×

মুক্তচিন্তা

দ্রুত বিচার কাজ শুরু হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৩০ পিএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বহুল আলোচিত মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে গত বুধবার চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এখন দ্রুত বিচার কাজ শুরু করে ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ অক্টোবর রাতে ফাহাদকে তার কক্ষ থেকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে তাকে কিল-ঘুষি মেরে, স্কিপিং দড়ি দিয়ে ও ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটায় হত্যাকারীরা। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে পেটানো হয়। শিবির সন্দেহ, বড় ভাইদের সব সময় সালাম না দেয়া, আসামিদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। হত্যকারীরা রাজনৈতিক পরিচয়কে নিজেদের রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রদের সঙ্গে অছাত্রের মতো আচরণ করত। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ফাহাদের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের ৩৯ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেয়া হলো। অভিযুক্তদের মধ্যে ১১ জন হত্যাকাণ্ডের সরাসরি অংশ নিয়েছিল। বাকিরা অন্যভাবে জড়িত। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। যার মধ্যে ১৬ জন এজাহারনামীয় আসামি। এজাহারে নাম না থাকলেও তদন্তে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চার আসামি পলাতক আছে। চারজনের মধ্যে তিনজন মামলার এজাহারনামীয় আসামি। এজাহারের বাইরে মাত্র একজন। ফাহাদ খুন হওয়ার পর ৭ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নেমে ১০ দফা দাবি তোলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও সমর্থন প্রকাশ করেন। তাদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, ফাহাদ হত্যার আসামিদের সাময়িক বহিষ্কার এবং হলগুলোতে নির্যাতন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্দোলন শিথিল করে ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ দিয়ে মাঠের আন্দোলনে ইতি টানলেও হত্যাকারীদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগ নামধারীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, সরকারি সম্পদ ধ্বংসসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকা-ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আদর্শিক এই ছাত্র সংগঠনটি। ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগ আবারো আলোচনায় আসে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়েকটি নিষ্ঠুর ও নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ছাত্রলীগের নাম। নানা ঘটনায় সরকারের অনেক ইতিবাচক অর্জন ও সাফল্যকে ম্লান করে দিচ্ছে ছাত্রলীগের দুষ্কর্ম। আমরা মনে করি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করতে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে; অভিভাবক রাজনৈতিক দলকে। অপরাধীর পরিচয় যাই হোক তাকে ছাড় দেয়া যাবে না। সরকারকেও তার ভাবমূর্তির স্বার্থেই শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস মোকাবেলায় কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। খুনিরা উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে- এমন দৃষ্টান্ত দেখতে চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App