পরিবেশ দেখতে সুন্দরবনে আসছে ইউনেস্কো
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৩১ পিএম
আগামী ডিসেম্বরে ইউনেস্কোর চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সুন্দরবন পরিদর্শনে আসছে। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বিশ্ব ঐতিহ্যের পূর্বশর্তগুলো কতটুকু মেনে চলা হচ্ছে তা দেখবে এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন তারা। ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ইউনেস্কোর সুন্দরবন পরিদর্শনে কোনো ‘নেতিবাচক’ প্রতিবেদন যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি আছে সরকার ।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
পরে তাদের প্রতিবেদনে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রকল্পটি অন্য স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়। তা না হলে সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা বাতিল করে একে ‘বিপন্ন’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে পোল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির অধিবেশনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়। এরপর মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি প্যারিসে ইউনেসকো সদর দপ্তরে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের যুক্তিগুলো তুলে ধরেন এবং প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে ইউনেসকোর সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম সভায় ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের’ তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের অন্তর্ভুক্তি আপাতত এড়াতে পারে বাংলাদেশ। সুন্দরবন সুরক্ষায় তারা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা- ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে বিশ্বের বর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকাভুক্ত করে।
২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তির পর থেকেই তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে।
তাদের ভাষ্য, এই প্রকল্প সুন্দরবন ও সেখানে থাকা বণ্যপ্রাণীদের জন্য ‘ভয়াবহ হুমকি’র কারণ হয়ে উঠবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ও উন্নতমানের আমদানি করা কয়লা ব্যবহার করা হবে। এতে সালফার, ফ্লাই অ্যাশ ও অন্যান্য উপাদানজনিত বায়ুদূষণের পরিমাণ ‘ন্যূনতম পর্যায়ে’ থাকবে, যার ফলে পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।