×

মুক্তচিন্তা

শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:২৩ পিএম

শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ দৃশ্য আমাদের দেশে এখন অতি পরিচিত। বিভিন্ন সময় বাণিজ্যিক ভবন, বস্তি কিংবা গার্মেন্টস কারখানা পুড়ে যাওয়ার খবর প্রায় গণমাধ্যমে আসছে। বুধবার বিকেলে টিকাটুলীর রাজধানী সুপার মার্কেটের বর্ধিত অংশ নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটের অর্ধশত দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। ২৫টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে অর্ধশত দোকানের সব মালামাল পুড়ে গেছে। দোকান মালিকরা ধারনা করছেন, ক্ষতি প্রায় অর্ধকোটি টাকা। গত বছর গুলশান ডিডিসি মার্কেটেও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। এমনকি অত্যাধুনিক শপিংমল বসুন্ধরায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দেখতে হয়েছে। এ ছাড়া পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ও বনানীর বহুতল এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনাগুলো সাম্প্রতিক। এরপরও কি আমরা সতর্ক হয়েছি? অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে কেন এত উদাসীনতা- এমন প্রশ্ন বারবার আসছে। দেশে প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে প্রায় আট হাজার। আর এসব ঘটনায় প্রাণহানি ছাড়া শুধু আর্থিক ক্ষতির পরিমাণই গড়ে সাড়ে ৩শ কোটি টাকার বেশি। ফায়ার সার্ভিসের হিসাব অনুযায়ী, সারা বছর যে অগ্নিকাণ্ড হয়, তার অর্ধেকেরও বেশি ঘটে বছরের প্রথম ৪ মাসে অর্থাৎ শীত মৌসুমে। জানা যায়, ঢাকার ১ হাজার ১২৬টি বিপণিবিতানের মধ্যে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ৪৬টিতে। ঢাকার অধিকাংশ বহুতল ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। নেই ঠিকঠাক জরুরি নির্গমন ব্যবস্থাও। সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা অনুসরণ না করে তৈরি হওয়া ভবনগুলো পরিণত হয়েছে মৃত্যুফাঁদে! এ অবস্থার পরিবর্তন কীভাবে হবে তা নিয়ে সিটি করপোরেশন এবং বিপণিবিতান কর্তৃপক্ষের ভাবনার সময় এসেছে। এমন ঘটনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সতর্কতা অবলম্বনে সচেতনতা বাড়াতে হবে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই লাগানো হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। বিপণিবিতানগুলোকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তবে সরকার সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপনায়ও বড় পরিবর্তন এনেছে। আধুনিক যন্ত্রাংশের ব্যবহার বেড়েছে। আগে যেখানে ক্রেন সাত তলার ওপর পৌঁছাত না, এখন সেখানে বিশ তলা পর্যন্ত পানি ও কর্মী বহন করার মতো ক্রেন রয়েছে। দমকল কর্মী ও প্রশিক্ষণও বাড়ানো হয়েছে। বিএসইসি ভবন ও বসুন্ধরা সিটিতে অগ্নিনির্বাপণের সময় দমকল বাহিনী ছিল অসহায়। কারণ তখন আধুনিক যন্ত্রাংশ ছিল না, প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনীর অভাব ছিল। এখন পানি সরবরাহের গাড়িও বাড়ানো হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের তৎপরতায় টিকাটুলীর রাজধানী সুপার মার্কেটের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা বলছেন। এজন্য কর্মীরা প্রশংসার দাবিদার। এ ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত কাম্য। আহত যারা হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব সরকার নিয়েছে। চিকিৎসায় যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয় সেদিকে খেয়ালও রাখতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App