×

জাতীয়

যানজট নিরসনে শেখ মুজিব রোডে রিকশা বন্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:১৮ পিএম

নগরের ব্যস্ততম বিমানবন্দর সড়ক যানজট থেকে মুক্ত রাখতে দেওয়ানহাট মোড় থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় (শেখ মুজিব রোড) পর্যন্ত প্রায় ৪ কিমি সড়ক রিকশা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যানজট নিরসনে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ওই অংশে রিকশা চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে অনেকেই প্রশংসিত উদ্যোগ বললেও সুষ্ঠু গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে মালিক-শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ জানায়, শাহ আমানত সেতু থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কটিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান সড়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিমানবন্দরমুখী সড়কে ধীরগতির রিকশা যানজটের অন্যতম কারণ। এ সড়কের বিভিন্ন মোড়ে গণপরিবহনের দাঁড়িয়ে থাকাসহ নানা কারণে যানজট তৈরি হয়। এতে বিমানবন্দর অভিমুখী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এ ছাড়া ওই সড়ক ধরেই চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসেও যেতে হয়। তাই সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বুধবার (৬ নভেম্বর) থেকে দেওয়ানহাট মোড় বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিমানবন্দর সড়কের বিভিন্ন অংশে রিকশা চলাচল বন্ধ করা হবে।

সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ তারেক আহমেদ বলেন, যানজট নিরসনে রিকশা মালিক সমিতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এই সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করা হলেও চৌমুহনী মোড় ও বাদামতলী মোড়ের পূর্ব পশ্চিমে রাস্তা অতিক্রম করতে পারবে রিকশা। তবে মোড়ের একশ গজের মধ্যে কোনো যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। মূল সড়কের আশপাশের অলিগলিতে রিকশা চলাচলে কোনো বাধা নেই।

চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত বিমানযাত্রী আসা-যাওয়া করেন। কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে বহদ্দারহাট, জিইসি মোড়, দেওয়ানহাট ও আগ্রাবাদসহ আরো কয়েকটি মোড় পার হতে হয় যাত্রীদের। এসব মোড়ে নিত্যদিনের যানজটের পেছনে অন্যতম কারণ রিকশা। যানজটের কবলে পড়ে অনেক যাত্রী নির্ধারিত ফ্লাইট ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। জিইসি মোড় থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। স্বাভাবিক গতিতে যানবাহনের মাধ্যমে এ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। কিন্তু যানজটের কারণে এই রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগছে দুই থেকে চার ঘণ্টা।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, নগরীর এই প্রধান সড়কে ইতোপূর্বে একবার রিকশা চলাচল বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে বিমানবন্দর সড়কে অবশ্যই রিকশা চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন। দেওয়ানহাট-বারিক বিল্ডিং সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ রাখার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার সফল বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাও ঠিক রাখতে হবে। গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয় জরুরি।

রিকশা মালিক পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘আমরা ১৯৮৬ সাল থেকে সড়ক থেকে রিকশা তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। বর্তমানে ভিআইপি ওই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যানজট লেগে থাকার কারণে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানিয়ে রিকশা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, দেওয়ানহাট থেকে আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত প্রতিদিন ৪ হাজার রিকশা চলাচল করে। নগরীতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত রিকশা আছে ৭০ হাজার। তবে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে চট্টগ্রাম নগরীতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং লাইসেন্স ছাড়া ১ লাখ রিকশা চলাচল করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App