×

জাতীয়

ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০১৯, ০৩:৫৩ পিএম

ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর আঘাতে খুলনার পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে দেড় হাজার কাঁচা ঘর, আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কাঁচা-পাকা ঘর। ভেসে গেছে হাজার হাজার হেক্টর মাছের ঘের। এতে প্রায় ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলেরও। বিদ্যুৎ সরবরাহ শনিবার মধ্য রাত থেকে সোমবার বেলা ১ টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। সোমবার দুপুরে উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও বাকি জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি।এদিকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে লোকজন ঘরে ফিরেছে। গত শুক্রবার থেকে গত রবিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে বৃষ্টিপাত এবং ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে জেলার পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ভারী বর্ষণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে, অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট এখনও পানির নীচে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের। শনিবার মধ্য রাত থেকে রবিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত বুলবুলের আঘাতে উপজেলার বিভিন্নস্থানে প্রায় ১ হাজার ৫ শত কাঁচা ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত এবং আরো প্রায় ৬ হাজার ঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না। এরমধ্যে দেলুটি ইউনিয়নে প্রায় ৩’শ ঘর একেবারেই বিধ্বস্ত হয়ে গেছে এবং প্রায় ৪’শত ঘর আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মনণ্ডল জানিয়েছেন। গত রবিবার ঝড়ো হাওয়া থেমে গেলে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজন ঘরে ফিরতে শুরু করেন এবং বিকালের মধ্যে সকলে নিজ গৃহে চলে যান বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। স্থানীয় সাংসদ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু মায়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করলেও সার্বক্ষণিক এলাকাবাসীর খোঁজ খবর নিয়েছেন। তিনি মোবাইল ফোনে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং এবং দলীয় নেতাকর্মীদেরকে দুর্যোগ পরবর্তি সময় সকলের পাশে থাকার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এদিকে গতকাল রবিবার দিনভোর উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না, সহকারী কমিশনার (ভুমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম, থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এমদাদুল হক শেখ, ওসি (তদন্ত) রহমত আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েসসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। কর্মকর্তাবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনদেরকে শান্তনা দেন এবং বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না জানান, ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে আমরা চাহিদা সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে প্রেরন করেছি। সেগুলি আসলে খুব শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সেকল বরাদ্ধ বিতরণ করা হবে। উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, এ বছর উপজেলায় আমনের আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৯’শত ৬৫ হেক্টর, এর মধ্যে বুলবুলের আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭’শত ১৪ হেক্টর। শীতকালিন সবজির আবাদ হয়েছে ২’শত ২৫ হেক্টর, আক্রান্ত হয়েছে ৫৬ হেক্টর এবং পানের বরজের আবাদ হয়েছে ১’শত ৯৫ হেক্টর এবং বুলবুলে আক্রান্ত হয়েছে ৯ হেক্টর। তবে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে এ প্রসঙ্গে কৃষিকর্মকর্তা বলেন আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে সঠিক ক্ষতির পরিমান জানা যাবে। অপরদিকে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাশ জানিয়েছেন, উপজেলার ১ হাজার ১’শত ৮২টি মাছের ঘের (যার পরিমান ৫ হাজার ১’শত হেক্টর) সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এতে করে ঘেরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে। এতে ঘের ব্যবসায়ীদের প্রায় ১৯ কোটি টাকার সাদা মাছ এবং প্রায় ৩৮ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার চিংড়ি মাছের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বুলবুলের আঘাতে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের তারে বড় বড় গাছ পড়ে তার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় এবং অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুটি পড়ে যায়। সেকারনে গত শনিবার মধ্যরাত থেকে টানা প্রায় ৩৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাইকগাছা জোনাল অফিসের লোকজন দিনরাত পরিশ্রম করে গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারলেও উপজেলার বহুস্থানে বিদ্যুৎ লাইন সচল করা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্ঠা অব্যহত রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App