×

জাতীয়

চুরি হওয়া সন্তান ৬ মাস পর ফিরে পেলেন মা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৯, ১১:১৫ এএম

চুরি হওয়া সন্তান ৬ মাস পর ফিরে পেলেন মা
দরিদ্র ভাসমান নারীর শিশু সন্তান চুরির একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এসব শিশু সন্তান চুরি করে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে লাখ টাকা বিক্রি এবং বিক্রির সময় চুরির তথ্য গোপন করতে ওই শিশুকে মৃত আত্মীয়স্বজনের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেয়া হতো বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত পাঁচ মাস আগে নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে এক ভিক্ষুকের ছেলেশিশু চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পেয়ে এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন এই চক্রের মূলহোতা মো. আফসার ওরফে জাফর সাদেক (৩৫), চুরি করা শিশু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পারভীন আক্তার (৩৫) এবং নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতাল ও সিগমা ল্যাবে কর্মরত রেডিওলজি বিভাগের টেকনোলজিস্ট সুজিত কুমার নাথ (৪৫)। গতকাল রবিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের জানান, এ পর্যন্ত আফসার ৭-৮টি বাচ্চা চুরি করেছে। প্রতিটি বাচ্চা বিক্রি করে সে ১০ হাজার টাকা করে পেয়েছে। বাচ্চা চুরি করে ইকবাল ও আফসার নামের দুজন। এরপর শিশুকে পারভীনের হেফাজতে রাখে তারা। এদিকে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গত ২৭ মে নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় দুই মাসের শিশু নিয়ে ভিক্ষা করছিলেন শেফালী বেগম নামে এক নারী। এক যুবক তাদের ভালো পোশাক কিনে দেয়ার কথা বলে রিয়াজউদ্দিন বাজারে নিয়ে যান। সেখান থেকে কৌশলে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় শেফালী ২৮ মে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, চলতি বছরের আগস্টে ইপিজেড থানায় একটি শিশু চুরির মামলায় মো. ইকবাল হোসেন (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। কোতোয়ালি থানার মামলায় ইকবালকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে শেফালীর বাচ্চা চুরির বিষয়টি স্বীকার করে ও আদালতে জবানবন্দি দেয়। ইকবাল জানায়, সে এবং আফসার দুজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় থাকে। রোগীর রক্ত লাগলে কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তারা টাকার বিনিময়ে সহযোগিতা করে। আফসার ফার্মেসি থেকে ওষুধও সরবরাহ করে এবং রাতে ব্লাড ব্যাংকের নিচে ঘুমায়। আট মাস আগে আফসারসহ সংঘবদ্ধ চক্র মিলে ইপিজেড এলাকায় এক নারীকে জুস খাইয়ে তার বাচ্চা চুরি করে বিক্রি করে। এরপর কাজীর দেউড়ি থেকে শেফালী বেগমকে রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় নিয়ে তার বাচ্চাও চুরি করা হয়। ওই মামলা তদন্তের সূত্রে গত শনিবার বিকেলে কক্সবাজারের কলাতলী থেকে প্রথমে আফসার এবং পরবর্তী সময়ে নগরীর মেহেদীবাগে ন্যাশনাল হাসপাতালের সামনে থেকে সুজিত এবং নগরীর অক্সিজেন এলাকার সৈয়দপাড়ার এক বাসা থেকে পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী নগরীর দামপাড়ায় পল্টন রোডে জনৈক পবন কান্তি নাথের বাসা থেকে চুরি যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ওসি মহসীন জানান, নিঃসন্তান পবন কান্তি নাথ এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় আফসারের কাছ থেকে বাচ্চাটি কিনে নিয়েছিলেন। বাচ্চাটি দত্তক নেয়ার সময় আফসারের সঙ্গে ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে পবনের চুক্তিও হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App