×

মুক্তচিন্তা

জলবায়ু পরিবর্তন ও ডায়াবেটিসের বিস্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

এবারের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্যে ডায়াবেটিসের বিস্তার ও প্রতিরোধে পরিবেশের বিশেষ প্রভাবক ভূমিকার কারণে বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রসঙ্গটি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে ঘাতক ব্যাধি ডায়াবেটিস ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মানবজাতির জন্য প্রধানতম ঝুঁকি হিসেবে দেখা দেবে। ডায়াবেটিসের মতো মহামারি নিয়ন্ত্রণে মহতী উদ্যোগের মেলবন্ধন সুস্থ দেশ ও জাতি নির্মাণের দ্বারা জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সুনিশ্চিত হবে সন্দেহ নেই।

দেহে বহুব্যাধির আহ্বায়ক, নীরব ঘাতক রোগ ডায়াবেটিসের অব্যাহত অভিযাত্রায় শঙ্কিত সবাইকে এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে যথাসচেতন করে তুলতেই আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সাল থেকে ১৪ নভেম্বরকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিগত শতাব্দীর শেষার্ধে সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে গোটা বিশ্বে সবাই উঠেপড়ে লাগলেও এবং গুটি বসন্ত, কলেরা, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়ার মতো মহামারি নির্মূলে সফল হতে সক্ষম হলেও মানুষের সুন্দর-সাবলীল জীবনযাপনের পথে নীরবে তার সর্ব কর্মক্ষমতা হরণকারী অসংক্রামক ব্যাধি ডায়াবেটিসের বিস্তার রোধ করতে পারেনি। এটি নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিসচেতনতার অনিবার্যতা এবং এর জন্য সুপরিকল্পিত সর্বজনীন উদ্যোগ গ্রহণে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণের আবশ্যকতায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান সমস্যা ও সীমাবদ্ধতাগুলোর প্রতি বিশ্ব দৃষ্টি আকর্ষণ এবং সব সরকার ও জনগণের তরফে সংহত ও সমন্বিত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে ঐকমত্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ ২০০৬ সালে জাতিসংঘকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকল্পে প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানায়। মূলত বাংলাদেশের প্রস্তাবে এবং যৌক্তিকতার প্রচারণা-প্রয়াসে ১৪ নভেম্বরকে প্রতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জাতিসংঘ ২০০৭ সালে ৬১/২২৫ নং প্রস্তাব গ্রহণ করে। সেই থেকে জাতিসংঘের সব সদস্য দেশে, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশনের ২শর অধিক সদস্য সংগঠনে, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংস্থা কোম্পানি পেশাজীবী সংগঠন ও ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস নানা প্রাসঙ্গিক প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে উদযাপিত হচ্ছে। ২০০৭ সালেই জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের ব্লু সার্কেল লোগোটিও নির্বাচিত হয়। নীল বৃত্ত জীবন ও স্বাস্থ্যের ধনাত্মক প্রতীক, নীলাকাশ সব জাতিকে সংঘবদ্ধ করেছে এবং এ কারণে জাতিসংঘের পতাকার রংও নীল। নীল বৃত্ত বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস মহামারিকে নিয়ন্ত্রণ ও জয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের প্রতীক। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী ৩ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০১৪-১৯) মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘ডায়াবেটিস রোগকে জানা এবং নিয়ন্ত্রণ’। এবারের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্যে ডায়াবেটিসের বিস্তার ও প্রতিরোধে পরিবেশের বিশেষ প্রভাবক ভূমিকার কারণে বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রসঙ্গটি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে ঘাতক ব্যাধি ডায়াবেটিস ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মানবজাতির জন্য প্রধানতম ঝুঁকি হিসেবে দেখা দেবে। জলবায়ুর পরিবর্তনে ঘটে খরা, সুপেয় পানির দু®প্রাপ্যতা, অত্যধিক উত্তাপে ডিহাইড্রেশন, শরীরচর্চার সুযোগ সীমিত হয় বা শারীরিক শ্রমে বাধাগ্রস্ততা সৃষ্টি হয়, যা প্রকারান্তরে ডায়াবেটিসের প্রকোপ এবং মাত্রা বাড়ায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় সবাইকে এমনকি গর্ভবতী মহিলাদের এমন পুষ্টিহীনতায় পেয়ে বসে যে তাদের গর্ভের সন্তানেরও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভোগেন তাদের ওষুধ, সুষম খাবার সংগ্রহে ও শরীরচর্চায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নগরায়ন ও জনসংখ্যা আধিক্যের কারণে স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস অবলম্বন করা সম্ভব না হওয়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পায়। উন্নয়নের অভিঘাতে নগরজীবনে ব্যস্ততা বাড়ে, হাঁটাচলার পথঘাট সংকুচিত হয়, বাসায় তৈরি সুষম খাবারের চেয়ে ফাস্টফুডসহ বাইরের খাবার গ্রহণ থেকে শুরু করে সর্বত্র একটা কৃত্রিমতা এসে ভর করে। এর ফলে সুষম খাদ্য গ্রহণ ও শরীরচর্চার ব্যাঘাত ঘটে শরীর মেদবহুল ও স্থূলকায় হয়ে যায়- ডায়াবেটিস হওয়ার যা একটি অন্যতম কারণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের যা একটা প্রধান সমস্যা। বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে জলবায়ুর যে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে তার সঙ্গে ডায়াবেটিসের বিস্তারের অন্তসম্পর্কটি ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাতাসে নিঃসৃত কার্বনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে পরিবেশগত সমস্যায় জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটার প্রমাণ এখনই মিলছে। ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ ৫২%-এ বৃদ্ধি পেয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরো ভয়াবহ রূপে দাাঁড়িয়ে পৃথিবীকে বাসের অযোগ্য করে তুলতে পারে। ধনী দেশগুলো সবচেয়ে বেশি গ্যাস নিঃসরণ করলেও দরিদ্র দেশগুলো এর প্রতিক্রিয়া ভোগ করে বেশি। এ অবস্থার প্রতিকার না হলে প্রতি তিন বছরে জিডিপির ৫-২০% অর্থ ব্যয় হবে শুধু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায়। এর ফলে পুষ্টিহীনতা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের বিস্তার, দারিদ্র্য ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলেও জলবায়ুর পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে। দ্রুত ও দুর্বল নগরায়নের ফলে বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা এখন শহরে বাস করে। এখানে আছে যন্ত্রচালিত পরিবহন ব্যবস্থা, চলছে বস্তির বিস্তার, শরীর চর্চাবিহীন যাপিত জীবনে বাড়ছে বয়োবৃদ্ধ জনসম্পদ, হচ্ছে বনজ প্রাকৃতিক সম্পদ উজাড়, প্রাণিজ ও সুষম খাদ্যের জায়গা দখল করছে কলকারখানায় প্রক্রিয়াজাত কৃত্রিম অস্বাস্থ্যকর খাবার, পরিবর্তিত হচ্ছে আহার প্রক্রিয়া, বাড়ছে বিশ্বখাদ্য-কৃষির ব্যবসা ও বিপণনে প্রতিযোগিতা। ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ বিলিয়ন বিশ্ব জনসংখ্যার ৫ বিলিয়ন বাস করবে শহরে, যাদের মধ্যে ২ বিলিয়নই বাস করবে বস্তিতে। ফলে জীবনযাত্রায় জটিলতা বাড়তেই থাকবে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা নানা অনিয়মের ও ব্যবস্থাপনার কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হতে থাকবে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব জনসংখ্যা ৭ থেকে ৯ বিলিয়নে বৃদ্ধি পাবে এবং এশিয়া ও আফ্রিকাতেই ঘটবে এর ব্যাপক বিস্তার। সার্বিকভাবে বিশ্ব জনসংখ্যায় প্রবীণের প্রাধান্য পেলেও উন্নয়নশীল দেশে নবীনের পাল্লা হবে ভারী। জনমিতিতে এহেন অসম পরিবর্তন প্রবণতায় ইতোমধ্যে সম্পদের অপ্রতুলতায় পরিবেশ দূষণে, নানা রোগের প্রাদুর্ভাবে ও বিস্তারকে প্রভাবিত করছে।। এ পটভূমিতে বর্তমানে বিশ্বে ৩৬৬ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এর পরিমাণ অর্ধ বিলিয়নে দাঁড়াবে। বছরে ৪.৬ মিলিয়ন মানুষ এ রোগে মারা যায়। ডায়াবেটিসে সবচেয়ে বড় ক্ষতি কর্মক্ষমতা হারানো, এ রোগের পেছনে বার্ষিক ব্যয় হয় ৪৬৫ বিলিয়ন মা. ড.। ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ডায়াবেটিস রোগী বাস করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। এ রোগ পরিবারকে অসচ্ছল করে, শ্রমশক্তি বিনষ্ট করে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, ২০০০ সালে ভিত্তি বছরে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা যেখানে প্রায় ১৭ কোটি (বিশ্ব জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৩ ভাগ) ছিল, তাদের আশঙ্কা ২০৩০ সালে সে সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়ে যাবে। প্রাদুর্ভাব ও বিস্তারের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায় উন্নত বিশ্বে টাইপ ২ অর্থাৎ ইনসুলিন নিরপেক্ষ রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি (১৮০%), এর পর আফ্রিকা মহাদেশে (১৬০%), তারপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (১৫৫%) হারাহারি মতে, ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবল প্রবণতায় রয়েছে। বিশ্বে এই রোগের গড় বিস্তার যেখানে ১১৪% আমাদের বাংলাদেশে সেই বিস্তারের হার ১৪৯%, যা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষামতে নগরায়ন, ‘ওয়েস্টার্ন ফুড’ আর সার্বিক পরিবেশের ভারসাম্যহীনতায় এই রোগের বিস্তারকে করছে বেগবান। বিশ্ব রোগ নিরাময় কেন্দ্রের মতে, এই শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত পৌঁছার আগেই এটি মানবভাগ্যে মারাত্মক মহামারি রূপে উদ্ভাসিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ডায়াবেটিক তথ্য নিকাশ কেন্দ্রের হিসাব মতে, খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এই ঘাতকব্যাধি বছরে ১৩২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিসাধন করে সে দেশের জাতীয় অর্থনীতির। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস চিকিৎসা আন্দোলনের পথিকৃৎ প্রাণপুরুষ জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম (১৯১৭-১৯৮৯) ১৯৫৬ সালে সেগুনবাগিচায় নিজের বাসভবনের আঙিনায় ছোট টিনের ঘরে দেশের ডায়াবেটিস চিকিৎসার যে উদ্বোধন ঘটিয়েছিলেন আজ তার সেই প্রতিষ্ঠান, জাতির গর্বের প্রতীক ‘বারডেম’। বারডেম এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলে ডায়াবেটিস চিকিৎসার মডেল বা সেরা কেন্দ্র এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৮২ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্র¿ণ এবং গবেষণার ক্ষেত্রে তাদের একান্ত সেরা সহযোগী সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি, সম্মান ও সমীহ করে আসছে। অনেক মেজর রোগ থাকতে এ রকম একটা মাইনর রোগ নিয়ে তিনি আলাদা চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করতে চান কেন- সে সময় প্রায়ই এ ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হলে ডা, ইব্রাহিম বলতেন- ‘রোগটা মোটেই মাইনর নয়। কারো যে দিন ডায়াবেটিস হবে সে দিনই বুঝতে হবে যে, ওই লোকটা অন্ধ হয়ে যাবে কিংবা প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে বা তার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কিন্তু যদি যথারীতি চিকিৎসা ও পরিচর্যার ভেতর একে রাখা যায়, তাহলে আজীবন সে সুস্থ থাকবে। রোগীর হয়তো ত্রিশ-চল্লিশ বছর বয়স- দশ বছরের মধ্যেই তার সবকিছু অকেজো হয়ে যাবে, কিন্তু যথারীতি চিকিৎসা ও পরিচর্যা করলে এবং নিয়ম মেনে চললে সে ষাট বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকবে এবং প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।’ এ প্রসঙ্গে উপমা দিয়ে তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমরা গাড়ি বিকল হলে তবে গ্যারেজে সারাই করতে আনি, এটা বোকামি, সময় থাকতে যদি নিয়মিত মেইনটেন বা চেকআপ করানো হতো তাহলে হয়তো গাড়ি গ্যারেজে আনার প্রয়োজনই পড়ত না।’ তিনি ব্রত গ্রহণ করেন ‘দেশের কোনো ডায়াবেটিস রোগীকে বিনা চিকিৎসায় কর্মহীন হয়ে অসহায়ভাবে করুণ পরিণতির দিকে যেতে দেয়া যাবে না। চিকিৎসা ব্যয়বহনের ভার নিয়ে হলেও সবাইকে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে প্র্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা থাকবে।’ তার এ মিশন ও ভিশনের পতাকা তারই গড়া বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) দৃঢ় প্রত্যয়ে অত্যন্ত সযত্নে বহন করে চলছে। বারডেমে নিবন্ধিত রোগীর সংখ্যা এখন চার লাখের বেশি, প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি (এর মধ্যে ৭৫ থেকে ১০০ জন নতুন) রোগী চিকিৎসাসেবার জন্য এখানে আসে। দেশের প্রায় সব জেলায় বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অধিভুক্ত শাখা রয়েছে, যেখানে স্থানীয়ভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে অগণিত ডায়াবেটিস রোগী। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সরকার সমিতির প্রধান অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়ন করেছে আর সমিতি নিজস্ব উদ্যোগে সেই অবকাঠামোয় তুলে ধরেছে স্বাস্থ্যসেবার ডালি। দাতা সংস্থার সাহায্যনির্ভর না হয়ে আয়বর্ধক নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে ‘ক্রস ফাইন্যানসিং’-এর মাধ্যমে স্বয়ম্ভরতা অর্জনে প্রয়াসী, প্রত্যাশী। ডায়াবেটিসের মতো মহামারি নিয়ন্ত্রণে মহতী উদ্যোগের মেলবন্ধন সুস্থ দেশ ও জাতি নির্মাণের দ্বারা জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সুনিশ্চিত হবে সন্দেহ নেই।

মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : সরকারের সাবেক সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App