×

সাহিত্য

কবি শামসুর রাহমানের ৯১তম জন্মদিন বুধবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০৪ পিএম

কবি শামসুর রাহমানের ৯১তম জন্মদিন বুধবার

কবি শামসুর রাহমান

আধুনিক বাংলা কবিতার এক অনন্য প্রতিভাদৃপ্ত কবি ছিলেন শামসুর রাহমান। কাব্য রচনায়, সৃষ্টিশীলতা ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাকে দিয়েছে কবিতার বরপুত্রের উপাধি। তার বাইরে স্বদেশের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সত্তা, যিনি সারাজীবন তার কবিতার ভাষায় তা লালন করেছেন। মুক্তচিন্তা, অসাম্প্রদায়িকতাও তার কবিতায় পেয়েছে নতুন ভাষা। ছন্দময় ও শিল্পিত শব্দের প্রক্ষেপণে কবিতার চরণে চরণে তিনি বলেছেন দেশ, মাটি ও মানুষের কথা। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে বাঙালির স্বাধীনতার কথা বলেছেন কবিতায়। নাগরিক এই কবি আমৃত্যু স্বদেশ ও শেকড়ের প্রতি ছিলেন দায়বদ্ধ। পাশাপাশি সমকালীনতা ধারণ করে আমৃত্যু অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত সমাজের কামনা করেছেন কাব্যের ছন্দে। বুধবার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান এই কবির ৯১তম জন্মদিন। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরনো ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্ম নেন বরেণ্য এই কবি। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

জন্মদিনে বুধবার শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করা হবে কবি শামসুর রাহমানকে। বিকেল ৫টায় তার ৯১তম জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ এবং শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদ-এর যৌথ উদ্যোগে একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে আলোচনা, নিবেদিত কবিতাপাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

জন্ম ও মৃত্যুর মাঝের ৭৭ বছরের বর্ণময় জীবনের বড় অংশজুড়েই নিমগ্ন থেকেছেন কবিতা সৃজনের মোহ ও অনুরাগে। পুরনো ঢাকায় বেড়ে ওঠায় নগরজীবনের নানা অনুষঙ্গ ও প্রকরণ উদ্ভাসিত হয়েছে তার নাগরিক কবিতার কবিতায়। জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতাকে আধুনিকতার পথে ধাবিত করায় তার ভূমিকাটি একেবারেই স্বতন্ত্র। বিশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। ষাটের দশকে গোড়ার দিকেই কবি প্রতিভার বিচ্ছুরণে আলোকিত করেন সাহিত্যের ভুবন। সূচনাটা অস্তিত্ববাদী ইউরোপীয় আধুনিকতায় ধাবিত হলেও একটা সময়ে দেশজ সুর ও ঐতিহ্যকে কবিতায় ধারণ করেছেন নিবিড় মমতায়। সমকালীন ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে চিরকালীনতার অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন কবিতার বুননে। সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেমন কবিতার ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন তেমনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার আকাঙ্খায় উজ্জীবিত মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন কবিতার সৃষ্টিশীলতায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি বিখ্যাত কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একই সঙ্গে অনুপ্রেরণাদায়ী ও ব্যাপকভাবে সমাদৃত।

‘উনিশ শ’ ঊনপঞ্চাশ’ শিরোনামের কবিতা রচনার মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে পদচিহ্ন আঁকেন কবিতার আঙিনায়। এটি প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকায়। শুরুটা ছিল শিল্পবোধসম্পন্ন সংবেদী পাঠকের জন্য লেখা কবিতার সৃষ্টিসম্ভার। পত্রপত্রিকায় লেখা তার চিত্রকল্পময় কবিতার সূত্র ধরে প্রথম গ্রন্থ প্রকাশের আগেই এপার বাংলার কবিতাপ্রেমীদের নজর কাড়েন শামসুর রাহমান। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’। কবির নিমগ্ন অন্তর্গত বোধ ও ভাবনার জগতের অপূর্ব রূপায়ন ছিল এই কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও ষাটের দশকে প্রকাশিত কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, নিরালোকে দিব্যরথ ও আমি অনাহারী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App