×

জাতীয়

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আটকে আছে কার্যক্রম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৪০ এএম

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আটকে আছে কার্যক্রম

জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ায় সহসাই চালু হচ্ছে না দগ্ধ ফায়ারম্যানদের চিকিৎসার জন্য নির্মিত ৫০ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল। দুই বছর আগে এ হাসপাতালটি চালুর কথা থাকলেও আরো কত সময় লাগতে পারে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। ওদিকে নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় হাসপাতালের জন্য কেনা যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের পাশেই ১০ তলা এ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তবে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় হাসপতালের কার্যক্রম কবে চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মিরপুুর ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের একটি ভবন ভেঙে ফেলায় অফিসিয়াল কার্যক্রম চালাতে ব্যাঘাত ঘটায় হাসপাতাল ভবনেই চলছে দাপ্তরিক কার্যক্রম। তবে এডিবির অর্থায়নে নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানেই মূলত অফিসিয়াল কার্যক্রম চালানো হবে। ওই ভবনটি এখনো বুঝিয়ে দেয়া হয়নি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন ভোরের কাগজকে বলেন, হাসপাতালের জন্য জনবল নিয়োগ এখনো হয়নি, নিয়োগ প্রক্রিয়া সরকারি ফাইলবন্দি হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী বলে দেয়ার পরও কাজ এগোচ্ছে না। তিনি বলেন, হাসপাতালের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু ডাক্তার, নার্সসহ স্টাফ নিয়োগ হয়নি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে চালু না হওয়ায় হাসপাতালের জন্য কেনা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের নতুন হেডকোয়ার্টার হবে। সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ট্রেনিং সেন্টারের একটি ভবন ভেঙে ফেলায় আপাতত হাসপাতাল ভবনের এক দুটি কক্ষে দাপ্তরিক কর্মক্রম চলছে। এটা এমন কিছু নয়।

জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ফায়ারম্যানদের জন্য মিরপুর ট্রেনিং সেন্টারে ২০ বেডের একটি বার্ন হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা হয় ২০০৯ সালে। পরে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। ২০১১-২০১৬ সালের মধ্যে হাসপাতালটি নির্মাণ ও সরঞ্জাম কেনা সম্পন্ন হয়। হাসপাতালটিতে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রধান কনসালট্যান্টসহ ১৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, যে কোনো দুর্যোগে প্রথম সাড়া দানকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে তারা স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলে যেতে সময় নেন মাত্র ২০ মিনিট। খবর পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ফায়ারম্যানরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামেন। আগুন নেভাতে গিয়ে যখন ফায়ারম্যানরা দগ্ধ হন তখন দেখা যায় দ্রুত তাদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া প্রায়ই দেখা যায় দুর্যোগে সাড়া দিতে ও মানুষের জানমাল রক্ষা করতে গিয়ে দগ্ধ কিংবা গুরুতর আহত ফায়ারম্যানদের নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে গেলে সিটের অভাবে তাদের সুচিকিৎসা হচ্ছে না। এসব কারণে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলা বিশিষ্ট এ বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।

এ হাসপাতালে যে কেবল ফায়ারম্যানদের চিকিৎসা হবে তা নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও ১০টি সিট নিয়মিত বরাদ্দ থাকবে। সিট খালি থাকা সাপেক্ষে এর চেয়েও বেশি সাধারণ মানুষকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। পোড়া চিকিৎসা ছাড়াও সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থাও থাকবে এ হাসপাতালে। তিনটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও উন্নত প্যাথলজি ব্যবস্থাও থাকবে হাসপাতালটিতে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App