×

জাতীয়

আঘাত হেনেছে ‘বুলবুল’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১০:২৩ এএম

বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। তবে খানিকটা দুর্বল হয়ে। মধ্যরাতে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপক‚ল অতিক্রম করে। ঘূর্ণিঝড়টি সর্বশেষ গতরাত ২টার দিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কি.মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক আয়শা খাতুন এ তথ্য জানান। আর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান, গতকাল রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ সুন্দরবনের ডেল্টা কোস্ট অতিক্রম করা শুরু করে। এর ব্যাস প্রায় ১০০ কিলোমিটার। উত্তর-পূর্ব দিকে আট কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছিল এটি। সেই হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র শেষরাত নাগাদ বাংলাদেশে পুরোপুরিভাবে প্রবেশ করে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে গতকাল সন্ধ্যার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপক‚লে আঘাত হানে। এ সময় ৩-৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপক‚লীয় এলাকা প্লাবিত হয়। রাত ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছিল। রাত ১২টার দিকে এটি ১২০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের ওপর সরাসরি আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া অফিস।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরের পর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব জোরালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ উপকূলীয় ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রামে সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে বিআইডবি্লউটিএ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দরে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সতর্কতা জারি বলবৎ থাকবে। ক্ষতি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীর ১০টি যুদ্ধজাহাজ ও কোস্ট গার্ডকে প্রস্তুত রাখা হয়। সাতক্ষীরায় সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সার্বিক বিষয় তত্ত্বাবধান করছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। বুলবুলের প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে উপক‚লীয় ১৪ জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে উৎপত্তি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ গতকাল সকাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপক‚লীয় এলাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড়টি। পরবর্তীতে সন্ধ্যার দিকে আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপক‚লীয়

এলাকায় আঘাত হানে। ফলে বাংলাদেশের খুলনা উপকূলীয় এলাকায় বাতাসের বেগ ও জলোচ্ছ্বাস বৃদ্ধি পায়। মধ্যরাতের মধ্যে বুলবুল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রচণ্ড গতিতে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হয়। এ সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সুন্দরবন, সাতক্ষীরা, খুলনা হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আস্তে আস্তে দুর্বল হবে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও পূর্ণিমার প্রভাবে উপকূলীয় ১৪টি জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এসব জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি এবং ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্র উপক‚লীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সতর্কতা জারি থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে গতকাল সকাল থেকেই সমুদ্রবন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় দমকা ও ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত ছিল।

এদিকে বিআইডবি্লউটিএ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সব নৌরুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। রাজধানীর সদরঘাট থেকে সব রুটের লঞ্চ বা অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। গতকাল দুপুর থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপক‚লীয় জেলা প্রশাসন। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, বুলবুল মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য চাল-ডাল ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ২৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১২শ স্কুল ও কলেজ বিকল্প আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ইয়ামিন চৌধুরী জানান, শনিবার সকাল থেকে বরিশাল বিভাগের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪৩৬ আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্যোগ পরবর্তী সেবা প্রদানের জন্য ৩১৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আবু জাফর জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বুলবুলের প্রভাবে গতকাল শনিবার বিকেল ৪টা থেকে আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রমও। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, বন্দরে ১৬টি জাহাজ ছিল। শনিবার সকাল ৭টার মধ্যে জেটি থেকে সবগুলো জাহাজ বহির্নোঙ্গরে পাঠানো হয়েছে। বহির্নোঙ্গরে ৫৫টি জাহাজ আগে থেকেই অবস্থান করছে। ইয়ার্ড ও জেটিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলোকে রশি দিয়ে বেঁধে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে জারি করা হয়েছে এলার্ট-৪। তার আগে থেকেই বন্দরে কন্টেইনার ওঠানামা, খালাস ও ডেলিভারিসহ সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকা পড়েছেন সহস্রাধিক পর্যটক। এদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীও রয়েছেন। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে গতকালও সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ১৮ ঘণ্টা আগে সব উপক‚লীয় জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। উপক‚লীয় অঞ্চলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্যাকেট করা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। একটি প্যাকেট একটি পরিবার ৭ দিন খেতে পারবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এসওডি (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি) ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, ভোলা ও বাগেরহাটের ৯টি এলাকার প্রতিটিতে ১০ লাখ টাকা, ২০০ টন চাল, এক লাখ টাকা করে গোখাদ্য বাবদ এবং এক লাখ টাকা করে শিশু খাদ্য বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ৫ লাখ করে মোট ৩০ লাখ টাকা এবং মোট ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এলজিআরডি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও ১ হাজার ৫০০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে।

উৎকণ্ঠা সদরঘাট টার্মিনালে : শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারির পর সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে গতকাল সদরঘাট ছিল নীরব ও কর্মচঞ্চলহীন। যাত্রীদের পদচারণা ছিল না। নদীবন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল হওয়ায় তারাই সদরঘাটে অবস্থান করেছেন। ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম-পরিচালক (ট্রাফিক) আলমগীর কবির বলেন, ঢাকায় ৪ নম্বর সংকেত জারি হয়েছে। আমরা আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রেখেছি। সদরঘাটে সব লঞ্চ তাদের নির্ধারিত স্থানে পল্টুনে বাধা রয়েছে। এসব লঞ্চের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।

সেনা ও নৌবাহিনী প্রস্তুত : ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রস্তুতির তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘বুলবুল’ পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর সব সেনানিবাস, ঘাঁটি, ১০টি যুদ্ধ জাহাজ ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও সাতক্ষীরায় ৫টি, চট্টগ্রামে ৩টি ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে দুটি যুদ্ধ জাহাজ, নৌকন্টিনজেট ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার তৎপরতায় নৌবাহিনী তিন স্তরের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত : ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ৪টি স্বতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এগুলোর ফোন নম্বর হলে ঢাকা-০২-৯৫৫৬৭৫৪,০১৭১৩০৩৮১৮১, চট্টগ্রাম-০১৭৩০৩৩৬৬৬৬, খলিনা-০১৭৩৩০৬২২০৯ এবং বরিশাল-০১৯৮৩৮৮৬৬৭৭। জেলাগুলোতে ওয়াটার রেসকিউ টিম, ফাস্ট এইড টিম ও সার্চ এন্ড রেসকিউ টিম প্রস্তুত রয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু : ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন দপ্তর, সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি তদারকি এবং সমন্বয়ের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কক্ষ নং-৬১৬, ভবন-৭ বাংলাদেশ সচিবালয়, ফোন নং- ৯৫৭৫৫৭৬) খুলেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক খোঁজ রেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দেড় লাখ সদস্য ১৪ জেলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে। সদর দপ্তর ও প্রতিটি জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App