×

অর্থনীতি

ভাইরাসের টিকা আমদানির অনুমতি মেলেনি আজো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ১১:৪৮ এএম

ভাইরাসের টিকা আমদানির অনুমতি মেলেনি আজো

বার্ড ফ্লু (এইচ৯এন২) ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হচ্ছে প্রায় দুই বছর ধরে। সেই সঙ্গে দেশীয়ভাবে এ টিকা উৎপাদনের অনুমতিও চাওয়া হচ্ছে- কিন্তু অনুমতি মেলেনি আজো। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এইচ৯এন২ ভাইরাসের সংক্রমণে পোল্ট্রি উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। খামারিরা বাধ্য হয়েই এন্টিবায়োটিকের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। প্রতিষেধক টিকা আমদানির অনুমতি এবং দেশীয়ভাবে টিকা উৎপাদনে ওষুধ কোম্পানিগুলোকে অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের পর দেশের কোথাও বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১) ভাইরাস আক্রমণের খবর মেলেনি। তবে এবার এই ভাইরাসে মুরগির খামারগুলো বিপর্যয়ে পড়েছে। বার্ড ফ্লু আক্রান্ত মুরগি নিধন ও ক্ষতিপূরণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তৎপর হলেও এ রোগের প্রতিষেধক টিকা তৈরির কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি দেশে এ টিকা আমদানির অনুমতিও দেয়া হচ্ছে না। ফলে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার এ শিল্প ধ্বংসের পথে। এ অবস্থায় সরকার সম্প্রতি পোল্ট্রি ফিড হিসেবে ব্যবহৃত প্রোটিন ‘মিট এন্ড বোন মিল’-এর আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে।

টাঙ্গাইলের ভূয়াপুরের সালগাইর গ্রামের এস এম পোল্ট্রির মালিক আলমগীর হোসেন স্বপন ভোরের কাগজকে বলেন, গত কয়েক মাসে এ এলাকার খামারিদের প্রায় দুই কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। তিনি বলেন, বার্ড ফ্লু রোগের টিকা বিদেশে পাওয়া গেলেও সরকার নিয়ে আসার অনুমতি দিচ্ছে না। আর দেশেও এ রোগের টিকা তৈরি করা হচ্ছে না। গাজীপুরের খামারি আরিফুল ইসলাম বলেন, বার্ড ফ্লু (এইচ৯এন২) ভাইরাসের পাশাপাশি সম্প্রতি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে কলেরা রোগে খামার দ্বিতীয় দফায় ধ্বংস হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, কয়েক বছর ধরে শীত ও গরম শুরু হওয়ার এ সময়টায় বার্ড ফ্লু (এইচ৯এন২) রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। সরকার এ রোগের টিকা আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েও অনুমতি দিচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি ‘পোল্ট্রি বোর্ড’ গঠন করতে হবে। পোল্ট্রি খাতকে কৃষি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আমদানি শুল্ক কমানো ও খামারিদের ভর্তুকি দিতে হবে।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক ভোরের কাগজকে বলেন, বার্ড ফ্লুর টিকা আমদানির ক্ষেত্রে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কারণ নতুন একটি টিকা প্রথমবারের মতো আনার ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখতে হয় দেশের আবহাওয়া উপযোগী কিনা। অন্য প্রাণীদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে কিনা। যদি পরীক্ষায় ক্ষতিকর না হয়, তাহলে শিগগিরই আমদানির অনুমতি দেয়া হবে।

জানা যায়, সাভারে বাংলাদেশ বিমানের হ্যাচারিতে ২০০৭ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (বার্ড ফ্লু) ধরা পড়ে। বার্ড ফ্লু এক ধরনের জ্বর। কিন্তু এ জ্বরটির জন্য দায়ী এক ধরনের ভাইরাস, যার নাম এইচ৫এন১। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হাঁস-মুরগি থেকে ভাইরাসটি মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App