×

বিনোদন

বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৩৩ পিএম

বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা
বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা
বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা
বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা
বসুন্ধরায় দুই বাংলার তারার মেলা

‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (বিবিএফএ)’ যৌথভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে বসেছিল যেন দুই বাংলার তারার মেলা। সন্ধ্যা হতেই মিলনায়তনে একে একে হাজির হতে থাকেন কিংবদন্তি সব অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। আর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হলো টিএম ফিল্মস নিবেদিত ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসের (বিবিএফএ) প্রথম আসর। সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নবরাত্রী মিলনায়তনে ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া ও বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠাসের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে টিএম ফিল্মসের চেয়ারপার্সন ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘দুই বাংলার সেরা শিল্পীদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। দুই বাংলায় চলচ্চিত্রে এখন সংকট চলছে, ঠিক এই সময়ে চলচ্চিত্রের পথে পা বাড়িয়েছে আমাদের টিএম ফিল্মস। নতুন সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলার প্রয়াসে আমরা প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বপ্ন দেখছি দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার।’ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্যে রাখেন- বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড.মাহফুজুর রহমান, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ফিরদাউসুল হাসান ও বিবিএফএ এর সমন্বয়ক তপন রায়। কিছুক্ষণ পর মাইক্রোফোনে ভেসে এলো আজীবন সম্মাননার ঘোষনা। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম ও ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। আজকের এই বর্ণাঢ্য সন্ধ্যা দুই বাংলার চলচ্চিত্রের রথি-মহারথিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একই ভাষায় কথা বলি। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। কিন্তু রাজনৈতিক সীমারেখা আমাদেরকে বিভক্ত করেছে। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি জলবায়ু ও কিন্তু একই। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ ধরনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান নিশ্চয় আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দৃঢ করবে। এ কারণেই অঅজকের আয়োজন। এ ধরনের আয়োজন সংস্কৃতি চর্চা চলচ্চত্র নির্মাণের চর্চার দিক থেকে আমাদের সংস্কৃতিকে আরও বেগবান করবে। চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, মানুষকে কাঁদায়, হাসায়, চলচ্চিত্র চিন্তার দুয়ার খুলে দেয়। আমার বিশ্বাস এ আয়োজনের মধ দিয়ে আমাদের সম্পর্ক আরেক নতুন এক মাত্রা উন্মোচন করবে।’ কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘সিনেমার যে সময় সেটা আশ্চার্য ম্যাজিক। যেটা এক হাজার বছরের গল্প দু বছরে বলা যায়। পাঁচ মিনিটের গল্প দুই ঘণ্টায় বলা যায়। সিনেমায় আমরা সময়কে সংকুচিত করতে পারি। আবর প্রসারিত করতে পারি। এক আশ্চার্যজনক মাধ্যমে আমরা কাজ করি। সিনেমা কি সত্যি দুই বাংলার মানুষের মধ্যে প্রীতি ও মিলন বয়ে আনতে পেরেছে কী? এটা নিয়ে একটা লেখা আরও আগেই লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সময়ের কারণে হয়ে উঠেনি। সিনেমা আমাদের একত্রিত করে দিবে, মানুষের মধ্যে আর কোন বিভেদ থাকবে না। সিনেমা যে কাজটা করতে পারে সেটা হলো আমাদের স্মৃতিমালাকে একত্রিত করতে পারে। আর সেই প্রত্যাশাই রইলো।’ পশ্চিমবঙ্গের পর্যটক মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই বাংলার দারুণ এক সম্পর্ক ফুটে উঠেছে। আমাদের দুই বাংলার ইতিহাস ও সম্প্রীতি এ আয়োজনের মধ্য আরও দৃঢ হবে। এই ঢাকা শহরে ১৯৬৫ সালে প্রথম চলচ্চিত উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। যেখানে সত্যজিৎ রায় উপস্থিত ছিলেন। এই শহরেই আবার তেমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এটা বেশ আনন্দের। দুই বাংলার সংস্কৃতিতে একটা সময় অস্থিরতা ছিল। কিন্তু সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দূর হয়ে গিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে তা আরও দৃঢ হবে। সিনেমা তো শিল্পী, একে চর্চা করতে হয়। এছাড়া তো একে আর সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কেন পথ নেই। আগে কিন্তু একটা সময় ছিল, ভালো কাজ হলে দুই বাংলাতেই টের পাওয়া যেত। কিন্তু এখন অর সেটা হয় না। এক ধরনের ভালো কাজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দুই বাংলার জুরি বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশের আলমগীর, কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু ও হাসিবুর রেজা কল্লোল। অন্যদিকে, ভারত থেকে আছেন গৌতম ঘোষ, ব্রাত্য বসু, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানটির সার্বিক সহযোগিতায় আছে ভারতের জি-বাংলা ও বাংলাদেশের ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ। মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা ও গানবাংলা টেলিভিশন। আর ইভেন্ট পার্টনার ওয়ান মোর জিরো। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন কলকাতার মীর আফসার আলী ও শাহরিয়ার নাজিম জয়। মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা: বাংলাদেশ: সেরা ছবি: পাঠশালা, দহন, সুপার হিরো, দেবী ও নোলক। সেরা পরিচালক: ফয়সাল রাব্বি-আসিফ ইসলাম, রায়হান রফি, নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও অনম বিশ্বাস। সেরা অভিনেতা: শাকিব খান (তিনটি চলচ্চিত্রে), মোস্তফা মনোয়ার ও সিয়াম আহমেদ। সেরা অভিনেত্রী: জয়া আহসান, পূজা চেরি রায়, ইয়ামিন হক ববি, নুসরাত ইমরোজ তিশা। সেরা জনপ্রিয় ছবি: পাসওয়ার্ড, পোড়ামন ও দেবী। বেস্ট মিউজিক: হৃদয় খান, শওকত আলী ইমন। সেরা প্লেব্যাক শিল্পী (পুরুষ): আরিফ রহমান জয়, আসিফ আকবর, হৃদয় খান, শাহরিয়ার রাফাত, মিনার রহমান, ইমরান। সেরা প্লেব্যাক শিল্পী (নারী): দিলশাদ নাহার কনা, সোমনুর মনির কোনাল, ফাতিমা তুজ জোহরা ঐশি, ইয়াসমিন লাবন্য। স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড: তাসকিন রহমান, বিদ্যা সিনহা সাহা মীম। ভারত: সেরা ছবি: এক যে ছিল রাজা, নগর কীর্তন, সোনার পাহাড়, ব্যোমকেশ গোত্র ও মহালয়া। সেরা পরিচালক: কৌশিক গাঙ্গুলি, শ্রী জিৎ মুখার্জি, শিবপ্রসাদ মুখার্জি-নন্দিতা রায়, ধ্রুব ব্যানার্জি ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। সেরা অভিনেতা: প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, যীশু সেনগুপ্ত, ঋদ্ধি সেন, শুভাশীষ মুখার্জি, আবির চ্যাটার্জি ও রুদ্রনীল ঘোষ। সেরা অভিনেত্রী: পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখার্জি, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও অপর্ণা সেন। বেস্ট মিউজিক: অনুপম রায়, দেবজ্যোতি মিশ্র, ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত, বিক্রম ঘোষ। সেরা প্লেব্যাক শিল্পী (পুরুষ): রুপঙ্কর বাগচি, মন্ময়, অনুপম রায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রাজ বর্মন। সেরা প্লেব্যাক শিল্পী (নারী): শ্রেয়া ঘোষাল, লগ্নজিতা চক্রবর্তী, নিকিতা গান্ধী। স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড: যিশু সেনগুপ্ত, দামিনি বেনী বসু।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App