×

জাতীয়

সাহস ছিল বলেই ২০১২তে মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করেছি: মেনন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:৪৮ পিএম

সাহস ছিল বলেই ২০১২তে মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করেছি: মেনন
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, ‘মন্ত্রিত্ব পাইনি বলে ক্ষোভ আমি নাকি ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট কারচুপির কথা বলছি। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাসহ দলের অনেকেই এখন আমাকে এসব কথা বলছেন। কিন্তু, আমি বলতে চাই, ওয়ার্কার্স পার্টির সেই সাহস ছিল বলেই ২০১২ সালে মন্ত্রিত্বের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছি। এরপর যখন বিএনপি-জামায়াত জোটের তাণ্ডব শুরু হয়েছে, তখন রাজনৈতিক প্রয়োজনে ওয়ার্কার্স পার্টি মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেছিল। এটা ছিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, কারও একক সিদ্ধান্ত নয়’। আজ শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ১০ম কংগ্রেসের শুভ সুচনা করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস উদ্বোধন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। চার দিন ব্যাপী এ কংগ্রেসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী এই বাম দলের পরবর্তী নীতি-কৌশল যেমন ঠিক হবে, তেমনি নতুন নেতৃত্বও গঠিত হবে। যদিও পার্টির নীতি-আদর্শের প্রশ্নে একদল কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্যদের কংগ্রেস বর্জনের মধ্যে শুরু হল রাশেদ খান মেনন নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টির দশম কংগ্রেস। তবে এই কংগ্রেসের আগেই দলটিতে দেখা দিয়েছে ভাঙনও নানা বিতর্ক। নীতি আদর্শের সঙ্গে দ্বৈততা ঘোষণা করে দল ছেড়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস। আদর্শচ্যুতির অভিযোগ তুলে কংগ্রেস বর্জন করে আলাদা দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন আরও ছয়জন কেন্দ্রীয় নেতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেন, ওয়ার্কার্স পাটি জানে কীভাবে রাজনীতি করতে হয়, কীভাবে দেশ এগিয়ে নিতে হয়। অনেক বন্ধু আমাদের ছেড়ে গিয়েছেন। কেউ মতাদর্শের কথা বলে সরে গেছেন, কেউ সরে গেছেন এনজিওর ফান্ড রক্ষা করতে। আবার কেউ আমাদের নৌকায় তুলে দিয়ে এখন বলছেন, নৌকা মানতে চাই না। তিনি বলেন, আজও কেউ কেউ সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আমি তাদের বলতে চাই, ওয়ার্কার্স পার্টি বাংলাদেশে একমাত্র প্রাসঙ্গিক দল। ওয়ার্কার্স পার্টির পর কোনো প্রাসঙ্গিক বামপন্থি দল বাংলাদেশে নেই। আজ আমি না থাকলে ওয়ার্কার্স পার্টির কমরেডরাই এই লড়াই এগিয়ে নেবেন ও বিজয় অর্জন করবেন। মেনন বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনে অনেক খেতাব কপালে জুটেছে। কখনো সাম্প্রদাযয়িকতার, কখনো নাস্তিকের, কখনো খেতাব জুটেছে আমি হঠকারী, বিচ্ছিন্নতাবাদী। কিন্তু, তারপরেও আমি লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। এখনো দেশে যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চলছে, আমি যেহেতু ঢাকা-৮ আসনের এমপি, সেই আসন জুড়ে যখন ক্যাসিনো নিয়ে তোলপাড়, সেই ক্যাসিনোকা-ের সঙ্গে আমাকে জুড়ে দিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। আমি বলে দিতে চাই, আমার জীবনে সততার পরীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আমি সৎ ছিলাম, আছি। তিনি বলেন, দেশ আজ উন্নত হচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু, বাংলাদেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্য বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। দেশের দুই শতাংশ মানুষ মোট সম্পদের ৩৩ শতাংশ দখল করে রেখেছে। বাংলাদেশের প্রতি চারজনের একজন অতিদরিদ্র। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমরা কারও ঘাড়ে হাত রেখে রাজনীতি করব না। কারও ছায়াতলে আমরা রাজনীতি করব না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজস্ব সংগ্রাম ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে রাজনীতি করব। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল যে ২৩ দফা দাবির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল, তা কতটা সফল হয়েছে তা পর্যালোচনার সময় এসে গেছে বলেও মন্তব্য করেন বাদশা। তিনি বলেন, আমরা ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এই কর্মসূচি হচ্ছে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি। এই ২১ দফা নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, নূর আহমেদ বকুল, সুশান্ত দাস, হাজেরা সুলতানা, মাহমুদুল হাসান মানিক, কামরুল আহসান, ইনামুল হক ইমরান, ড. আমিনুল ইসলাম গোলাপ প্রমুখ। এবারের কংগ্রেসে ৫৮টি জেলা থেকে সাড়ে ৭০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এর আগে ২০০৮ সালের ৭ অগাস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নবম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App