জাবিতে সমাবেশ নিষিদ্ধ, অনড় আন্দোলনকারীরা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৩:১২ এএম
ফাইল ছবি
আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাম্পাস। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। তৃতীয় দফায় কঠোর নির্দেশনার মাধ্যমে ফাঁকা করা হয়েছে হলগুলো। এরপর ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল।
তবে জাবি প্রশাসনের সব ধরনের পদক্ষেপ উপেক্ষা করে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে জাবির প্রাধ্যক্ষ কমিটি জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষার্থীদের ১৬টি হলের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পানি ও গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ক্যাম্পাসের সব দোকানপাট।
এর ওপর আবার জাবির জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবদুস সালাম মিঞাঁর স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের সভা-সমাবেশ-মিছিল বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে জাবি কর্তৃপক্ষের এসব সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা যেকোনো শর্তে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলন বন্ধে প্রশাসনের কৌশলগত সব ধরনের পদক্ষেপের বিপরীতের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারীরা। তারা সেখানে ঘোষণা দিয়েছেন, আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করবেন। সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদী কনসার্ট করবেন। এছাড়াও ভিসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতির কাছে তার অপসারণের জন্য আবেদন জানাবেন।
ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জানিয়েছেন তারা হল ছাড়ার নির্দেশ মানছেন না। রাতে তারা হলে থাকার চেষ্টা করবেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) জাবি সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ জানিয়েছেন, ভিসি যেহেতু অবৈধ, ফলে তার প্রশাসনের সমস্ত সিদ্ধান্ত অবৈধ।
গত তিন মাস ধরে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভিসিকে মুক্ত করে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তবে এ ঘটনার প্রতিবাদে আবারো ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আন্দোলনকারী ও ভিসির অপসারণ দাবির বিরোধীরা বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থানে।