×

বিনোদন

এবারও বসছে না বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৫৫ পিএম

এবারও বসছে না বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর

ফাইল ছবি

এবারও বসছে না বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর
বাংলাদেশে বর্তমানে উচ্চাঙ্গসংগীত চর্চা অনেকটাই বিপন্ন। এমন বিপন্নতার ভেতর উচ্চাঙ্গসংগীতের বৈচিত্র্যসন্ধানী নানামুখী পরিবেশনায় ঋদ্ধ হয়েছিল বেঙ্গল আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রাণবন্ত আসরটি। এর পরিবেশনার ধরন ও পরিশীলন ধ্রুপদী সংগীত সম্পর্কে নবীনদের কৌতূহলী করে তুলেছিল। মনীষীদের সামনাসামনি দেখার ও সাক্ষাতে গান শোনার সুযোগ সংগীতজগতে তৈরি করেছিল নতুন প্রণোদনা। যেখানে উপস্থিতির একটি বড় অংশই থাকত তরুণ প্রজন্ম। অথচ জায়গা বরাদ্দ না পাওয়ায় এ বছরও ঢাকায় বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীতের এমন অনন্য আসরটি বসছে না। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) এক ফেইসবুক পোস্টে এ ঘোষণা দিয়ে শিল্পী, কলা-কুশলী ও শ্রোতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, উৎসবের জন্য আর্মি স্টেডিয়াম চেয়ে তারা পায়নি। আর ধানমণ্ডির আবাহনী মাঠে এখন উন্নয়ন কাজ চলায় সেখানেও এ আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজোয়ানুল কামাল ভোরের কাগজকে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন। উচ্চাঙ্গসংগীতের বিশালতা ও তীক্ষ্ণ বোধ আমাদের ভেতর জাগিয়ে তোলে মানবিক চেতনা ও গভীর মর্মবোধ। এমন মানবিক হওয়ার প্রয়াসকে সামনে রেখেই ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের পণ্ডিতদের নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছিল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। ২০১৭ সালে আর্মি স্টেডিয়ামের বরাদ্দ না পাওয়ায় উৎসবের আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে ওই বছরের উৎসব হয় ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর আবাহনী মাঠে। আর গতবছর জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে নিরাপত্তাজনিত কারণে উৎসবের আয়োজন হয়নি। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন তাদের বিবৃতিতে বলেছে, আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে পাঁচ দিন বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের সপ্তম অধিবেশন আয়োজনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছিল। পাঁচ দিন সারা রাতের এ অনুষ্ঠানের জন্য আর্মি স্টেডিয়াম বরাদ্দ চেয়ে সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের কাছে আবেদনও করা হয়েছিল। ‘কিন্তু বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব ২০১৯ আয়োজনের জন্য ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামের ছাড়পত্র পায়নি কর্তৃপক্ষ।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১২ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছর বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব আয়োজন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠান। এই বার্ষিক আয়োজন, যার অপেক্ষায় হাজারও মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকেন। বিগত ছয় অধিবেশনের মধ্য দিয়ে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব দেশের মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার্ঘ্য লাভ করেছে তা বিশাল প্রাপ্তি। “এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বহু খ্যাতনামা বিদেশি শিল্পী মন্তব্য করেছেন যে, শাস্ত্রীয়সংগীতের এতো ভালো শ্রোতা এই উপমহাদেশে আর নেই। প্রতিবছর শ্রোতার সংখ্যা বেড়ে এখন পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হন। বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলার পলিবিধৌত শরীরে সর্বত্র এঁকেবেঁকে যাওয়া অজস্র নদী তার সংগ্রামী মানুষের কণ্ঠে দিয়েছে বিচিত্র সংগীতের অনন্তধারা। বড় পরিসরে উঁচুমানের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আমরা তুলে ধরতে চেয়েছি- বাংলাদেশ গানেরই দেশ। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এই বিশ্বাস ধারণ করে, শিল্প-সংস্কৃতি চর্চাই মানুষকে নৈরাজ্য থেকে দূরে রাখে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় ৭০০ শিল্পী এ উৎসবের মঞ্চে গানে, বাদ্যে ও নৃত্যে তাদের কুশলতা পরিবেশন করেছেন বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। এর আগের ছয়টি আসর সফলভাবে আয়োজন করতে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং রাজস্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App