×

জাতীয়

মিয়ানমারের পাশে থাকা দেশও গণহত্যাকারী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ০৭:১৪ পিএম

মিয়ানমারের পাশে থাকা দেশও গণহত্যাকারী

মিয়ানমারে গণহত্যাকারীদের বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেছেন, যারা তাদের ভূ-সম্পদের লোভে কিংবা দেশের স্বার্থের কথা বলে গণহত্যার মতো জঘন্য নজির সৃষ্টি করে তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে যারা গণহত্যাকে সমর্থন দেয় তাদেরও বয়কট করা উচিত। কেননা, গণহত্যার সমর্থনকারীরাও গণহত্যাকারী।

ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন গণহত্যাকারীদের কঠোর ভাষায় ভর্ৎসনা করে বলেন, গণহত্যাকারীরা মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছে, মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। তারা হারামজাদা। আর যারা গণহত্যা প্রতিরোধ করে না তারাও হারামজাদা।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে দুদিনব্যাপী গণহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে ১৯৭১ সালের গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি মুনতাসীর মামুন এসব কথা বলেন।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ভারতের জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কে ভরদ্বাজ, তুরস্কের লেখক চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক ফেরহাত আতিক, কম্বোডিয়ার গবেষক সোমালি কুম, মায়ানমারের মানবাধিকার কর্মী ও মায়ানমার থাম্পাদিপা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. খিন জ উইন, যুক্তরাজ্যের সমাজসেবী জুলিয়ান ফ্রান্সিস ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর।

মুনতাসীর মামুন আরো বলেন, ১৯৭১ সালের গণহত্যার ইতিহাস তুলে ধরার মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম কতটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল, তা উপলব্ধি করাতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই গণহত্যার পর জন্মগ্রহণ করেছে তাদের বোঝাতে হবে দেশের জন্ম কতটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল। আমরা যারা অবরুদ্ধ দেশে থেকেছি তারা বুঝি কতটা যন্ত্রণাদায়ক সেই পরিস্থিতি। গণহত্যা এবং সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে না গেলে এর যন্ত্রণা আসলে বোঝা যাবে না। বুঝতে চেষ্টা করুন ৩০ লাখ মানুষের বেদনা কী রকম ছিল। পাঁচ লাখের অধিক নারী নির্যাতিত হয়েছে, তাদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে হবে।

আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা একদিনে অর্জন হয়নি। এর চূড়ান্ত রূপ পায় ১৯৭১ সালে। এরপর ১৯৭৫ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি শুরু হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। এই ইতিহাস বিকৃতি রোধে এ ধরনের সম্মেলনের প্রয়োজন রয়েছে। আমি আশা করি এটা অব্যাহত থাকবে।

সোমালি কুম বলেন, আমি বাংলাদেশের গণহত্যার ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছি। কম্বোডিয়ায়ও দুই মিলিয়ন লোক হত্যা করা হয়েছিল। গণহত্যার ইতিহাস রচনা নতুন প্রজন্মের শিক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সঞ্জয় কে ভরদ্বাজ বলেন, গণহত্যার ইতিহাস জানতে এ ধরনের সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণহত্যা জাদুঘর স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভিন্ন। আমেরিকা-চীনের বিরোধীতা সত্ত্বেও তারা স্বাধীনতা লাভ করেছিল। যেখানে পাকিস্তান আর্মি গণহত্যা চালিয়েছিল। দুইদিনব্যাপী ওই সম্মেলনে ২৮জন গবেষক তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সম্মেলনের সমাপনিতে ধন্যবাদ দেন কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

উল্লেখ্য, সম্মেলনে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, মায়ানমার, যুক্তরাজ্য থেকে ৫০ জন বিশেষজ্ঞ গবেষক অংশ নেন। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে শতাধিক গবেষক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App