জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন স্থগিত করে হল খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। আগামী একুশ নভেম্বরের মধ্যে হল খুলে দেওয়া ও ছাত্রলীগের হামলার দ্রুত বিচার চেয়ে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। আল্টিমেটাম চলাকালীন সময়ে আন্দোলনের সব ধরণের কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। তবে নির্ধারিত সময়ে দাবি না মানলে আগামী ২২ নভেম্বর শাহবাগে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদয়ালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেয় 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর'।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে "দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর" আন্দোলনের সংগঠক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ' হামলায় প্রত্যক্ষ মদদ দেওয়ার অপরাধে উপাচার্যের উপাচার্য পদে আসীন থাকার অধিকার নেই। তিনি শুধু হামলার নির্দেশ দিয়ে হাজারো শিক্ষার্থীর দুর্ভোগ উপেক্ষা করে শুধুমাত্র নিজের গদিকে যেকোনো মূল্যে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দিয়েছেন।'

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়,' রাষ্ট্র এবং প্রশাসনের নিকট উপাচার্যের দুর্নীতি সংশ্লিষ্টতার পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত ইতিমধ্যে জমা দেয়া হয়েছে।এমতাবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। শুধুমাত্র আর্থিক কেলেংকারী নয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় মদদ দেওয়া, অদক্ষ-অযোগ্য ভারপ্রাপ্ত প্রশাসন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বাধাগ্রস্ত করা, সিনেট পূর্নাঙ্গ না করাসহ বিভিন্ন কারণে এই মহূর্তে উপাচার্যের অপসারণ জরুরী। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সকলের একান্ত দাবি।'

এসময় উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপপক রায়হান রাইন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক খবির উদ্দীন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু, ছাত্র ইউনিয়নের সহ সভাপতি অলিউর রহমান সান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম প্রমূখ।

এদিকে আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার বিচার দাবি করে বুধবার বেলা দেড়টায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ‌‌'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে প্রায় তিন মাস যাবৎ আন্দোলন করছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের একাংশ। গত ৫ নভেম্বর উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করায় জাবি শাখা ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে। এ হামলায় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ২৫ আহত হয়েছিলো যার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।