উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী বেগম আখতারের গাওয়া ‘জোছনা করেছে আঁড়ি’ গানটি কাভার সং হিসেবে গেয়ে বেশ প্রশংসা কুঁড়িয়েছিলেন এই প্রজন্মের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী লুইপা। লুইপা চ্যানেল আইয়ের ‘সেরাকন্ঠ’র শিল্পী। একই চ্যানেলের ক্ষুদে গানরাজের ২০০৯ সালের শীর্ষ দশে ছিলেন অনন্যা আচার্য্য। বেগম আখতারের গাওয়া এই গানটিই সম্প্রতি একটি রেডিও চ্যানেলে শুধু গীটারের সঙ্গে অসাধারণ গায়কীতে মুগ্ধ করেন অনন্যা। সেই অনন্যার গাওয়া গানটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে অনন্যার গায়কী নিয়ে ভূঁয়শী প্রশংসা করে কিছু কথা লিখেন বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের গর্ব বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী কনকচাঁপা। আর এরপর থেকেই যেন অনন্যার গায়কী এবং অনন্যা সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়ে যায় শ্রোতা দর্শকের। অনন্যা যখন কুমিল্লায় থাকতেন সেই সময় কুমিল্লা থেকে এসে কনকচাঁপার কাছে গান’র নানান বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতেন। কনকচাঁপা যখন ভীষণ ব্যস্ত সেই সময়ে অনন্যা’র জন্য তার আগামীদিনের কথা ভেবে সময় বের করে তাকে গান সম্পর্কে তালিম দেবার চেষ্টা করতেন। কনকচাঁপার ভাষ্যমতে সেটা আসলে তেমন কিছুই না। কিন্তু অনন্যার ভাষ্যমতে সেই সময়ে সেটাই ছিলো তার আগামীদিনের পথে এগিয়ে যাবার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। অনন্যা’কে ঘিরে কনকচাঁপার স্বপ্ন প্রসঙ্গে কনকচাঁপা বলেন,‘ অনন্যার বাবা মাকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা ছোটবেলাতেই বুঝতে পেরেছিলেন তাকে দিয়ে গান হবে। আমার কাছে যখন কুমিল্লা থেকে অনন্যা আসতো তখন আমি টুকটাক তাকে গান সম্পর্কে জ্ঞান দেবার চেষ্টা করেছি। সেটা আসলে প্রথাগত নয়। তার আগ্রহ দেখে আমার যা মনে হয়েছিলো , এখন তার গায়কী দেখে আমার মনে হয় সেটারই প্রতীয়মান হতে যাচ্ছে। শ্রদ্ধেয় ফেরদৌসী রহমান আপা, রুনা লায়লা আপা, সাবিনা ইয়াসমিন আপার গানে আমরা নির্ভরশীল। আমাদের জীবনের সঙ্গে তাদের গান যেন অবধারিত হয়ে আছে। তাদের গানের উপরই আমরা নির্ভরশীল। আমি চাই একটি সময়ে অনন্যার গানের উপর শ্রোতারা নির্ভরশীল হোক। বিদ্যুতের মতো চমক দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়ে সূর্যের মতো স্থায়ী হোক। মৌলিক গানের একজন শিল্পী’তে পরিণত হোক।’ অনন্যা বলেন,‘ শ্রদ্ধেয় কনকচাঁপাকে আমি মামনি বলেই ডাকি। আর স্বামী শ্রদ্ধেয় সঙ্গীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খানকে আমি বাবামনি বলে ডাকি। তারা দু’জনই সেই ছোট্টবেলা থেকে আমাকে গানের দীক্ষা দিয়ে আসছেন। দু’জনই আমার গানের গুরু। আমার স্বপ্ন মা’মনির মতো একজন শিল্পী হতে। তার মতো একজন আদর্শবান মানুষও হতে চাই। তার ব্যক্তিত্ব যেমন সবাইকে মুগ্ধ করে তেমন ব্যক্তিত্বই নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাই। আর চলার পথে যদি ভুল ত্রুটি হয়ে যায় তা যেন সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।’ অনন্যা বিভিন্ন সময়ে শীতল ঘোষাল, শঙ্কর আচার্য্য, অলকা দাস, সঞ্জীব দে, ফরিদা পারভীন ফেরদৌস আরা, অনিল কুমার সাহা, অসিত দে, বিজন মিস্ত্রী, প্রিয়ায়কা গোপ’র কাছে গানে তালিম নিয়েছেন। কলকাতায় পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কাছেও তিনি নিয়মিত তালিম নেন। ছায়ানটে নজরুল সঙ্গীতে দ্বিতীয় বর্ষে এবং জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ে সঙ্গীত বিভাগে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রথম বর্ষ পরীক্ষা দিচ্ছেন। অরুন চৌধুরীর ‘মায়াবতী’ সিনেমায় তিনি পাঁচটি গানে কন্ঠ দিয়েছিলেন।