×

সাময়িকী

আশ্রয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:১১ পিএম

আশ্রয়

জানালার শার্সিতে বাতাস-বৃষ্টির বড় একটা ঝাপটায় ঘুম ভেঙে যায় রিয়ার। ধড়মড় করে উঠে বসে ও। বাতি জ্বালে। ছোটে জানালার দিকে ছোটে। জানালাটা লক করা ছিল বলে মনে পড়ে। এখন কিছুটা খোলা। আজকালের লকগুলোর কোনো গ্যারান্টি নেই। অল্পতেই নড়বড়ে হয়ে যায়। থাই গ্লাস বাতাসের ঝাপটায় সরতে সরতে অনেকটাই সরে গেছে। বৃষ্টির তুমুল ছাঁট ভিজিয়ে দিয়েছে তোশকের অনেকটা, চাদর, কাঁথা আর বেশ কিছু বই, কাগজ। বিছনায় বইপত্র রাখা অভ্যাস ওর। জোরে দুলছে জানালায় ঝোলানো মানিপ্লান্ট। তার বেশ কিছু শুকনো পাতা খসে ছুটছে ঘরময়। একটা বড় অর্কিড জানালার ভেতর দিক দিয়ে ছাদের কাছাকাছি উঠেছে। সেটা হেলে পড়েছে। ভাগ্যিস কদিন আগে রিয়া বুদ্ধি করে জানালার পর্দার রডের ভেতর দিয়ে ঊর্ধ্বমুখী করেছিল। তাই আটকে আছে। কে জানে মাঝে কোথাও ভেঙে গেছে কিনা! ভাবতে ভাবতে জানালা আটকাবার আগেই আর একটা জোর ধাক্কা আসে। সে ধাক্কায় গ্লাস সরে যায় আরো খানিকটা। বাড়ি খায় মুখোমুখি পরপর দুটো দরজা। এমন জোরে বাড়ি খায় যে ভেঙে গেছে বলে মনে হয়। রিয়া জানালা আটকাবে না দরজা সামলাবে! ও জানালাই আটকায় আগে। তারপর দরজায় এসে দেখে ভেঙেছে কিনা। মনে হচ্ছে ভাঙেনি, তবে দুদিন পরে বোঝা যাবে আসলে কী হয়েছে। অসুখ হলে আস্তে আস্তে প্রকোপ বাড়ে। এটাও তেমন। পাতাগুলো কুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে। তোশকের জন্য মন খারাপ হয়। এখন এটা শুকাবে কী করে? এ বাড়ির ছাড় ব্যবহার নিষেধ। খোলা ছাদে নাকি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরা প্রেম আর অনৈতিক কাজ করবে। কিংবা কেউ মানুষ খুন করে পানির ট্যাংকে ফেলে দেবে। বারান্দায় ভুলেও কখনো এক চিলতে রোদ আসে না। এখন উপায়। বেশ ভিজেছে। এ তো আর শাড়ি, জামা, গামছা নয় যে চেয়ারের ওপরে ফেলে রাখবে আর শুকিয়ে যাবে। এমনও নয় যে, বাচ্চার কাঁথা কাপড়ের মতো চুলোর ওপর দড়ি টানিয়ে শুকাবে। পচে যাবে নির্ঘাত। যেখানে রোদের অভাবে আচার পচে ছাতা পড়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন, সেখানে তোশক বাঁচানোর উপায় নেই। আর পচলে যে শুধু তোশক যাবে তা তো না, এটাকে সে ফেলবে কোথায়! হায়রে ঢাকা শহর! যে শহরের পুরোটাই ডাস্টবিন, সেখানে বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা নেই। কিছু কিছু এলাকায় মেয়র সাহেবরা বাক্স টানিয়ে দিয়েছেন। রিয়ার এলাকায় সেগুলো নেই। আর থাকলে কি তাতে তোশক ঢুকবে! তাকে এই তোশক নিয়ে বোধহয় গুলিস্তান পার হয়ে যে ময়লা ফেলার জায়গা আছে ওখানে যেতে হবে! যাবে কী করে, ওর তো গাড়িও নেই। দু-একবার ও রাস্তা দিয়ে গিয়েছে রিয়া। নাকে কাপড় চেপেও দুর্গন্ধ আটকাতে পারেনি। একদিন রিকশায় মাছি ওকে ছেঁকে ধরেছিল। ও একটা মৌচাক হয়ে গিয়েছিল। কষ্টে তোশকটা মেঝেতে নামায় রিয়া। ছোট ঘরের অনেকটাই ভিজে গেছে। শুকনো জায়গাটায় তোশকটা রেখে ফ্যান ছাড়ে পুরোদমে। আর একবার দেখতে বেরোয় কোন দরজা-জানালা খোলা বা কোথাও ফাঁকফোকর আছে কিনা। সারা বাড়ি ঘুরে আর ডাইনিং স্পেসের পাশে থাই গ্লাসে ঢাকা বারান্দার সামনে এসে থমকে দাঁড়ায়। দুধের সরের মতো বৃষ্টির আস্তর পড়েছে গ্লাসের গায়ে। কোথাও কোথাও চুইয়ে চুইয়ে নামছে সে সর। সে সর ডিঙিয়ে বাইরের কিছুই দেখা যায় না। শুধু শোনা যায় বৃষ্টি পতনের নূপুর নির্ঝর। সে শব্দে কেমন যেন এক ঘোর লাগে রিয়ার। ও ঘরে ঢুকে বাতি নিভিয়ে শোয়। অনেকগুলো বৃষ্টি মাতাল দিন-রাত আর একটি মুখ বারবার ভাসে আর ডোবে, ডোবে আর ভাসে। স্রোতের আগায় গাঁদাফুলের মতো। ক্রমে এক স্বপ্নাচ্ছন্নতায় ডুবে যায়। যেন আস্তে আস্তে বাথটাবে ডুবে যাচ্ছে। শরীরে বৃষ্টির ঢল নামে। আহা বৃষ্টি, আহা বৃষ্টিভেজা স্মৃতিমেদুর মুখ! সকালের প্রকৃতি বৃষ্টিস্নাত, ভিজে, স্নিগ্ধ। রিয়া দ্রুত তৈরি হয়। অফিস বেশ দূরে। পথে নিশ্চয়ই কাদা পানি জমেছে, যানবাহন কমেছে, খোঁড়াখুঁড়িরও অন্ত নেই। ঢাকায় এখন মাটিতে পানি পড়ার আগেই ফুটপাত ডোবে। বড় রাস্তায় রাস্তায় নৌকা চলে। অচিরেই ভেঁপু বাজিয়ে লঞ্চ চলবে। কপালে ভাঁজ পড়ে। বস লোকটার বিবেচনা কম। শাড়ি পরা চলবে না, তাড়াতাড়ি সালোয়ার-কামিজ খোঁজে। তাড়াতাড়ির সময় কোনো কিছুই পাওয়া যায় না সহজে! চিরুনি টানতে গিয়ে লিপস্টিক পড়ে, সেটা তুলতে গিয়ে গ্লাসের ঢাকনা পড়ে। অসহ্য। তখনই বেজে ওঠে ফোন। এটা চিরাচরিত নিয়ম। যখন রিয়ার ব্যস্ততা ফোন তখন বাজবেই, রাস্তায় সিগন্যাল পড়বেই অথবা সামনে পড়বে বিকল গাড়ি কিংবা বাঁশ বোঝাই ঠেলা। নিদেনপক্ষে নাতির হাত ধরে পার হবে কোনো অন্ধ ভিখিরি। ভাগ্যের সাথে এই লড়াইটা বরাবরের। ও ফোন ধরে না। দরকার হলে আবার করবে! দ্রুত দরজা লক করে। লিফট আসতে দেরি হবে নির্ঘাত। মাঝপথে আটকাতেও পারে। আজ দেরি হলো না। থম ধরে আছে আকাশ। বিনা দরদামে একটা রিকশা ধরল। এখন অনেকটা সময় ওর নিজের। এমন বৃষ্টির দিন একসময় কত আরাধ্যই না ছিল। তেলমাখা মুড়ি, গরম চা আর মায়ের হাতের ভাজাভুজিতে কী জমেই না যেত! খিচুড়ি, ডিম, বেগুন ভাজিতে বাড়ি হয়ে উঠত উৎসবের। আব্বা সরকারি চাকরি করতেন, বেতন কম ছিল। এত বাহুল্য ছিল না জীবনে। কম পেয়ে খুশি হবার বোধটা ছিল। রাতে হালকা শীত নামত, কুয়াশা মিশলে শীত বাড়ত। দুবোন এককাঁথা নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ হতো। মাকে এসে সে যুদ্ধ মিটাতে হতো। বোনটা এখন দূরদেশে। ওর বাড়ি, রিমার বাড়িতে দামি দামি নকশি কাঁথার ছড়াছড়ি। দেশ থেকে যারা যায় ওর জন্য কাঁথা নিয়ে যায়। টানাটানি তো দূরের কথা, বোনকে কাছেই পায় না রিয়া। আচ্ছা রিমা কি এখন কাঁথা গায় দেয়! সেই সুখ কি পায় যা সেই সামান্য পুরনো কাঁথায় পেত! রিমার আগে বিয়ে হয়ে গেল। ওর কোনো দোষ ছিল না। অনেকদিন অপেক্ষা করেছিল। বরং রিয়াই বারবার ওকে চাপ দিচ্ছিল বিয়ে করতে। শেষাবধি যখন রিমার ভালোবাসার মানুষ শিপার আমেরিকা চলে যাচ্ছে বিয়ে না করে কোনো উপায় ছিল না ওর। আর ও বিয়ে করাতে বেঁচে গিয়েছিল রিয়া। ‘আমার দুটো মেয়ের একটারও বিয়ে হলো না’ মার এই আক্ষেপ রিমার বিয়ের পর কমে গিয়েছিল। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল রিয়া। নিজের মনের মতো করে ঘর সাজিয়ে নিয়েছে রিয়া। ভাড়া থাকে, তাতে কী। যখন যেখানে থাকছে সেটাই তো নিজের বাড়ি, নিজের ঘর। রুচিশীল ফার্নিচার, পর্দা, ক্রোকারিজ আর বাড়িজুড়ে গাছ আর গাছ। এ বাড়ি সে আর লিখন মিলে সাজাবার কথা ছিল। হলো না। সব কি আর ইচ্ছে মতো, পরিকল্পনা মতো হয়? তখন যেমন হতো তেমন হয়! যেমন এমন বর্ষায় ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পাশাপাশি দুজন হাঁটত। কখনো ছাতি থাকত, কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজত। জোরে নামলে দৌড়ে কোনো বড় গাছ বা কার্নিসের নিচে দাঁড়াত। লিখন শক্ত করে ধরে রাখত রিয়ার হাত যেন পিছলে না পড়ে। আরো ঘোর বৃষ্টিতে ছাতাবিহীন রিয়াকে লিখন আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে ধরত যেন বৃষ্টির ফোঁটা ওর গায়ে না লাগে। উঁচু-নিচু জায়গা, খানাখন্দ লিখনের হাত ধরেই পার হতে হতো। হাত ছাড়ত না লিখন। পাবলিক লাইব্রেরির বারান্দায় বৃষ্টির ছাঁট নিতে নিতে চোখে চোখ রেখে ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’ বোধে আবদ্ধ থাকার দিন ফুরিয়ে গেছে। ফুরিয়ে যায়। এটাই বাস্তব, এটাই সত্য। লিখনের বাবার বড় বিজনেস। একটাই সন্তান। এটা নিয়ে কোনো ভয় বা ভাবনা রিয়ার ছিল না। সম্পর্ক যখন হয়েছে পরিণতিতে পৌঁছানোর দায় দুজনের। সম্পর্ক গড়ে ওঠার কদিন পরই রিয়া মাকে বিষয়টা জানিয়েছিল। মা জানিয়েছিল আব্বাকে। ওদের কোনো ভালো-মন্দ প্রতিক্রিয়া পায়নি রিয়া। তবে আব্বা একদিন অনিশ্চিতভাবে বলেছিলেন, : অত বড়লোকের ছেলে বিয়ে করবে তো? বরং শরিফ ওকে বিয়ে করতে চায়, যদি করত। শরিফ সম্পর্কে রিয়ার দূর সম্পর্কের ভাই। আব্বার এই অনিশ্চিত চিন্তার কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছিল রিয়ার। আশ্চর্য লিখন অমন নাকি! ওরা পাস করল। লিখন বাবার বিজনেসে ঢুকল, রিয়া চাকরি পেল। আব্বা অবসর নিলেন। ক্রমাগত অসুস্থ হতে থাকলেন। বিয়ের জন্য বাবা-মার চাপ বাড়ল। রিমাকেও তো বিয়ে দিতে হবে। রিয়া বলে চলল, লিখন আজকাল করে পেছাতে লাগল। এরপর এলো সেই দিন। আব্বা হাসপাতালে ভর্তি হলেন। অফিস থেকে ছুটতে ছুটতে এলো রিয়া। অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকল। অশক্ত বিধ্বস্ত আব্বা চোখে পানি নিয়ে রিয়ার হাত চেপে ধরলেন, : তুই বিয়ে কর মা, তোর বিয়েটা দেখে যেতে পারলে শান্তি পাব। ছেলেটা তোকে বিয়ে করবে বলে মনে হচ্ছে না। বরং তুই শরিফকে... ও খুব... নিষ্ঠুরের মতো আব্বার হাত ছাড়িয়ে নিল রিয়া। : কী বলছ তুমি এসব! ওকে অবিশ্বাস করছ! : তাহলে ওকে বল তোকে বিয়ে করতে। কাবিন করে রাখুক। হাসপাতাল থেকে ছুটে বের হলো রিয়া। ওর জরুরি ফোন পেয়ে এলো লিখন। মরিয়া রিয়া বলল, : আব্বার শরীরের এত খারাপ অবস্থা জেনেও তুমি বিয়েতে রাজি হচ্ছ না! ঠিক আছে, তোমার যদি সমস্যা থাকে এখন না হয় বিয়ের কথাটা গোপন থাকবে। তবু তুমি আব্বাকে শান্তি দাও। : তুমি বুঝতে পারছ না আমার সময় লাগবে। : আর কত সময়! আব্বার মৃত্যুর পর! ও বিয়ের তো আমার দরকার নেই। তাহলে এক কাজ করো। আব্বার সামনে বলো তুমি আমাকে বিয়ে করবে। তাতেও আব্বা কিছুটা শান্তি পাবেন। : দেখ আমার বাবা-মা খুব কড়া। ওরা জানতে পারলে আমাকে ত্যাজ্য করবেন। তা ছাড়া খুব কষ্টও পাবেন। হনহন করে হাঁটতে শুরু করেছিল রিয়া। থামেনি। লিখন পেছনে দৌড়েছিল, ডেকেছিল। রিকশা থামাবার চেষ্টা করেছিল, ‘রিয়া একটু সময় দাও। আমি সব ম্যানেজ করব। ওদের বোঝাব।’ সে চেষ্টা ছিল অনেকদিন। রিয়া ছিল অটল। শরিফকে বিয়ে করেনি রিয়া। দুঃখ আর রিয়ার প্রতি অঢেল অভিমান নিয়ে চলে গেছেন আব্বা। তারপর মাও একদিন চলে গেছেন। যাবার আগে বুঝিয়েছেন বারবার, ‘বৃদ্ধ বয়সে সঙ্গী লাগে মা, ভুল করিস না।’ ভুল-শুদ্ধ জানে না রিয়া, জানে এ পৃথিবীতে কেউ কারো সঙ্গী নয়। মানুষ আসে একা, যায় একা।

দুই. বড় একটা ধাক্কা খেয়ে রিকশা থেমে যায়। রিয়া পড়তে পড়তে নিজেকে সামলায়। পানি ছিটকে এসে ভিজিয়ে দেয় ওকে। পাশ দিয়ে কাদা ছিটাতে ছিটাতে যায় একটা গাড়ি। সেটাও গতি হারায় পরক্ষণে। : কী হলো ভাই? : আর যাওয়া যাবে না। দেখছেন না, সামনে পানি। তাই তো চারদিকে থইথই করছে পানি। সে আছে মিরপুর রোডে। ডানে সাতাশ নম্বর। কালভার্টগুলো ডুবে গেছে পানিতে। এত পানির মধ্য দিয়ে সে যাবে কী করে! : একটু কষ্ট করে নিয়ে যাও না ভাই। বেশি টাকা দেব। : পারলে নিতাম। কিন্তু পাদানি ডুবে যাবে। আপনি এক কাজ করেন। ওই যে দেখেন সামনে ভ্যান চলছে। ভ্যানে করে পারাপার হচ্ছে। একজন একশ টাকা। ওপারে গিয়ে রিকশা নিয়ে নেবেন। এ ছাড়া উপায়ই বা কী। রিয়া নামে। আর নামতে গিয়ে পা পিছলে যায়। পড়ে যাচ্ছে সে, পড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ হাত চেপে ধরে একটা শক্ত হাত। বড় চেনা যেন সে হাত। রিয়া ঝটিতি তাল সামলে ঘুরে দাঁড়ায়। : হাত ছেড়ো না, পড়ে যাবে। একা চলতে পারো না, চেষ্টা করো কেন? : হাত ছাড়ো, আমি যেতে পারব। : আচ্ছা যেও। পানিটা তো আগে পার করে দি। রিয়ার কোনো কথা কানে নেয় না হাতওয়ালা। একটা ভ্যান ডেকে তোলে রিয়াকে। নিজেও উঠে বসে। ওঠে আরো অনেকে। রিয়া মনে মনে গজরায়। ভ্যান থেকে নেমে হাঁটা শুরু করে। : আস্তে, রাস্তা পিছল। ঘুরে দাঁড়ায় রিয়া, : এ পিছল রাস্তাতেই তো এতকাল হাঁটলাম। বাকিটাও হাঁটব। : পারলে না তো। পাগল মেয়ে। আমার হাত তো ধরলেই। হাহা। : কী। পিছলে পড়ে যেতে থাকে রিয়া। দ্রুত হেঁটে এসে ওর হাত ধরে লিখন। দুচোখে গভীর চোখ রাখে। : আর কত শাস্তি দেবে। অনেক শাস্তি তো দিলে। বেঁচে থাকতে তোমার বাবাকে শান্তি দিতে পারিনি। মরার পরে অন্তত দিতে দাও। উনি ওপার থেকে অন্তত জানুক তার মেয়ে ঘর বেঁধেছে তাকে নিয়ে যাকে সে ভালোবাসে। শেষ কথাটায় থমকে যায় রিয়া। ‘আব্বা শান্তি পাবে, শান্তি।’ স্বগতোক্তি করে, ভালোবাসি না ছাই! : বাসো বাসো। রিয়ার হাত ধরে লিখন হাঁটে। থম মেরে থাকা বৃষ্টিটা তখনই ঝুম হয়ে নামে। রিয়াকে নিবিড় করে পেঁচিয়ে নেয় লিখন। আজ আর ওরা কোনো আশ্রয় খোঁজে না। এতকালে ওরা আশ্রয় পেয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App