×

জাতীয়

আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:০২ পিএম

আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসকাবে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান

আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ত্রাণভিত্তিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসকাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে উপকূল ফাউন্ডেশন ও এডুএইড আয়োজিত ‘ভয়াল ১২ নভেম্বর: টেকসই উপকূল ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না, কোনো ধরনের দুর্যোগে দেশের মানুষের মৃত্যু ও ঘরবাড়ির য়তি হোক। যদিও হয়ে থাকে তাহলে আমরা তিগ্রস্থদের সাহায্য সহযোগিতা করবো। তবে আমরা দেশকে একটি দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দুর্যোগ মোকাবিলা করে অনেকটাই আমরা দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রের দিকে এগোচ্ছি। ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য আমরা জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭১০ কিলোমিটার আমাদের যে উপকূলীয় অঞ্চল আছে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময়। দুর্যোগে উপকূলবাসীদের রা করতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, আমাদের উপকূলীয় ৭১০ কিলোমিটার অঞ্চলকে আরসিসি ঢালাই করতে চাই, যেন টেকসই হয়। আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে শুধু ঘূর্ণিঝড় নয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে আমাদের উপকূলকে এই বাঁধ রা করবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ের আমরা টেকসই ঘরবাড়ি নির্মাণের বিষয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশের গৃহহীনদের জন্য আমরা দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরি করে দিয়েছি। ১১ হাজার ৬০৪টি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। আরো ২৩ হাজার ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। আগামীতে আরো ৩ লাখ ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৩ কোটি ঘর নির্মাণ করতে হবে। কারণ আমাদের ৩ কোটি উপকূলীয় মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে বসবাস করছে। উপকূলীয় ৯টি জেলায় চারতলা করে বিল্ডিং করা হবে। এই বিল্ডিংগুলোর নিচতলায় ফাঁকা থাকবে। দুর্যোগে এই বিল্ডিংগুলোই আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের ঘূর্ণিঝড়ের বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা সর্বোচ্চ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছি। ২১ লাখ ৮ হাজার ৭৫৮ জনকে পাঁচ হাজার ৭৮৮ আশ্রয়কেন্দ্র নিতে সম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিবর্তনশীল জলবায়ু মোকাবিলায় আমরা পদ্মাসেতুর অর্থায়নের মতোই নিজস্ব অর্থায়নেই কাজ করবো। সুতরাং জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সেটা থেকে উপকূলবাসী রা পাবে ও নিরাপদে থাকবে। এছাড়াও মন্ত্রী উপকূলবাসীর ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় ও জীবনমান উন্নয়নে একটি উপকূল বোর্ড গঠনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতেই উপকূল ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক এম আমিরুল হক পারভেজ লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে ১২ নভেম্বরকে ‘উপকূলীয় দিবস’ হিসেবে ঘোষণাসহ ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মহা-পরিচালক নিখিল রঞ্জন রায়, নির্বাচন কমিশনের সাবেক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব সুলতান আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কিউ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবির ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিস ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, বাংলাদেশ প্রকৌলশ বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসান এ শাফী, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা তুলে ধরে ভয়াল ১২ নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ হিসেবে ঘোষণার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App