×

মুক্তচিন্তা

ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৪৯ পিএম

ধর্মঘটে অচল অবস্থা বিরাজ করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। দুর্নীতির অভিযোগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। ফলে স্থবির রয়েছে সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম। অধিকাংশ বিভাগে নির্ধারিত ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এমতাবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এটা প্রশমন করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের ফের সেশনজটের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উত্তপ্ত ক্যাম্পাস শান্ত করতে সব পক্ষকে যৌক্তিক অবস্থানে থেকে দ্রুত সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়নের বিশেষ প্রকল্পে দুর্নীতি ও এর মাস্টারপ্ল্যানের গ্রহণযোগ্যতা। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম উন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি দেয়া এবং তার স্বামী ও ছেলেও এই দুর্নীতি সঙ্গে জড়িত বলে জাবি ছাত্রলীগের নেতারা সরাসরি অভিযোগ করছেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ফারজানা ইসলাম। দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে দুই মাসের অধিক সময় ধরে চলা এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যথাযথভাবে তদন্তের দাবি উঠলেও ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা আচার্যের কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হয়নি। তাদের এই নীরবতা দুঃখজনক। যদি প্রথম থেকেই এর তদন্ত করা হতো এবং এর সত্য-মিথ্যা বের করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন অস্থিরতা সৃষ্টি হতো না। প্রচলিত আইন অনুসারে দেশের রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুধু রাষ্ট্রপতির দপ্তরকে সাচিবিক কাজগুলো করে দেয়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা নিরসনের দায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপরই বর্তায়। অথচ উচ্চশিক্ষায় এ জাতীয় অস্থিরতা বিরাজ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এখনো নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, তা সমাধানের দায়িত্ব মূলত প্রশাসনের ওপরই বর্তায়। ক্যাম্পাসে এ রকম পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজে অথবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে সমাধান সূত্র বের করা উচিত। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চাওয়া বা দাবিগুলো শুনতে হবে এবং যতদূর সম্ভব যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের আস্থায় নিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যায়, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমরা আশা করব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত অচলাবস্থার অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। শিক্ষাঙ্গনে এমন অস্থিরতা আমরা আর দেখতে চাই না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App