×

সাময়িকী

শূন্যলোকে অনন্ত বিরহী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:০০ পিএম

শূন্যলোকে অনন্ত বিরহী
নবনীতা দেবসেন সম্পর্কে সামান্য কিছু শব্দের ঘেরাটোপে কিছুই বোধহয় লেখা সম্ভব নয়। তবু শেষ করার আগে যেটা না বললেই নয় সেটাই বলি। তাঁর উদ্যোগেই ২০০০ সালে তাঁর মার জন্মদিনে মহিলা লেখিকাদের নিয়ে সংগঠন ‘সই’ এর জন্ম হয়েছিল।
জন্মের দিন থেকেই মৃত্যুর দিকে হাঁটা শুরু হয় আমাদের, প্রাকৃতিক নিয়মে। এই আসা যাওয়ার মাঝখানের সময়টুকুই জীবন। আলো ও আঁধারমাখা ছায়াপথজুড়ে কখনো রূপবতী নদীর হিল্লোল মমতা মাখানো হাত, মায়াবী আঙুল, কখনো বা অনন্ত দহন। মুগ্ধতা মাখানো চোখে উত্থান-পতন, আনন্দ বিষাদ নিয়ে আজীবন নিঃশব্দ মৃত্যুর দিকে হেঁটে যাওয়া আমাদের অমোঘ নিয়তি। এই চলার পথ সারাক্ষণ স্বপ্নময় উজ্জ্বল রঙিন, কুসুম ছড়ানো নয়। নানান ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই, ভাঙাগড়া, পাওয়া না পাওয়া, দুঃখ যন্ত্রণার মধ্য দিয়েই আঁকাবাঁকা এই সড়ক। মায়াময় ছায়ার আশ্রয়, স্বপ্নের উঠোন কিংবা মেঘ বৃষ্টি ঝড়, নিষ্ঠুর প্রলয়কে অগ্রাহ্য করে যাঁরা জীবনের বিজয়কেতন উড়িয়ে হাসিমুখে এগিয়ে যেতে পারেন নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে তাঁদেরই কুর্ণিশ জানায় মানুষ। কবি, কথাকার, নবনীতা দেবসেন তেমনই একজন কথাশিল্পী যাঁর সৃষ্টিশীল কলম, জীবনীশক্তি এবং রসবোধ ছিল ঈর্ষণীয়। অনন্ত নিখিল জোড়া এই জীবনকে তিনি নিজের মতো করে গ্রহণ করেছিলেন তাঁর চেতনায়। অনাবিল আনন্দ, সুখ বা বিষণ্ন মলিন ক্ষতমুখ সমস্ত কিছুই পরিশুদ্ধ করে নিয়েছিলেন তাঁর উদাসীন শিক্ষিত মননে। নবনীতা দেবসেনের জন্ম ১৩ জানুয়ারি ১৯৩৮। মনে আছে একবার ঐ দিনে কোথাও কোনো একটা অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল আমাদের। আমি কিছু বলার আগে নিজেই এগিয়ে এসে আমায় বলেছিলেন ‘শুভ জন্মদিন।’ আমি তো অবাক। আসলে ঐ দিনটায় আমিও জন্মেছিলাম। কিন্তু উনি কি করে সেটা জানলেন, বুঝিনি। ওঁকে জন্মদিনের প্রণাম সেরে উঠতেই হেসে বলেছিলেন একটা সংকলনের পেছনে কবি পরিচিতি দেখতে দেখতে নজরে পড়েছিল দিনটি। কবি দম্পতি নরেন্দ্র দেব এবং রাধারানী দেবীর একমাত্র সন্তানের নামটি রেখেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ। আরও একটি নাম দিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি রাধারানী দেবীর এই সন্তানের নাম রাখতে বলেছিলেন ‘অনুরাধা’। শেষ অবধি অবশ্য কবিগুরুর দেয়া নামটিই থেকে যায়। নবনীতা। সাহিত্যের পরিমণ্ডলেই তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা। নরেন্দ্র দেব ছিলেন বিখ্যাত কবি ও অনুবাদক। এ ছাড়াও বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস রচনা করেছিলেন তিনি। পিতার অনুবাদে ‘ওমর খৈয়াম’ ও অন্যান্য কবির কবিতা পড়েই হয়ত প্রথমে অন্য ভাষার সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন লেখিকা। পরবর্তী জীবনে তার প্রতিফলন আমরা দেখেছি। মা, রাধারানী দেবী কবিতা লিখতেন ‘অপরাজিতা’ নামে। বিধবা এই কবির কবিতা নিয়ে উৎসাহী ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র এবং আরও অনেকেই। পরে কবি নরেন্দ্র দেবের সঙ্গে বিবাহ হয় তাঁর। একজন বিধবা নারী হয়েও ওই সময়ে তিনি নিজেই বিবাহ করতে চান কবিকে। সব থেকে আশ্চর্য হ’ল ওঁর প্রথম শাশুড়িও উদ্যোগ নিয়েছিলেন এই বিয়ের। কিছুকালের মধ্যেই নতুন বসতবাটী নির্মিত হয় ‘ভালো-বাসা’। সেখানেই জন্ম। বিদেশে পড়তে যাবার আগে এবং বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর এই বাড়িতেই শেষদিন পর্যন্ত জীবন কাটিয়েছেন তিনি। বিখ্যাত পরিবারের সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার সুবাদেই তিনি রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, প্রমথ চৌধুরী এবং আরও অনেক বিখ্যাত মানুষজনের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। বাবা নরেন্দ্র দেব ও মা রাধারানী দেবী দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সাহিত্যসভায় নিমন্ত্রিত হতেন। মা-বাবার সঙ্গে এইসব সভায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। সেই থেকেই হয়ত জন্মেছিল ভ্রমণের প্রতি আগ্রহ। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন এই লেখিকা। তদানীন্তন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হবার পর চলে আসেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে সেই বছরই শুরু হয় তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগ। ওই বিভাগে ভর্তি হবার সুযোগ পান তিনি। কবি বুদ্ধদেব বসু, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন সেই বিভাগের শিক্ষক। বাবার সূত্রে জেনেছিলেন ওমর খৈয়াম, এই শিক্ষকদের কাছে নিলেন রাঁবো, মালার্মে, রিলকে, ব্যোদলেয়র এবং বিশ্বের অন্য কবিদের কবিতার পাঠ। এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। একই বিষয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে আবার এমএ পাস করে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৪ সালে ডক্টরেট করেন। তার আগেই ১৯৬০ সালে অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়েই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ শেষ করেন। ১৯৭৬ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুই কন্যাকে নিয়ে দেশে ফিরে এসে যাদবপুরেই অধ্যাপনার কাজে যোগ দিয়ে লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। শুরু হয় নতুন যুদ্ধ। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের স্ত্রী নয়, এক অসম্ভব জীবনীশক্তি নিয়ে সাহিত্যের প্রায় সমস্ত বিভাগে দীপ্ত পদচারণায় তিনি হয়ে ওঠেন অনন্যা। স্পষ্ট হয় তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। প্রথম রম্যরচনার বই ‘নটী নবনীতা’র জন্য ১৯৯৯ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন এবং ২০০০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। কবি নবনীতা দেবসেন সম্পর্কে এই প্রয়োজনীয় সংক্ষিপ্ত তথ্য না জানলে তাঁকে বা তাঁর সৃষ্টিকে ঠিকমতো অনুধাবন করায় অসুবিধা হতে পারে, এমন ভাবনা থেকেই এই উল্লেখ। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম প্রত্যয়’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। তারপর ‘স্বাগত দেবদূত’। ২০০৯ সালে, প্রথম কাব্যগ্রন্থের ৫০ বছর পর প্রকাশিত হয় নতুন কবিতার বই ‘তুমি মনস্থির কর’। মনস্ক পাঠকরা জানেন তাঁর কবিতার কথা। ফরাসি, জার্মানি, সংস্কৃত ও বিভিন্ন ভাষা জানতেন, ওইসব ভাষার কবিদের নিয়ে চর্চা করতেন। নিয়মিত অনুবাদ করতেন কবিতা। নিজেকে নিয়ে মজা করার অভ্যাস ছিল তাঁর। দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে কষ্ট পেয়েছেন, কর্কটরোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে, তবু তাঁর মুখের হাসি কেউ মিলিয়ে যেতে দেখেনি কখনো। অসীম সাহস আর প্রখর জীবনীশক্তি নিয়ে তিনি পেরিয়ে গিয়েছেন সমস্ত প্রতিরোধ। দেখা হলেই সরল উষ্ণতায় কাছে টেনেছেন সবাইকে। বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধ এবং সুগভীর মানবিকতা প্রকাশ পেয়েছে তাঁর সমস্ত লেখায়। একটি কবিতার কথা মনে পড়ছেÑ নিজেই নিজের কাঁধে হাত রাখি গালে টোকা মেরে বলি : চিয়ার আপ ওল্ড গার্ল ...(ছাড়পত্র) ‘রাত্রির স্টেশন’ নামে একটি কবিতায় তিনি লিখেছিলেন ‘অন্ধকারের বুক ফুটো করে আলোর বর্শা জ্বলছে’। এই আলোর বর্শাই তাঁকে দিয়েছিল অদম্য জীবনীশক্তি। এই আলোই সরিয়ে দিয়েছে সমস্ত অন্ধকার জীবন। তিনি জানতেন... তত্রাচ জীবন থাকে, যেমন তেমন/ যেভাবে রাখবে তেমনি/ কোলে পিঠে নধর, নাদুশ /অথবা জুতোর নিচে, বেপরোয়া- / কেবল জীবন থাকে শরীরে শরীরে/ ভাঁড়ে কিংবা রুপোর গেলাশে (তত্রাচ জীবন) এই জীবনবোধ, এই সরল সত্যই তাকে দিয়েছে যে কোন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর শিক্ষা। শুধু কবিতা নয়, উপন্যাস, ছোটগল্প, রম্যরচনা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, শিশুসাহিত্য, রূপকথা, নাটক, অনুবাদ সাহিত্যের সমস্ত শাখায় ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৮০ কিংবা তারও বেশি। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত ‘বামাবোধিনী’ এবং ২০০১ সালে প্রকাশিত ‘মায়া রয়ে গেল’ উপন্যাস দুটি বিষয়ের গুণে অনবদ্য। দুই বাংলায় প্রচলিত সীতার গান বলে যে সব গান গাওয়া হতো সে সব সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। অসংখ্য এমন গান এবং কবি চন্দ্রাবতী রচিত রামায়ণকে কেন্দ্র করে সমকামীদের নিয়ে লেখা ‘বামাবোধিনী’ উপন্যাস। রামায়ণ নিয়ে তাঁর গবেষণার কথা আমরা জানি। রাম নয়, সীতার চোখ দিয়েই তিনি বিশ্লেষণ করেছেন রামায়ণের কাহিনী। বিভিন্ন দেশে লেখা রাম সীতার কাহিনীও ভিন্ন ভিন্ন। সেই সব গল্পও ছিল তাঁর সংগ্রহে। কিন্তু তিনি গবেষণা শুরু করেছিলেন কবি চন্দ্রাবতী এবং অন্ধ্রপ্রদেশের এক কবি, দুজনের রামায়ণ অনুবাদ নিয়ে। চন্দ্রাবতীর রামায়ণ ইংরেজিতে অনুবাদ করছিলেন তিনি। সেই কাজ শেষ হবার আগেই দুই মেয়ের কোলে মাথা রেখে রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে শুনতে পাড়ি দিলেন অনন্তভ্রমণে। ‘ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে’ তাঁর অত্যন্ত জনপ্রিয় ভ্রমণকাহিনী। সামরিক বাহিনীর ট্রাকে করে অরুণাচল বেড়াতে যাওয়ার কাহিনী। কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের নিমন্ত্রণে পেরু যেতে হয়েছিল তাঁকে। সেই ভ্রমণ নিয়ে লেখা ‘যাবোই যাবো পেরু’। সম্ভবত তাঁর শেষ ভ্রমণকাহিনী। বিভিন্ন বিষয়ে লেখা তাঁর বইগুলোর মধ্যে দ্বিরাগমন, দেশান্তর, হে পূর্ণ তব চরণের কাছে, ইচ্ছামতী, একটি ইতিবাচক প্রেমকাহিনী, ভালোবাসা কারে কয়, ঠিকানা, স্বপ্ন কেনার সদাগর, চন্দ্রমল্লিকা এবং প্রাসঙ্গিক প্রবন্ধ ‘পলাশপুরের পিকনিক’ উল্লেখযোগ্য। ‘ভালো-বাসার বারান্দা’র জনপ্রিয়তার কথা মনস্ক পাঠকদের অজানা নয়। তাঁর লেখা রূপকথার বইগুলোও খুব জনপ্রিয়। প্রতিটি রূপকথার কেন্দ্রীয় চরিত্র কিন্তু নারী। এবার একটু অন্য কথায় আসি। নবনীতাদিকে প্রথম দেখি দীঘায়। ইউএসআইএস-এর সুপ্রিয়দার আয়োজনে এক ঘরোয়া সভায়। সম্পাদক সাগরময় ঘোষ, কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়, কবি নবনীতা দেবসেন এবং আরও অনেক বিখ্যাত কবিদের সঙ্গে ছিলাম আমরা তিনজন তরুণ। দেবী রায়, কমল চক্রবর্তী এবং আমি। মনে আছে, পড়ন্ত রোদে সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। অল্প অল্প ঢেউ এসে ধুইয়ে দিচ্ছিল তাঁর পা। একটু উদাসীন, অন্যমনস্ক। সেটা বোধহয় সত্তরের মাঝামাঝি। তারপর নানান কারণে দেখা হয়নি প্রায় পঁচিশ বছর। বাংলা আকাদেমির একটি অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসে আছি মঞ্চে। বললেনÑ কবিতা পড়ি নিয়মিত, তোমার চেহারাটা মনে ছিল না। নিচে পাশে বসা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করতে তোমার নাম বলল। কিছুই না। কিন্তু এই সামান্য ব্যাপারটি ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিয়েছিল। এমন স্বচ্ছ মনের মানুষ হয়? নবনীতা দেবসেন সম্পর্কে সামান্য কিছু শব্দের ঘেরাটোপে কিছুই বোধহয় লেখা সম্ভব নয়। তবু শেষ করার আগে যেটা না বললেই নয় সেটাই বলি। তাঁর উদ্যোগেই ২০০০ সালে তাঁর মার জন্মদিনে মহিলা লেখিকাদের নিয়ে সংগঠন ‘সই’ এর জন্ম হয়েছিল। পৃথিবীতে বোধহয় প্রথম মহিলা লেখিকাদের বই নিয়ে হয়েছিল ‘সইমেলা বইমেলা’। ‘সই’ এবার ২০ বছরে পা দিতে চলেছে। আগামী ৩০ নভেম্বর সেই অনুষ্ঠান। শুধু তিনিই থাকবেন না। মনে পড়ছে তাঁর ‘দ্বিপান্তরী’ কবিতার শেষ কয়েকটি পঙ্ক্তি- ‘.....বিনা প্রত্যাশায় আমি / নিরাকার প্রিয়মন্যতায় পকেট ভরিয়ে নিয়ে/ এইবার দ্বীপে চলে যাব সেই দ্বীপে কোনদিন তোমাদের জাহাজ যাবে না’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App