×

জাতীয়

নোংরা ও অকেজো চরম ভোগান্তিতে নারী পথচারী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:২৮ পিএম

নোংরা ও অকেজো চরম ভোগান্তিতে নারী পথচারী

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে পাবলিক টয়লেট সংকট অন্যতম প্রধান সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নারীরা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অধীন ৪৩টি পাবলিক টয়লেটের মধ্যে ৩৮টি জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী। এসব টয়লেটের কোনো কোনোটিতে পানি নেই। আবার কোনোটির জানালা-দরজা ভাঙা, অপরিষ্কার- নোংরা ও পুঁতিগন্ধময়। নগরীর জামালখান এলাকার পাবলিক টয়লেটে গিয়ে দেখা যায় তিনটি টয়লেটের প্রায় সব দরজা ভাঙা। এই অবস্থায় কর্মজীবী মানুষ এসব টয়লেট ব্যবহার করলেও নিরাপত্তার কথা ভেবে নারীরা যেতে চান না। নগরীর আলকরণ এলাকার এক কর্মজীবী নারী বলেন, টয়লেটগুলো এতই নোংরা থাকে যে সেখানে যাওয়া যায় না। এ ছাড়া পাবলিক টয়লেটে যাওয়ার পর সেখানে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটবে না, তার কোনো গ্যারান্টিও নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কয়েকজন ছাত্রী জানান, অনেক সময় পরিচ্ছন্নতার অভাবে পাবলিক টয়লেট তারা ব্যবহার করতে চান না। আবার টয়লেটের ভেতরে গোপন ক্যামেরা থাকতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। দীর্ঘ সময় পানি না খেয়ে থাকা কিংবা টয়লেট ও প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে ইউরিন ইনফেকশন ও কিডনির সমস্যাসহ নানা গাইনোকলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, কিডনির কাজ পরিচালনার জন্য পরিমিত পানি পান জরুরি। শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়া এবং গ্লুকোজসহ অন্যান্য উপাদান শোষণ করে কিডনি। ফলে কিডনির কাজ ব্যাহত হওয়া মানে পুরো শরীরের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা চসিকের মৌলিক কাজ। আর এ নিয়ে করপোরেশনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে। কেননা এটি জনস্বাস্থ্যের বিষয়। আর নগর জীবনে পাবলিক টয়লেটের প্রয়োজনীয়তা কোনোভাবে অবহেলা করা যায় না। চসিকের সহকারী ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা এখলাছ উদ্দিন জানান, তাদের ৪৩টি টয়লেট ১ বছরের জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে লিজ দেয়া হয়। দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইতোমধ্যে চসিককে ৫টি টয়লেট নতুনভাবে নির্মাণ করে দিয়েছে। এই ৫টি পাবলিক টয়লেট নগরীর লালদীঘি মোড়, সিনেমা প্যালেস মোড় (উত্তর পাশ), বিবিরহাট, অক্সিজেন মোড় ও নতুন ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত। অবশিষ্ট ৩৮টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে চসিকের ওই কর্মকর্তা বলেন, এগুলো করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে টয়লেটগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় পাবলিক টয়লেট নির্মাণকারী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডিএসকের প্রকল্প কর্মকর্তা উজ্জল সিকদার বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি টয়লেটে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। নারী সিকউিরিটি গার্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি টয়লেট নির্মাণে ৩ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। এ জন্য চসিকের সঙ্গে ৩ বছরের চুক্তি করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App