×

মুক্তচিন্তা

আইনের যথাযথ প্রয়োগেই অপরাধ দমন সম্ভব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম

প্রতিদিনই রাজধানীতে হত্যার ঘটনা ঘটছে। একটির পর একটি হত্যাকাণ্ড মানুষের নিরাপত্তাজনিত উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাট থেকে বাড়ির মালিক ও তার গৃহকর্মীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা যায়, নতুন একজন গৃহকর্মী ওই বাসায় শুক্রবার যোগ দেয়। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহকর্মী পলাতক রয়েছে। জোড়া খুনের এ ঘটনায় বাসার নতুন গৃহকর্মীকে সন্দেহ করছে পুলিশ। সংঘবদ্ধ কোনো চক্র এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। প্রশ্ন হলো, দেশে খুন-খারাবি বেড়ে যাওয়ার কারণ কী? এক কথায় এর জবাব হলো, বিচারহীনতা। আমাদের চাওয়া, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডেরই সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে এবং আইনের আওতায় আনতে হবে অপরাধীদের। গত এক মাসে ঢাকাসহ সারাদেশে গলা কেটে খুন করার শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা অবনতির দৃষ্টান্তই নয়, সামাজিক অসুস্থতারও লক্ষণ। সম্প্রতি নারী ও শিশু-কিশোর নির্যাতন-খুনের বেশকিছু ঘটনা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আরো লক্ষণীয় বিষয় হলো, এসব ঘটনা যেভাবে ঘটানো হচ্ছে তার ধরন। সুস্থ মানবিক বোধ সম্পন্ন কেউ এ রকম নৃশংসতা প্রদর্শন করতে পারে না। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের মানবিক অনুভূতি দিন দিন লোপ পাচ্ছে। মানুষের মনে দানা বাঁধছে হিংস্রতা। তাই হত্যার পরও জিঘাংসা মেটাতে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়া ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। ভোগবাদী হয়ে উঠছে মানুষ। কমছে মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ। এ কারণে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে একে-অপরকে নৃশংসভাবে খুন করতে দ্বিধা করছে না। যাই হোক, এই পরিস্থিতির অবসান, এই সামাজিক ব্যাধির নিরাময় দরকার দ্রুত। সাধারণভাবে খুন-খারাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই নির্দেশ করে। দেশে আইনের শাসন, অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা বলবৎ থাকলে অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকারই কথা। আমাদের দেশে এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে তা স্বীকার করতেই হবে। অনেক আলোচিত-চাঞ্চল্যকর হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা বিচারহীন থাকছে দিনের পর দিন। অপরাধীরা নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে লঘু দণ্ডে পার পেয়ে যেতে পারছে। নাগরিকদের রক্ষা করাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত তার রহস্য উদ্ঘাটন করা এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় কারা কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তার তালিকা নিশ্চয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে রয়েছে। এ তালিকা ধরে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আর সামাজিক অপরাধপ্রবণতা রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক প্রতিরোধও দরকার। সামাজিক অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতার কারণ অনুসন্ধান ও তা দূরীকরণে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। দরকার পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে মানবিক মূল্যবোধের চর্চা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App