×

জাতীয়

বদলে যাচ্ছে মুগদা-মাণ্ডার যোগাযোগ ব্যবস্থা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৫৭ এএম

বদলে যাচ্ছে মুগদা-মাণ্ডার যোগাযোগ ব্যবস্থা

রাজধানীর মাণ্ডাব্রিজ থেকে আমিন মোহাম্মদ হাউজিংয়ের ব্রিজ পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে সরকারি জমি দখল করা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ভোগদখলকারীরা নিজ উদ্যোগে ৬০ ফিট রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজের জন্য সহযোগিতা করছেন। গতকাল তোলা ছবি -মাসুদ পারভেজ আনিস

বদলে যাচ্ছে রাজধানীর মুগদা-মাণ্ডার যোগাযোগ ব্যবস্থা। মান্ডার প্রধান ব্রিজ থেকে আমিন মোহাম্মদ ব্রিজ পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার দীর্ঘ সরু রাস্তা ভেঙে ৬০ ফিট চওড়া করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রাস্তার সঙ্গে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত। রাস্তাটি তৈরি হলে মাণ্ডা এলাকার চেহারাই বদলে যাবে। ‘মাণ্ডা মূল সড়ক প্রশস্তকরণ’ নামের এই প্রকল্পের কাজ গত সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। বর্তমানে রাস্তার দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে নিজ খরচে রাস্তার দুপাশের সরকারি জমিতে থাকা সব স্থাপনা ভাঙার কাজ করছেন। ফলে কোনো বাড়ির মালিককে সরকারের ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ স্থাপনা অপসারণের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি স্থাপনা ভাঙার কাজ শেষ হলে রাস্তা তৈরির মূল কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে মাণ্ডা মূল সড়কের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, মাণ্ডা ইউনিয়ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় আসার পর এলাকাটিকে ৭১ ও ৭২ নং ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়। এরপরই অবহেলিত মাণ্ডা এলাকার উন্নয়নে দৃষ্টি দেন ঢাকা-৯ আসনের সাংসদ এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। তার সুপারিশে ৬০ ফিট চওড়া রাস্তা তৈরির কাজটি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৮ কোটি টাকায় তৈরি হবে চারটি ব্রিজ এবং ১১ কোটি টাকায় উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ফুটপাতসহ ৬০ ফিট প্রস্থ ও সোয়া ২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা তৈরি করা হবে। খুব শিগগিরই রাস্তা সংস্কারের এ কাজের সুফল ভোগ করবে মাণ্ডাবাসী। সম্প্রতি সরেজমিনে মাণ্ডা এলাকায় দেখা যায়, রাস্তার দুপাশে সরকারি জমিতে সব ধরনের স্থাপনা ভাঙার বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। বিভিন্ন বাসাবাড়ি, অফিস, দোকান মালিক নিজেরা উদ্যোগী হয়ে নিজ খরচে শ্রমিক দিয়ে স্থাপনা ভাঙার কাজ করছেন। এ নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ কিংবা আক্ষেপও নেই। মাণ্ডা ২০৪২ নম্বর বাড়ির মালিক মো. রনি ভোরের কাগজকে বলেন, সরকারের জায়গা সরকার নিয়ে গিয়ে এলাকার রাস্তা চওড়া করে দিচ্ছে, এতে আমরা এলাকাবাসীই লাভবান হব। এ নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে খাস জমিতে বাড়ির যে অংশটি পড়েছে সে অংশ নিজেরাই ভেঙে দিচ্ছি। আগে ২০ ফিট রাস্তা ছিল, এখন ৬০ ফিট চওড়া হচ্ছে। পাশের বাড়ির মালিক রাসেল মিয়া বলেন, গত মাসে স্থানীয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী এসে বলেছেন, রাস্তার উন্নয়নের জন্য সরকারি খাস জমি ছেড়ে দিতে। আমরা নিজ উদ্যোগে ভবন ভেঙে জায়গা খালি করে দিচ্ছি। রাস্তা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এলাকার সবাই লাভবান হবে। ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. জমশের আলী বলেন, মাণ্ডার প্রধান সড়কটি সরু। মানুষের চলাচলে অসুবিধা হয়। এই রাস্তাটি ৬০ ফিট চওড়া হলে এলাকার চেহারাই বদলে যাবে। এলাকার উন্নয়নে সবাই স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে খাস জমিতে থাকা নিজ নিজ বাড়ির অংশ ভেঙে দিচ্ছে। এতে কারো কোনো অভিযোগ নেই। সরকারেরও কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না। উল্লেখ্য, শুধু মাণ্ডা মূল সড়কই নয়, স্থানীয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর সুপারিশে ওই এলাকার ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডে আরো ৪টি রাস্তা ৬০ ফিট চওড়া করবে রাজউক। রাস্তাগুলো হলো- ৬ নং ওয়ার্ডে মানিকনগর বিশ্বরোড থেকে মানিকনগর মডেল স্কুল পর্যন্ত ও মুগদা বিশ্বরোড থেকে মাণ্ডা ব্রিজ পর্যন্ত ৬০ ফিট রাস্তা এবং ৭ নং ওয়ার্ডে সবুজবাগ বৌদ্ধ মন্দির থেকে রাজারবাগ কালীমন্দির পর্যন্ত এবং বাসাবো বিশ^রোড থেকে মাদারটেক হয়ে নন্দীপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত। ইতোমধ্যেই এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাহার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App