×

জাতীয়

বুয়েট অচলের নেপথ্যে বিএনপি-জামায়াত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩০ এএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অচলের নেপথ্যে বিএনপি-জামায়াত এবং গণফোরামের ইন্ধন রয়েছে বলে প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে সরকার। তারাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন টেনে নেয়ার রসদ জোগাচ্ছে। এরই মধ্যে বিএনপির সাবেক আইনজীবী নেতা বর্তমানে গণফোরামের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ইসমাইলের নাম জানতে পেরেছে সরকার। এ ছাড়াও উপাচার্যকে হটানোর জন্য আন্দোলনকে বেছে নিয়েছে শিক্ষকদের একটি অংশ। সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের বহিষ্কারসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি পূরণে ১৪ দিন সময় চেয়েছেন। গতকাল সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শীর্ষ সংশপ্তক বলেন, আমরা প্রশাসনের দেয়া প্রস্তাব মেনে নিয়েছি। তারা যদি দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে পারে তাহলে আসন্ন টার্ম পরীক্ষা দেব। এদিকে বুয়েটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আবরার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের পর অভিযোগপত্রও দেয়া হয়েছে। এরপরও আন্দোলনের যৌক্তিকতা কি? কিছু গোষ্ঠী হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রেখেছে। জনগণের অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার অধিকার কারো নেই। আন্দোলনে ইন্ধনদাতা শিক্ষকদের উদ্দেশে উপমন্ত্রী বলেন, আপনারা উসকানি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রেখেছেন। আবার আপনারা বেতনও নিচ্ছেন। এটা কোন নৈতিকতার মধ্যে পড়ে? তিনি বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় আমাদের কাছে সব ধরনের তথ্য এসেছে। মেধাবীদের প্রতিষ্ঠান বুয়েট। তাই আমরা কারো বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে চাই না। আপনারা তাদের সন্তানদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে সঠিক পথ দেখান। উস্কানিমূলক আচরণ করে জনগণের অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয় অচল রেখে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবেন না। তিনি বলেন, স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। এর জন্য সময় প্রয়োজন। যেহেতু অপরাধীরা কারাগারে আটক, এ সময় তাদের স্থায়ী বহিষ্কার মুখ্য বিষয় নয়। এই ইস্যুতে আন্দোলন চাঙ্গা রাখা হবে, তা হতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবাসিক ক‚টনৈতিক প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যুতে কথা বলছেন। আমাদের সমস্যা নিয়ে তাদের কথা বলাটা একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এটি আমরা প্রত্যাশা করি না। তিনি বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একজন অভিভাবক উস্কানি দিচ্ছেন। ওই অভিভাবক জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, আন্দোলন অব্যাহত রাখতে ওই আইনজীবী অভিভাবক তার বুয়েটে পড়া সন্তানকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। আর সেই সন্তান বাবার নির্দেশনা মতো অন্যদের নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। একজন বাবার কারণে বুয়েট অচল হলেও সরকার আপাতত সেই বাবাকে ধরবে না। সন্তানের মঙ্গলের জন্যই সরকার নীরব থাকবে। তবে সীমালঙ্ঘন করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অভিভাবকদের সতর্ক করে তিনি বলেন, আপনারা সন্তানদের মঙ্গলে সঠিক পরামর্শ দেন। তা না হলে আমরা কঠোর হয়ে উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে এডভোকেট মো. ইসমাইলের সঙ্গে ভোরের কাগজ কথা বলতে পারেনি। তবে তার বুয়েট পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী কন্যার সঙ্গে ভোরের কাগজের কথা হয়। সব শুনে ওই শিক্ষার্থী বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বুয়েটের আন্দোলনের সঙ্গে আমার বাবার সম্পর্ক কি সেটাই বুঝতে পারছি না। উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার পর বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে নাম আসা আসামিদের স্থায়ী বহিষ্কারসহ তিন দফা দাবিতে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন তারা। ফলে বুয়েটে এখনো অচলাবস্থা চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App