×

জাতীয়

দিয়াজ হত্যায় জি কে শামীম সম্পৃক্ত কিনা তদন্তের নির্দেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৯, ১১:২৯ এএম

দিয়াজ হত্যায় জি কে শামীম সম্পৃক্ত কিনা তদন্তের নির্দেশ
ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক ও চবির শিক্ষার্থী দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যার সঙ্গে সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমের সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলম। নিহত দিয়াজের মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিকে নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল মনসুর। পাশাপাশি তিনি জানান, দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলার আসামি চবি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বিদেশে চলে যাওয়ার জন্য চবি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। অথচ ২০১৭ সালের ৮ জুলাই আদালত থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামিদের পাসপোর্ট জব্দসহ তাদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। এসব বিষয় জানতে পেরে নিহত দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের কাছে আনোয়ার হোসেনের ছুটি মঞ্জুর না করার জন্য আবেদন করেন। তবে এ ব্যাপারে চবি কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চবি সূত্রে জানা গেছে, ওমরা হজ পালনের জন্য সম্প্রতি আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে জানার জন্য চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে দিয়াজ হত্যা মামলার আইনজীবী আবুল মনসুর জানিয়েছেন, চবি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। চবির সাবেক বিতর্কিত উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর অত্যন্ত প্রিয়পাত্র হিসেবে পরিচিত সমাজতত্ত¡ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সে সময় চবির সহকারী প্রক্টরও ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলায় তিনি অন্যতম আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়ে জেলেও ছিলেন। সাময়িক বরখাস্তও হন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিন্তু আবার সাবেক উপচার্যের স্নেহধন্য ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চাকরি ফিরে পান নানা কৌশলে। ২০১৬ সালের নভেম্বরের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জি কে বির্ল্ডাস লিমিটেড (জেভি)। সে বছর ২০ নভেম্বর রাতে চবির দুই নম্বর গেট এলাকার নিজ বাসায় শয়নকক্ষে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল মনসুর ভোরের কাগজকে বলেন, ‘৭৫ কোটি টাকার ওই কাজটি পাইয়ে দিতেই দিয়াজকে হত্যা করা হয় বলে তখন এবং সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ওই কাজের ওয়ার্ক অর্ডারটি (কার্যাদেশ) গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমের নামে। তাই বাদী মনে করছেন এই ঘটনায় তিনি জড়িত। তাকে মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আদালতে আবেদন করেছি।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার বাদী দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। দিয়াজের মৃত্যুর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই নতুন কলা ভবনের নির্মাণকাজের দরপত্রসহ কয়েকটি বিষয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ করে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেছিল। চবি ছাত্রলীগে দিয়াজ ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। ওই ঠিকাদারির কাজ সংশ্লিষ্ট একটি চেক দিয়াজ পেয়েছিলেন বলে তার মৃত্যুর পর চবি ক্যাম্পাসে গুঞ্জন ছিল। তবে সেই চেক তিনি নগদায়ন করতে পারেননি বলেও জানিয়েছিলেন তার ভগ্নিপতি। দিয়াজের মায়ের করা হত্যা মামলার আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি (বর্তমানে কমিটি স্থগিত) আলমগীর টিপু, কর্মী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরোব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান। এদের সবার পাসপোর্ট জব্দ করাসহ বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App