×

জাতীয়

দুদকের মামলায় শাস্তির হার ৭০ শতাংশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:৪২ পিএম

দুদকের মামলায় শাস্তির হার ৭০ শতাংশ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, কমিশন কর্তৃক তদন্তকৃত মামলার শাস্তির হার বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ যা অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি। তিনি বলেন, তদন্ত যদি ঠিকমতো না হয় এবং আদালতে প্রমাণ করতে না পারলে আদালত অপরাধীকে শাস্তি দিতে পারে না।

রবিবার (২০ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে দুদক কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) ও দুদকের যৌথ উদ্যোগে ৭দিন ব্যাপী মামলা তদন্ত বিষয়ক এই প্রশিণ কোর্সের আয়োজন করা হয়।

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের বড় সমস্যা সমতার অভাব ও জনবল কম। এজন্য আমাদের সমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিণ উইং করেছি। এই প্রশিণের মাধ্যমে পারস্পারিক সম্পর্ক তৈরি হবে। আমাদের তদন্তের দুর্বলতার কারণে অনেক সমস্যা হয়। তদন্ত যদি ঠিক মত না হয়, আদালতে প্রমান না করতে পারেন। তাহলে আদালত অপরাধীকে সাজা দিতে পারে না। তথ্য প্রযুক্তির যুগে সবসময় আপনাদের আপডেট থাকতে হবে।

দুদকের সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমালোচনাকে ভয় পাবেন না, কাজ করলে সমালোচনা হবে। ভালো কাজ দিয়ে সমালোচনাকে জয় করতে হবে। আমরা ব্যক্তি দেখে পদোন্নতি দেই না, দেখি তার কাজ। আপনারা পরস্পর যোগাযোগের মাধ্যমে উভয় উভয়ের কাছ থেকে শিখবেন। পুলিশ ছাড়া দুদকের কাজ করা সম্ভব না। তিনি বলেন, একটি দেশ থেকে কখনো দুর্নীতি চিরতরে দূর করা যাবে না। দুর্নীতি আছে, দুর্নীতি থাকবে, দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্ত ও অপরাধ দমনে প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে ডিএমপি’র সিটিটিসি ইউনিট। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিটিটিসি ইউনিট জঙ্গী দমনে কাজ করে যাচ্ছে। সিটিটিসি ইউনিটের অভিজ্ঞতা ভালো। এই ইউনিটের কর্মকর্তারা দেশ-বিদেশে প্রশিণ গ্রহণ করে ইতোমধ্যে নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন।

কমিশনার আরো বলেন, ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত তদন্তের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তির গুরুত্ব শেষ হয়ে যায় এবং নতুন প্রযুক্তি চলে আসে। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখতে নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিটিটিসি প্রথাগত ট্রেনিং ইন্সটিটিউট না হলেও বিভিন্ন সময়ে সিটিটিসি ইউনিটের সদস্যদের তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর তদন্ত ও অপরাধ দমনের উপর ইন-হাউজ ট্রেনিং, ওয়ার্কশপ, সেমিনার বা বিষয় ভিত্তিক শর্ট ট্রেনিং করানো হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের সুফল দিচ্ছে ঠিক তেমনি অপরাধীরা প্রযুক্তিকে নির্ভর করে অপরাধ করছে। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রতিনিয়ত দেখছি অপরাধীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সেদিক থেকে সিটিটিসি প্রযুক্তির ব্যবহারকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তিগত সমতা উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের অভিজ্ঞতা ও প্রশিণ লব্ধ জ্ঞান দিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে সাফল্য পেয়েছি, সেই অভিজ্ঞতা দুদকের প্রশিণার্থীদের সঙ্গে আমরা শেয়ার করবো।

দুদক ও সিটিটিসি’র উদ্যোগে আয়োজিত যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মশালার অর্থায়ন করেছে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে দুদকের ও ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, দুদক ও সিটিটিসি’র উদ্যোগে বিজ্ঞান ভিত্তিক বিশেষায়িত তদন্ত বিষয়ক যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মশালা এক সপ্তাহব্যাপী চলবে। এই কর্মশালায় দুদকের ২৫ জন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App