় ইমামতি করেন লৌহজং টেউটিয়া ইউনিয়ন মসজিদের পেশ ইমাম। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল রশিদ সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তপন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বেপারি, পাভেল সাহাবুদ্দিনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে নিহতদের আটজনকে হলদিয়ার সাতঘরিয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। একজনকে কাহেতারা কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর ড্রাইভার বিল্লালের লাশ তার গ্রামের বাড়ি শ্রীনগরে দাফন করা হয়। এর আগে শুক্রবারের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম ও জেলা উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা। এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রাম থেকে মুদি দোকানি রুবেল হোসেনের বরযাত্রী নিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কামরাঙ্গীচর এলাকায় যাচ্ছিল মাইক্রোবাসটি। মাইক্রোবাসটি ঢাকা-মাওয়া সড়কের ষোলঘর বাসস্ট্যান্ডের সামনে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের ভেতরে থাকা বরের বাবা আবদুর রশীদ বেপারি (৭০), বোন লিজা (২৩), লিজার মেয়ে তাবাসসুম (৪), ভাবি রুনা আক্তার (২২) ও তার ছেলে তাহসিন (৩), মেয়ে রেনু (১০), প্রতিবেশী মফিজুল (৬০), কেরামত আলী (৭২), জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও মাইক্রোবাস চালক বিল্লাল (৩০) নিহত হন। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাইক্রোবাসের ভেতরে আটকেপড়া নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৩০ মিনিট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App