×

বিনোদন

রুপালি গিটার ফেলে যাওয়ার এক বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১১:২৮ এএম

রুপালি গিটার ফেলে যাওয়ার এক বছর
গানে গানে আইয়ুব বাচ্চু বলেছিলেন, ‘হাসতে দেখ গাইতে দেখ, অনেক কথায় মুখর আমায় দেখ, দেখ না কেউ হাসি শেষে নীরবতা’। আইয়ুব বাচ্চু চিরদিনের জন্য নীরব হয়ে যান গত বছরের ১৮ অক্টোবর। তার রুপালি গিটার ফেলে চলে যান বহুদূর। চার দশকের ক্যারিয়ার তার। ছিলেন দেশের ইতিহাসের অন্যতম সফল ব্যান্ড ‘এলআরবি’র প্রাণ। তাকে বলা হতো বাংলাদেশের ‘গিটার লিজেন্ড’। তিনি নেই তবু শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণীয় হয়ে আছেন গানপ্রেমী মানুষের অন্তরে। প্রস্থানের এক বছরে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে মেলা। গ্রন্থনা : শ্রাবণী হালদার চট্টগ্রাম নগরের এনায়েত বাজার এলাকার তিনতলার ভবনটির গায়ে শেওলা জমা। বিভিন্ন জায়গায় জন্মেছে পরগাছাও। দীর্ঘদিন রং না করায় এখন বিবর্ণ। এই বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ফিরিঙ্গিবাজারের হাজী নুরুজ্জামান আবাসিক এলাকার ‘হাজী বিল্ডিং’ ও ‘সখিনা ম্যানশন’। চট্টগ্রামের ৩৪৪ জুবিলী রোড, নুরুজ্জামান সওদাগরের বাড়ি। এই ভবনগুলোর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর বেড়ে ওঠার স্মৃতি। চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার মোড় ফেলে একটু সামনে গেলেই ডান দিকে একটি গলি ভেতরের দিকে চলে গেছে। ওই গলি দিয়ে একটু এগুলোই হাতের বাম পাশে চোখে পড়বে পুরনো একটি তিনতলা ভবন। লাল রংয়ের এই ভবনেই শৈশব-কৈশোর কেটেছে ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর। ওই ভবনের দোতলার একটি কক্ষে থাকতেন এই গিটার লিজেন্ড। আর রাতে ছাদেই গিটার বাজাতেন তিনি। এরপরই আস্তে আস্তে তার সুর ছড়িয়ে পড়ে উপমহাদেশের আকাশে। এরপর গত বছরের ১৮ অক্টোবর আইয়ুব বাচ্চু চিরদিনের জন্য নীরব হয়ে যান। হঠাৎ করেই চলে যান না ফেরার দেশে। থেমে যায় তার রুপালি গিটার। স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। চট্টগ্রামের স্টেশন রোডের চৈতন্য গলিতে মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। তার রুপালি গিটারকে স্মরণ করে ও তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নগরীর প্রবর্তক মোড়ে স্থাপিত হয়েছে ‘রুপালি গিটার’ ভাস্কর্য। এক নজরে আইয়ুব বাচ্চু নাম : আইয়ুব বাচ্চু ডাক নাম : রবিন জন্ম : ১৬ আগস্ট ১৯৬২ বাবা : মো. ইসহাক চৌধুরী মা : নূরজাহান বেগম স্ত্রী : ফেরদৌস আক্তার চন্দনা ছেলে : আহনাফ তাজোয়ার মেয়ে : সাফরা প্রথম অ্যালবাম : রক্তগোলাপ (১৯৮৬) ফিলিংসের সঙ্গে যাত্রা : ১৯৭৮ সোলসের সঙ্গে : ১৯৮০ এলআরবি গঠন : ৫ আগস্ট ১৯৯১ শখ : গিটার বাজানো আর গান শোনা আনন্দের স্মৃতি : ছেলে তাজো যে দিন জন্মগ্রহণ করেছিল আবার জন্ম নিলে : আইয়ুব বাচ্চু হয়েই জন্ম নিতে চাইতেন সর্বশেষ কনসার্ট : ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ (রংপুর) মৃত্যু : ১৮ অক্টোরব ২০১৮ ব্যান্ড অ্যালবাম এলআরবি (১৯৯২), সুখ (১৯৯৩), তবুও (১৯৯৪), ঘুমন্ত শহরে (১৯৯৫), ফেরারী মন (১৯৯৬), স্বপ্ন (১৯৯৬), আমাদের বিস্ময় (১৯৯৮), মন চাইলে মন পাবে (২০০০), অচেনা জীবন (২০০৩), মনে আছে নাকি নেই (২০০৫), স্পর্শ (২০০৮), যুদ্ধ (২০১২) একক অ্যালবাম রক্তগোলাপ (১৯৮৬), ময়না (১৯৮৮), কষ্ট (১৯৯৫), সময় (১৯৯৮), একা (১৯৯৯), প্রেম তুমি কি! (২০০২), দুটি মন (২০০২), কাফেলা (২০০২), প্রেম প্রেমের মতো (২০০৩), পথের গান (২০০৪), ভাটির টানে মাটির গানে (২০০৬), জীবন (২০০৬), সাউন্ড অব সাইলেন্স (ইন্সট্রুমেন্টাল, ২০০৭), রিমঝিম বৃষ্টি (২০০৮), বলিনি কখনো (২০০৯), জীবনের গল্প (২০১৫)। এ ছাড়াও তার গাওয়া গানের অসংখ্য মিক্স অ্যালবাম রয়েছে। জনপ্রিয় গান সেই তুমি, কষ্ট পেতে ভালোবাসি, এখন অনেক রাত, মেয়ে, কেউ সুখী নয়, হাসতে দেখ গাইতে দেখ, তিন পুরুষ; এক আকাশ তারা, ঘুমন্ত শহরে, রুপালি গিটার, উড়াল দেব আকাশে, একচালা টিনের ঘর, তারা ভরা রাতে, ও দুনিয়ার মানুষও ভাই, মন চাইলে মন পাবে, বাংলাদেশ, বেলা শেষে ফিরে এসে, প্রতিশোধ, মাধবী, অভিমান নিয়ে, যে তুমি কথা রাখনি, হকার,সাড়ে তিন হাত মাটি, সাবিত্রী রায়, ১২ মাস, বনলতা সেন, কার কাছে যাব, আমি তো প্রেমে পড়িনি, এই জগৎ সংসারে, আমরা দুজন শুধু দুজনার,প্রেম প্রেমেরই মতো, ফেরারী মন ,কতদিন দেখেনি দুচোখ জনপ্রিয় গান (চলচ্চিত্র) ‘সাগরিকা’ ছবির ‘আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে’, ‘ব্যাচেলর’ ছবির ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি’, ‘লাল বাদশা’ ছবির ‘আরো আগে কেন তুমি এলে না’, ‘তেজী’ ছবিতে ‘এই জগৎ সংসারে তুমি এমনই একজন’, ‘আম্মাজান’ ছবির ‘আম্মাজান’, ‘স্বামী আর স্ত্রী’, ‘তোমার আমার প্রেম এক জনমের নয়’, ‘মেয়েরা মাস্তান’ ছবিতে ‘ঘড়ির কাঁটা থেমে থাক’, ‘চোরাবালি’ ছবিতে ‘ভুলে গেছি জুতোটার ফিতেটাও বাঁধতে’ শিরোনামের গান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App