×

জাতীয়

এলডিপি ভাঙনের কারণ নিয়ে যা বললেন অলি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৫৯ পিএম

এলডিপি ভাঙনের কারণ নিয়ে যা বললেন অলি

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন এলডিপি সভাপতি কর্নেল অলি আহমেদ। ছবি: ভোরের কাগজ

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ভাঙার কারণ হিসেবে কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ডক্টর অলি আহমেদ এর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা তিনি অস্বীকার করেছেন। অলির নেতৃত্বাধীন অংশকে এলডিপির মূল দাবি করে অপর অংশের নেতাদের কটাক্ষ করে বলেন,'কেউ যদি তার বাপের নাম বাদ দিয়ে আমার নামে পরিচিত হতে চায়, আমার কোন অসুবিধা নাই।'

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় মুক্তি মঞ্চের উদ্যোগে ' নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার 'প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এলডিপি সভাপতি কর্নেল অলি আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

এর আগে, একই হল রুমে সকালে এলডিপি নেতাদের একাংশ অলির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সভাপতি হিসেবে আব্দুল করিম আব্বাসী এবং সদস্য সচিব হিসেবে শাহাদাত হোসেন সেলিমের নাম ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দল ভাঙ্গার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অলি বলেন, গত ১২ বছর যাবত আমি এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। তারা ছিল আমার দলের সদস্য সন্তান সমতুল্য। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাটা অশোভনীয়। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন মন্তব্য নাই।

তিনি বলেন, 'এলডিপি আমার নামে নিবন্ধন করেছি। এটি এক নম্বর রাজনৈতিক নিবন্ধিত দল। সুতরাং এলডিপি অন্য কারো আইনগতভাবে নেয়ার অধিকার নাই। '

গত ৯ নভেম্বর এলডিপির যে নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তা-অগঠনতান্ত্রিক, সেখানে অলির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন এলডিপির নতুন অংশের নেতারা এবং অলি কর্তৃক ঘোষিত ওই কমিটিতে নেতাদের পদ বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অলি বলেন,'কোন নেতাকে দল থেকে বঞ্চিত করা হয় নাই। সে সবসময় নিজেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে লিখতেন। আমাদের গঠনতন্ত্রে কোনো সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ নাই'।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর প্রোগ্রাম হয়েছে গত ২৬ শে অক্টোবর। সেই প্রোগ্রামের তারা উপস্থিত ছিল না এবং তারা আমার দলের সদস্য না।

আপনি নিজেও এলডিপি দাবি করেছেন, আবার আব্দুল করিম আব্বাসী এবং শাহাদাত হোসেন সেলিম ও নিজেদের দাবি করছেন আসলে মুল এলডিপি কোনটা এমন প্রশ্নে অলি বলেন, 'কেউ যদি তার বাপের নাম বাদ দিয়ে আমার নামে পরিচিত হতে চায়, আমার কোন অসুবিধা নাই।'

এলডিপির ওই অংশকে যদি ২০ দল স্বীকৃতি দেয় তাহলে আপনাদের অবস্থান কি হবে-এর জবাবে অলি বলেন, আমিতো ২০ দলের ইনচার্জ না। যখন এটা হবে তখন সেটা দেখব।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সাবেক নেতা অলি বলেন,' নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ সে বিষয়ে আপনাদের বলতে চাই, এই সরকার জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, মানবাধিকার নিশ্চিতে এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সুতরাং তাদের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নাই। '

তিনি বলেন, সময় এসেছে এই সরকারের পদত্যাগ করা। সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাবো এবং নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাবো। অন্যথায় সমগ্র দেশের মানুষকে বলবো একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই সরকারের বিরুদ্ধে অবরোধ মিটিং-মিছিল করার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে।'

অলি বলেন, আশা করি দেশের জনগণ এবং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করবেন। জাতীয় মুক্তি মঞ্চের অতীতের কর্মসূচিতে জামায়াত নেতাদের উপস্থিত থাকলেও এবার তাদের দেখা যায়নি।

এদিকে এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ সংবাদ সম্মেলন শেষে বলেন, জামায়াতকে এবার তারা আমন্ত্রণ জানান নি।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপা সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান , জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুনির হোসেন কাসেমী, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মেজর অবসরপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন, জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App